আন্তর্জাতিক ডেস্ক : গাজায় প্রতিনিয়তই বাড়ছে ইসরাইলি ভয়াবহতা। বোমা-বারুদের আকস্মিক হামলায় ধ্বংস হচ্ছে বাড়িঘর। বিধ্বস্ত হচ্ছে সহায়-সম্বল। প্রাণ হারাচ্ছে অসহায় মানুষ। বসতবাড়ি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছে অনেকে। মাথা গোঁজার নিরাপদ ঠাঁই নেই বাসিন্দাদের। প্রাণ বাঁচাতে এদিক-ওদিক ছুটছে মানুষ। কখনো উত্তর থেকে দক্ষিণে আবার কখনো দক্ষিণ থেকে উত্তরে।
ইসরাইলের বর্বরতা থেকে বাঁচতে প্রতি ৫ জনে ৪ জনই পালাচ্ছে। পরিস্থিতি এতটাই করুণ যে, গাজার ২২ লাখ বাসিন্দার ১৮ লাখই এখন বাস্তুচ্যুত। ৩৬৫ বর্গকিলোমিটারের অবরুদ্ধ গাজার অভ্যন্তরেই এক স্থান থেকে অন্য স্থানে ছুটছে মানুষ।
সোমবার এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে গাজায় জাতিসংঘের মানবিক বিষয়ক কার্যালয় ‘ইউনাইটেড ন্যাশন্স রিলিফ অ্যান্ড ওয়ার্ক এজেন্সি ফর ফিলিস্তিন শরণার্থী (ইউএনআরডব্লিউএ)’। আলজাজিরা।
৭ অক্টোবর থেকে চলমান হামলায় কার্যকর হয়েছিল সাত দিনের যুদ্ধবিরতি। শুক্রবার সকাল থেকেই আবার শুরু হয় হামলা। যুদ্ধবিরতির সময়ে অনেকে নিজ নিজ স্থান থেকে পালিয়েছে। আবার অনেকে নিজেদের আগের স্থানে ফিরে এসেছে। এ বিষয়ে জাতিসংঘ বলছে, ‘বাস্তুচ্যুতদের সঠিক গণনা চ্যালেঞ্জিং।’ যুদ্ধের শুরু থেকেই ইসরাইল সেনাবাহিনী হামলার হুমকি দিয়ে গাজার বেসামরিকদের বিভিন্ন দিকে পালানোর নির্দেশ দিচ্ছে। যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজার কঠিন পরিস্থিতিতে দেখা দিয়েছে নতুন এক সংকট।
জাতিসংঘ পরিচালিত গাজার একটি স্কুলের শরণার্থীদের মাঝে ‘হেপাটাইটিস-এ’ ছড়িয়ে পড়েছে। সঠিক ব্যবস্থাপনা ও পরিচ্ছন্নতার অভাবে বাড়ছে এ রোগের প্রাদুর্ভাব। ইউএনআরডব্লিউএ’র পরিচালক টমাস হোয়াইট বলেছেন, ‘স্যানিটেশন একটি সমস্যা। শ্রেণিকক্ষে খুব স্বল্প জায়গায় অসংখ্য শরণার্থী একসঙ্গে আছেন। গাজায় রোগের ঝুঁকি অনেক বেশি।’ তিনি আরও বলেন, ‘গাজার পানির অবকাঠামোগুলো মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গড়ে ১২৫ জন একটি টয়লেট ব্যবহার করছে।’ উল্লেখ্য, ‘হেপাটাইটিস-এ’ একটি মারাত্মক সংক্রামক। লিভারের এ সংক্রমণটি দূষিত খাবার বা পানীয়ের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
অপরদিকে হামাসকে নিশ্চিহ্ন করতে গাজায় স্থল অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে ইসরাইলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় আইডিএফ।
সোমবার এক বিবৃতিতে মুখপাত্র ড্যানিয়েল হাগারি এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ‘আইডিএফ পুরো গাজা উপত্যকাজুড়ে হামাসের শক্ত ঘাঁটির বিরুদ্ধে স্থল অভিযান পুনরায় সম্প্রসারণ করছে। আমাদের নীতি পরিষ্কার- আমরা আমাদের ভূখণ্ডকে উত্থাপিত যে কোনো হুমকিকে জোরালো আঘাত করব।’ ইসরাইলের নিরাপত্তা এজেন্সি শিন বেটের কর্মকর্তা রনেন বার বলেছেন, ‘ইসরাইল সারা বিশ্বে হামাসকে নির্মূল করতে বদ্ধপরিকর। এতে যদি কয়েক বছর সময় লাগে তবে তাই হবে।’ তিনি বলেন, ‘মন্ত্রিসভা আমাদের একটি লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। হামাসকে নির্মূল করা এবং আমরা এটি করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।