প্রশিক্ষণ দিলে গরিলা সাংকেতিক ভাষা বুঝতে পারে। কিছু গরিলাকে সাংকেতিক ভাষা শেখানোর মাধ্যমে এর সত্যতা প্রমাণিত হয়েছে। সবচেয়ে ভালো শিখতে পেরেছে কোকো নামে একটি গরিলা। ফ্রান্সিন প্যাটারসন এই গরিলাকে প্রশিক্ষণ দিয়েছেন। তিনি একজন প্রাণী মনোবিজ্ঞানী।
তিনি কোকোকে এক হাজার মার্কিন সাইন ল্যাঙ্গুয়েজের একটি পরিবর্তিত রূপ শিখিয়েছিলেন। একে গরিলা সাইন ল্যাঙ্গুয়েজ (GSL) বলা হয়। মোটামুটি তিন বছর বয়সী একটা শিশু এই পরিমাণ শব্দ শেখে। দুই হাজারের বেশি ইংরেজি শব্দ বুঝতে পারত কোকো। প্যাটারসন কোকো সম্পর্কে বলেন, ‘কেউ কল্পনাও করতে পারেনি যে কোকোর স্মৃতি এত ভালো।’ শব্দভান্ডার ছাড়াও কোকো আরও অনেক জটিল কাজ করতে পারত। প্রায় আটটি চিহ্ন ব্যবহার করে দীর্ঘ বাক্য তৈরি করতে পারত সে।
প্যাটারসন ও তাঁর সহকর্মীরা কোকোর জীবন ও শেখার প্রক্রিয়া নিয়ে বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক জার্নাল ও ওয়েবসাইটে বিস্তারিত বর্ণনা প্রকাশ করেছেন। এর মধ্যে অনেকগুলোই পিয়ার রিভিউ করা নিবন্ধ। কোকো ১৯৭১ সালের ৪ জুলাই সান ফ্রান্সিসকো চিড়িয়াখানায় জন্ম নেয়।
স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা তাঁদের পিএইচডি গবেষণার অংশ হিসেবে সান ফ্রান্সিসকো চিড়িয়াখানায় কোকোর ওপর পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু করেন। ১৯৭২ ও ১৯৭৭ সালের মধ্যে কোকোর আইকিউ টেস্ট নেওয়া হয়। সেখানে কোকো স্কোর করে ৭০-৯০ এর মধ্যে। একটা সাধারণ মানবশিশুর বুদ্ধির স্কোরও এমন হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের ‘দ্য গরিলা ফাউন্ডেশন’-এর গবেষকরা জানিয়েছেন, ১৯৮৩ সালের ক্রিসমাসে কোকো একটা পোষা বিড়াল চেয়েছিল। আসলে সাংকেতিক চিহ্নের সাহায্যে বুঝিয়েছিল যে কোকো একটা বিড়াল চায়। ওই ফাউন্ডেশনের জীববিজ্ঞানী রোনাল্ড কোহন লস অ্যাঞ্জেলেস টাইমসকে বলেছিলেন, ‘কোকোকে যখন একটা খেলনা বিড়াল দেওয়া হয়, তখন সে খুশি হয়নি। খেলনা বিড়ালটির সঙ্গে খেলেনি। বরং দুঃখের চিহ্ন প্রকাশ করে। পরে তার পছন্দ অনুযায়ী একটি বিড়াল শাবক দেওয়া হয়। এটা পেয়ে সে খুশি হয়। অর্থাৎ কোকোর আচরণ থেকে বোঝা যায়, গরিলারা জটিল চিন্তা করতে এবং অনুভূতি প্রকাশে সক্ষম।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।