জুমবাংলা ডেস্ক : বঙ্গবন্ধুর আত্মজীবনী স্মৃতিচারণায় নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের এমপি শামীম ওসমান পত্নী জেলা মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যান সালমা ওসমান লিপি বলেছেন, বঙ্গবন্ধু তাঁর আত্মজীবনীতে লেখা একটি ঘটনা আমার মনে গেঁথে আছে। যেটি আমার জীবনে কোইনসিডেন্স।
বঙ্গবন্ধু লিখেছিলেন, খুব গরিব এক বৃদ্ধ মহিলা জানত আমি এই পথ দিয়ে যাব বলে কয়েক ঘণ্টা দাঁড়িয়ে ছিল। আমাকে দেখে ওই মহিলা আমার হাত ধরে বলল, বাবা তোমাকে আমার এই কুড়েঘরে একটু যেতে হবে। আমি তাঁর হাত ধরে তাঁর বাড়িতে যাই। সে মাটিতে একটি পাটি বিছিয়ে দিয়ে বসতে বলে এক বাটি দুধ, একটি পান ও চার আনা পয়সা আমার সামনে দিয়ে বলল, খাও বাবা। আর পয়সাটা তুমি নাও। আমার তো আর কিছু নাই। তখন আমার চোখে পানি এলো। সেই পয়সার সঙ্গে আরো কিছু টাকা তার হাতে ফিরিয়ে দিলাম। সে টাকা নিল না। আমার মাথায় ও মুখে হাত বুলিয়ে দিয়ে বলল, গরিবের দোয়া তোমার জন্য আছে বাবা। নীরবে আমার চোখ দিয়ে দু’ফোঁটা পানি পড়ল। আর সেই দিনই আমি মনে মনে প্রতিজ্ঞা করেছিলাম- মানুষকে ধোঁকা আমি দিতে পারব না। আমি জানতাম না, এ দেশের মানুষ আমাকে কত ভালোবাসে। সেই মুহূর্তেই আমার মনে একটি বিরাট পরিবর্তন হয়েছিল। এটা বঙ্গবন্ধু নিজের ভাষায় তাঁর আত্মজীবনীতে লিখেছিলেন।
এই ঘটনার কোইনসিডেন্স ব্যাখ্যা দিয়ে লিপি ওসমান আরো বলেন, ১৯৯৬ সালে প্রথমবারের মতো আওয়ামী লীগ ও নৌকার জন্য বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ধারণ করে ভোটের ক্যাম্পে বের হয়েছিলাম। ঠিক এভাবেই আমাকে ফতুল্লার জালকুড়ি এলাকার লোকজন জানিয়েছিল, এখানে একজন খুবই জরাজীর্ণ গরিব অসুস্থ বৃদ্ধ আছেন। যিনি সুস্থ বা হেঁটে আসতে পারলে আপনার সঙ্গে দেখা করতেন। উনি খুব খুশি হবেন, যদি আপনি তাঁর সঙ্গে একটু দেখা করতে তাঁর ঘরে যেতেন। আমি তাঁর ঘরে ছোট্ট একটি কুঁড়েঘরে গিয়ে মাটিতে বসে পড়লাম। আমি যখন তাঁর পাশে বসলাম তাঁর চোখ দিয়ে অনবরত পানি পড়ছিল এবং আমার মাথায় উনি হাত রেখে আমাকে বললেন, আমরা এত বেঈমান হলাম কবে। বঙ্গবন্ধুর জন্য ভোট চাইতে হবে কেন বাঙালির কাছে। কেন বঙ্গবন্ধুর জন্য ভোট চাইতে আমরা রাস্তায় বের হব। কেন বাঙালি ইচ্ছা করে সেই ভোট দিয়ে আসবে না। বলেই উনি শুধু কাঁদছিলেন। হয়তো ওনার শিক্ষাগত যোগ্যতা ছিল না। কিন্তু তিনি বঙ্গবন্ধুর কৃতজ্ঞতাকে ধারণ করেই হয়তো পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছেন। সেখান থেকে আামি শিক্ষা গ্রহণ করেছিলাম। সে জন্যই বঙ্গবন্ধুর কথা মানুষকে বলি।
বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, আমি আমার জন্য ভাবি না। আমার কবর কোনো ধানক্ষেত বা কোনো গ্রামে হলেও চলবে। যেন আমি কবরে শুয়েও বাঙালি মাটির ঘ্রাণ যেন পাই। এমন একজন নেতাই তো জাতির পিতা হওয়ার যোগ্য। এটাই স্বাভাবিক। গতকাল শনিবার বঙ্গবন্ধুর ৪৫তম শহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে ফতুল্লার পূর্ব ইসদাইর স্বাধীন বাংলা সমাজ উন্নয়ন সংস্থার উদ্যোগে দোয়া অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি ওই স্মৃতিচারণামূলক বক্তব্য প্রদান করেন।
অনুষ্ঠানে যুবলীগ নেতা মোশারফ উদ্দিন মাসুমের সভাপতিত্বে আরো উপস্থিত ছিলেন প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা আলী আকবর মেম্বার, আব্দুল আউয়াল, রুহুল আমীন প্রধান, জুয়েল আহমেদ, মূছা প্রধান, জিবু আহমেদ প্রমুখ। সূত্র : কালের কণ্ঠ
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।