নিজস্ব প্রতিবেদক, গাজীপুর: গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলায় নির্যাতন করে বৃদ্ধা মাকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। ছোট ছেলে ইলিয়াস হোসেনের বিরুদ্ধে মা রাহিলা খাতুনকে (৯৬) নির্যাতন করে জমি লিখে নেওয়ার অভিযোগ করেছেন মেজ ছেলে আব্দুল হাই। ওই নির্যাতনে রাহিলা খাতুনের মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ইলিয়াস হোসেন।
শ্রীপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সাখাওয়াত হোসেন বলেন, নির্যাতন করে মাকে হত্যার বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেয়েছেন। লাশে সুরতহাল শেষে ময়না তদন্তের জন্য গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন হাতে পেলে সেই অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নিহত রাহিলা খাতুন উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের টেপিরবাড়ী গ্রামের মৃত আব্দুল কাদিরের স্ত্রী। বৃহস্পতিবার (৩০ মে) বিকেলে জমি লিখে নেওয়ার জন্য ছোট ভাইয়ের নির্যাতনে তাঁর মায়ের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করেন আব্দুল হাই। পরে সন্ধ্যায় থানা পুলিশ লাশ ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে পাঠায়। এর আগে দুপুরে ওই বৃদ্ধা মায়ের মৃত্যু হয়।
স্থানীয়রা জানান, দুপুরে রাহিলা খাতুনের মৃত্যুর পর স্বজন ও এলাকাবাসী তাঁদের বাড়ি আসে। বিকেলে তার মেজ ছেলে আব্দুল হাই লাশ দাফনে বাধা দেন। স্থানীয় বাসিন্দা ওহেদ আলী বলেন, ‘তিনি মারা গেছেন। তবে কীভাবে মারা গেছেন, এ বিষয়ে বলতে পারব না। জমি নিয়ে সমস্যা আছে, এটা জানি।’
অভিযোগকারী আব্দুল হাইয়ের ছেলে নূরু উদ্দিন বলেন, ‘অসুস্থ দাদিকে আমার চাচা আগের দিন রাতে (বুধবার ২৯ মে) গাড়ির লাইট বন্ধ করে বাড়ি থেকে বের করে নিয়ে যান। বৃহস্পতিবার দলিল সম্পাদন করে অসুস্থ অবস্থায় দাদিকে দুপুরে বাড়িতে নিয়ে আসেন। কয়েক ঘণ্টা পর দাদি মারা যান। বাড়িতে আসার পরপরই দাদির জন্য মলম ও ওষুধ খোঁজাখুঁজি করেন চাচা। এ জন্য আমরা কবর খনন ও লাশ দাফনে বাধা দিয়েছি। যাতে আগে লাশের ময়নাতদন্ত হয়। আমাদের ধারণা, দাদিকে পরিকল্পিতভাবে মেরে ফেলা হয়েছে।’
মায়ের মৃত্যুর জন্য ছোট ভাইকে দায়ী করে মেজ ভাই আব্দুল হাই বলেন, ‘আমার ছোট ভাই ইলিয়াস হোসেন অসুস্থ মায়ের কাছ থেকে কয়েক বছরে ১৩-১৪ বিঘা জমি লিখে নিয়েছেন। বৃহস্পতিবার আমরা আদালতে চলে যাই। এই সুযোগে মাকে জোর করে সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে নিয়ে আরও চার বিঘা জমি লিখে নেন। জমি লিখে দিতে রাজি না হলে মাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করা হয়। মায়ের মৃত্যু অস্বাভাবিক মনে হয়েছে বিধায় আমি থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। আমি চেয়েছি, যতক্ষণ পর্যন্ত এর সঠিক ফয়সালা না হয়, ততক্ষণ পর্যন্ত মায়ের লাশ দাফন যেন না হয়। মায়ের শরীরের অনেক জায়গায় আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে।’
অভিযুক্ত রাহিলার ছোট ছেলে ইলিয়াস হোসেন বলেন, ‘বুধবার (২৯ মে) মাকে গাড়িতে করে আমার মেয়ের বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছি। এরপর আমি মাকে নিয়ে দলিল সম্পাদন করেছি। কিন্তু জোর করে জমি লিখে নিইনি। মা আমাকে ইচ্ছে করে জমি লিখে দিয়েছেন। আমি মাকে কেন মারব? আমি সব সময় মায়ের সেবা করেছি। আমার মা যে মারা যাবে, তা কি আমি জানতাম?
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।