নিজস্ব প্রতিবেদক, গাজীপুর: গাজীপুরে দুটি রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাক কারখানায় কাজ বন্ধ রেখে বিক্ষোভ ও কর্মবিরতি পালন করছেন শ্রমিকেরা। আজ শনিবার সকাল থেকে মহানগরীর কোনাবাড়ীতে কারখানা দুটির হাজারো শ্রমিক বিভিন্ন দাবিতে এই কর্মসূচি পালন করছেন।
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, গাজীপুরের কোনাবাড়ী থানার জরুন এলাকার ইসলাম গ্রুপ ও কোনাবাড়ী এলাকার তুসুকা শিল্প গ্রুপ দুটি শ্রমিকবান্ধব হিসেবে পরিচিত। দুটি প্রতিষ্ঠানই সম্পূর্ণ রপ্তানিমুখী। আজ সকাল ৮টার দিকে শ্রমিকেরা কারখানায় কাজে যোগ না দিয়ে ভেতরে মূল ফটকের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ ও কর্মবিরতি পালন শুরু করেন। খবর পেয়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সেনাবাহিনী, বিজিবি, র্যাব, শিল্পপুলিশ ও গাজীপুর মহানগর পুলিশ সেখানে অবস্থান নেয়।
ইসলাম গ্রুপের শ্রমিকেরা হাজিরা বোনাস, বার্ষিক বেতন, নাইট বিল, টিফিন বিল বৃদ্ধিসহ ২১ দফা ও তুসুকা গ্রুপের শ্রমিকেরা ১৬ দফা দাবি আদায়ে এ কর্মসূচি পালন করেন।
ইসলাম গ্রুপের শ্রমিকেরা জানান, তাঁদের ২১ দফা দাবির মধ্যে একটি হলো কারখানার কয়েকজন ম্যানেজার, এইচআর অফিসারকে চাকরিচ্যুত করতে হবে। এ ছাড়া সার্ভিস বেনিফিট ১০০% এবং বেসিকের ৬৩% দিতে হবে। হাজিরা বোনাস ১ হাজার টাকা, টিফিন বিল ৫০ টাকা, নাইট বিল ২০০ টাকা, বার্ষিক বেতন ৫% বাড়ানোসহ ২১ দফা দাবি পেশ করেন।
কোনাবাড়ীর তুসুকা গ্রুপের শ্রমিকেরা জানান, উল্লেখিত দাবিসহ তাদের পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের সময় দিতে হবে, বাৎসরিক বেতন ১০% হারে বাড়াতে হবে; ঈদুল ফিতরের ছুটি সর্বনিম্ন ১০ দিন, ঈদুল আজহা ১২ দিন, ১২ রবিউল আওয়াল ও বিশ্ব ইজতেমা মোনাজাতের দিন এবং পূজার ছুটি দুই দিন বাধ্যতামূলক দিতে হবে। এর পরিবর্তে কোনো ধরনের জেনারেল ডিউটি করানো যাবে না।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে তুসুকার এক শ্রমিক বলেন, ‘আমাদের হাজিরা বোনাস ১ হাজার, নাইট বিল ২০০, টিফিন বিল ৫০ টাকা, মাতৃত্বকালীন ছুটি ১২০ দিনসহ ১৬ দফা দাবি মানতে হবে।’
এসব বিষয়ে জানতে ফোন করা হলে তুসুকা গ্রুপের পরিচালক তারেক হাসান এবং ইসলাম গ্রুপের অ্যাডমিন অফিসার রবিউল ইসলাম তা রিসিভ করেননি।
এ বিষয়ে গাজীপুর শিল্প পুলিশ-২-এর বেক্সিমকো জোনের সহকারী পুলিশ সুপার দীপক চন্দ্র মজুমদার বলেন, ‘সকাল থেকে মহানগরীর জরুন এলাকায় ইসলাম গ্রুপ ও কোনাবাড়ীতে তুসুকা গ্রুপের শ্রমিকেরা বিভিন্ন দাবি আদায়ে কারখানার ভেতরে মূল ফটকের সামনে বিক্ষোভ ও কর্মবিরতি পালন শুরু করে। উভয় কারখানার কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের সঙ্গে দাবি দাওয়া নিয়ে আলোচনা করে সমস্যার সমাধানের চেষ্টা শুরু করেন। পুলিশ পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছে। দুপুরের বিরতির আগে ইসলাম গ্রুপের মালিকপক্ষ শ্রমিকদের দাবিদাওয়া মেনে নিতে সম্মত হয়। আশা করা যায়, শ্রমিকেরা কাজে যোগ দেবে।’
দীপক চন্দ্র মজুমদার আরও বলেন, অন্যদিকে তুসুকার মালিকপক্ষ শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনা অব্যাহত রেখেছে। আশা করা যায়, এ কারখানায়ও আলোচনা করে সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।