জুমবাংলা ডেস্ক : দীর্ঘ ১৭ বছর পর কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন বিএনপির নেতা ও সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর। বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) দুপুর পৌনে ২টায় তিনি কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে বের হন। মুক্তি পাওয়ার পর হাজার হাজার নেতাকর্মী ও স্বজন তাকে বরণ করে নিতে ভিড় করেন।
কারাগার থেকে বেরিয়ে বাবর প্রথমে যান বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা জানাতে। সেখানে তিনি জীবন থেকে হারিয়ে যাওয়া ১৭ বছরের জন্য বিচার দাবি করেন। বাবর বলেন, আমি ও আমার পরিবার দেশবাসীর কাছে কৃতজ্ঞ।
তার মুক্তির খবর পেয়ে সকাল থেকেই বিএনপির নেতাকর্মীরা কেন্দ্রীয় কারাগারের সামনে জড়ো হতে শুরু করেন। নেত্রকোনা থেকে আসা দলের কর্মীসহ সারাদেশের নেতা-কর্মীরা ফুলের মালা ও উল্লাসের মধ্য দিয়ে বাবরকে বরণ করে নেন।
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে রাজধানীর গুলশানের বাড়ি সিলভার ম্যাপলে ফেরেন বাবর। মধ্যরাত পর্যন্ত বাবরের গুলশানের বাসার সামনে নেতাকর্মীদের ভিড় ছিল। পরে রাত ৮টার দিকে তিনি সবার উদ্দেশ্যে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন। বলেন, গণতন্ত্র এবং জনগণের জন্য যে কোন কিছু করতে প্রস্তুত তিনি।
দূরদূরান্ত থেকে আসা দীর্ঘসময় অপেক্ষমান কর্মীদের আনুষ্ঠানিরত ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান তিনি। এরপর পরিবারসহ কাছের লোকজনের সঙ্গে কথা বলেন। জানা গেছে, রাত একটার দিকে খাবার খেয়ে রাত ৩টা নাগাদ ঘুমাতে যান সাবেক এই স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী।
শুক্রবার সকালে তার গুলশানের বাসার সামনে গিয়ে দেখা গেছে সুনসান নীরবতা। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নেতাকর্মীদের ভীড় বাড়তে থাকে। দুপুর বারোটার পর নিজ জেলা নেত্রকোণার কয়েকজন নেতাকর্মীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন বাবর।
সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে ২০০৭ সালের ২৮ মে লুৎফুজ্জামান বাবরকে গ্রেপ্তার করা হয়। জরুরি অবস্থার সেই দুই বছর এবং পরে আওয়ামী লীগ সরকারের ১৫ বছরে কয়েকটি মামলায় তাকে সাজা দেওয়া হয়। এর মধ্যে দুটি মামলায় তার মৃত্যুদণ্ড হয়, একটিতে হয় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। ছাত্রজনতার অভ্যুত্থানে গত বছরের ৫ অগাস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আপিল শুনানি শেষে একে একে এসব মামলায় খালাস পান বাবর।
গত ২৩ অক্টোবর দুর্নীতির এক মামলায় ৮ বছরের দণ্ড থেকে খালাস পান তিনি। ২১ অগাস্ট গ্রেনেড হামলার মামলায় মৃত্যুদণ্ডের আসামি বাবরসহ সব আসামিকে গত ১ ডিসেম্বর খালাস দেয় হাই কোর্ট।
১০ ট্রাক অস্ত্র চোরাচালানের বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলাতেও বাবরের মৃত্যুদণ্ড হয়েছিল। আর অস্ত্র আইনের পৃথক মামলায় হয়েছিল যাবজ্জীবন কারাদণ্ড।
গত ১৮ ডিসেম্বর ও ১৪ জানুয়ারি আপিলের রায়ে হাই কোর্ট দুই মামলাতেই বাবরকে খালাস দিলে তার মুক্তির পথ খোলে।
বাবর নেত্রকোণা-৪ আসন থেকে (মদন-মোহনগঞ্জ-খালিয়াজুরী) ১৯৯১-১৯৯৬ ও ২০০১-২০০৬ সময়ে দুইবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০১ সালে খালেদা জিয়ার মন্ত্রিসভার সর্বকনিষ্ঠ সদস্য হিসেবে তিনি স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছিলেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।