নিজস্ব প্রতিবেদক, গাজীপুর: গাজীপুর মহানগরের কোনাবাড়ীতে কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় গুরুতর আহত নাসির পালোয়ান (৯০) ৩৫ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে অবশেষে মারা গেছেন। বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) সন্ধ্যায় জরুন এলাকায় তাঁর মরদেহ পৌঁছালে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী লাশ নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করে দোষীদের শাস্তির দাবিতে সোচ্চার হন।
পুলিশ ও স্থানীয়দের তথ্যমতে, গত ২৭ মে রাত সাড়ে ১১টার দিকে চাঁদার দাবিতে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা নাসির পালোয়ানের বাড়িতে হামলা চালায়। ধারালো অস্ত্রের আঘাতে বৃদ্ধ নাসির পালোয়ানের মাথা গুরুতর জখম হয়। তাকে উদ্ধার করে প্রথমে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং পরে ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়। দীর্ঘ ৩৫ দিন লাইফ সাপোর্টে থাকার পর বুধবার রাতে তিনি মারা যান।
এ ঘটনায় আহত হয়েছেন নাসির পালোয়ানের ছেলে আক্তার পালোয়ান (৫৬), লুৎফর রহমান পালোয়ান (৫০), শাহ আলম পালোয়ান (৪৫), পুত্রবধূ নাজমা বেগম (৫০), নাতনি শারমিন (২৭) ও শাহরিয়ার (১৫)।
নিহতের পরিবার ও স্থানীয়রা জানান, কোনাবাড়ী থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বাবুল হোসেনের ছেলে ওয়াসিফ সালিমের নেতৃত্বে ৩৫-৪০ জনের কিশোর গ্যাং এ হামলা চালায়। হামলাকারীরা বাড়িতে লুটপাট চালানোর পাশাপাশি নাসির পালোয়ানের মাথার খুলিতে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে, যা অস্ত্রোপচারের সময় ১৮ টুকরো অবস্থায় পাওয়া যায়।
নিহতের ছেলে শাহ আলম পালোয়ান বলেন, ‘আমরা জমিজমার ব্যবসা করে সংসার চালাই। কিছু চিহ্নিত চাঁদাবাজ আমাদের ব্যবসা থেকে টাকা দাবি করে। তাদের চাহিদা না মানায় পরিকল্পিতভাবে এ হামলা চালানো হয়েছে।’
তিনি আরও অভিযোগ করেন, হামলার পর মামলা করতে গেলে আসামিরা প্রভাবশালী হওয়ায় পুলিশ শুরুতে মামলা নেয়নি। পরে আদালতের নির্দেশে গত ২৬ জুন কোনাবাড়ী থানায় মামলা রেকর্ড করা হয়। মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে ওয়াসিফ সালিমকে।
এলাকাবাসী জানায়, বিএনপি নেতা বাবুল হোসেনের ছেলে ওয়াসিফ সালিম ছাড়াও ৭ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সহসভাপতি সালাহউদ্দিনের সহযোগিতায় এই কিশোর গ্যাং বিভিন্ন অপরাধে জড়িয়ে পড়েছে। পূর্বেও তারা একাধিক বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়েছে। বারবার অপরাধ করলেও রহস্যজনক কারণে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়নি বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।
নাসির পালোয়ানের মৃত্যুতে বৃহস্পতিবার বিকেলে তাঁর লাশ এলাকায় পৌঁছালে উত্তাল হয়ে ওঠে জরুন এলাকা। জানাজায় শোকার্ত মানুষের ঢল নামে। পরে এলাকাবাসী দোষীদের গ্রেপ্তার ও বিচার দাবিতে লাশ নিয়ে বিক্ষোভ করেন।
কোনাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সালাহ উদ্দিন বলেন, ‘এ ঘটনায় মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।