নিজস্ব প্রতিবেদক, গাজীপুর: গাজীপুরের শ্রীপুরে একটি অপহরণ মামলায় গ্রেফতার হওয়া চার আসামিকে ছেড়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে থানা পুলিশের এক উপপরিদর্শকের (এসআই) বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত কর্মকর্তা হলেন শ্রীপুর থানার এসআই মাহবুবুর রহমান।
রবিবার (১৩ জুলাই) শ্রীপুর বাজারের ফুটপাত ব্যবসায়ী আকতার হোসেন সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন, তাঁর আত্মীয়রা অভিযুক্ত হয়ে গ্রেফতার হওয়ার পর তাদের মুক্তির আশ্বাস দিয়ে এসআই মাহবুবুর তার কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা গ্রহণ করেন।
ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার জামিরদিয়া গ্রামের কৃষক ফরহাদ আহাম্মেদ (২৫) ঈদের আগের রাতে শ্রীপুর উপজেলার জৈনা বাজারে বাজার করতে আসেন। ওই সময় পূর্বপরিচিত এক যুবক, নাহিদের ডাকে সাড়া দিয়ে তার সঙ্গে গেলে ওৎ পেতে থাকা আরও কয়েকজন মিলে তাকে জোরপূর্বক নির্জন একটি স্থানে নিয়ে যায়।
সেখানে ফরহাদকে মারধর করে এবং পরিবারের কাছে মোবাইল ফোনে ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। তার সঙ্গে থাকা ছাগল বিক্রির নগদ ৩০ হাজার টাকা ও একটি মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে।
পরবর্তীতে ফরহাদ আহাম্মেদ শ্রীপুর থানায় ৯ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরও ৫ জনকে আসামি করে অপহরণ, ছিনতাই ও মুক্তিপণ দাবির অভিযোগে মামলা দায়ের করেন। মামলার পর পুলিশ নেত্রকোনা ও ময়মনসিংহ জেলার বিভিন্ন উপজেলার চার যুবককে গ্রেফতার করে। তারা সবাই শ্রীপুর উপজেলার জৈনা বাজার এলাকায় ভাড়া থেকে বসবাস করতেন।
আসামিদের স্বজন আকতার হোসেন দাবি করেন, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মাহবুবুর রহমান গ্রেফতার হওয়া আসামিদের ছেড়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে তাঁর কাছে ৫০ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন। পরে তিনি ২০ হাজার টাকা দেন। কিন্তু তারপরও আসামিদের আদালতে পাঠিয়ে দেওয়া হয় এবং তারা বর্তমানে জেলহাজতে রয়েছেন।
স্থানীয়রা বলছেন, বিষয়টি সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রমাণিত হলে দায়ী ব্যক্তির বিরুদ্ধে কঠোর বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া উচিত, যাতে ভবিষ্যতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কোনো সদস্য সাধারণ মানুষের সঙ্গে এমন আচরণ করার সাহস না পায়।
ঘুষ গ্রহণ সংক্রান্ত অভিযোগ বিষয়ে জানতে চাইলে এসআই মাহবুবুর রহমান জানান, “আসামিপক্ষের কেউ আমার সঙ্গে দেখা করেনি। মামলা হওয়ার পর আমি কাউকে ছাড়ার প্রশ্নই আসে না। তারা যা খুশি বলতেই পারে।”
তবে সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি এই অভিযোগ কেন আসামিপক্ষ করেছে—সে বিষয়ে নির্দিষ্ট কোনো ব্যাখ্যা দিতে পারেননি।
এ বিষয়ে শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহম্মদ আব্দুল বারিক বলেন, “ঘুষ গ্রহণ একটি ফৌজদারি অপরাধ। আমি এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো অভিযোগ পাইনি। কেউ লিখিত অভিযোগ করলে, তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।”
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।