নিজস্ব প্রতিবেদক, গাজীপুর: গাজীপুরের শ্রীপুর রেঞ্জের সাতখামাইর বিটের পোষাইদ গ্রামের সংরক্ষিত বনাঞ্চলে দীর্ঘদিন ধরে আগুন জ্বলছে। আগুন নেভাতে বন কর্মকর্তাদের কোনো উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না।
আগুনে সংরক্ষিত বনাঞ্চলের শত শত বিঘার বনাঞ্চল পুড়ে যাচ্ছে। এতে হুমকিতে রয়েছে জীব বৈচিত্র্য। এদিকে গণমাধ্যম কর্মীদের মাধ্যমে খবর পেয়ে বন কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেছেন বলে দাবি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের।
শুক্রবার দুপুরে পোষাইদ গ্রামের সংরক্ষিত বনাঞ্চলে দেখা যায়, সংরক্ষিত বনাঞ্চলের বিশাল একটি এলাকায় আগুন জ্বলছে। আগুনে বনের ছোট ছোট গাছপালা ও শুকনো ঝড়া পাতা পুড়ে গেছে।
দীর্ঘ সময় বনাঞ্চল পুড়তে থাকলেও স্থানীয় বন কর্মীদের কোনো খবর নেই। বনের ভেতর বিভিন্ন পাখিগুলো চিৎকার চেঁচামেচি করতে শোনা যায়। সংরক্ষিত বনের ভেতর বাস করা বানরগুলো গভীর জঙ্গল থেকে বের হয়ে রাস্তার পাশে চলে আসছে। আগুনে বনের কমপক্ষে ১০ বিঘা সংরক্ষিত ঘন বনাঞ্চল পুড়ে গেছে। দুপুর সাড়ে তিনটা পর্যন্ত কোনো বনকর্মী আগুন নিয়ন্ত্রণে এগিয়ে আসেননি।
পোষাইদ গ্রামের বাসিন্দা মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের আশপাশের বিশাল একটি এলাকায় রয়েছে সংরক্ষিত বনাঞ্চল। রাত–দিন ২৪ ঘণ্টায় কোনো না কোনো বনাঞ্চলে আগুন জ্বলছে। কোনো সময় বনকর্মীদের আগুন নিয়ন্ত্রণ করতে দেখি নাই।’
স্থানীয় বাসিন্দা গৌতম বর্মণ বলেন, ‘আমাদের বসতবাড়ির চারপাশে সংরক্ষিত বনাঞ্চল। আমরা বনকে সুরক্ষিত রাখতে চেষ্টা করি। হঠাৎ করে দেখি বনে আগুন জ্বলছে। কে বা কাহারা আগুন দেয় আমরা জানি না। এ পর্যন্ত আগুনের রহস্য কেউ উদ্ঘাটন করতে পারেনি।’
নদী পরিব্রাজক দল শ্রীপুর শাখার সভাপতি সাঈদ চৌধুরী বলেন, ‘নির্বিকার সবাই, যেন কোনো আইন নেই, কোনো দায়বদ্ধতা নেই। যারা দায়িত্বে আছেন তারাতো সরকারের বেতন নিচ্ছেন। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মহোদয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলছি বনে আগুন দেওয়া বন্ধে টাস্ক ফোর্স গঠন করুন, যে কর্মকর্তারা কাজ করছে না তাদের বিচারের আওতায় আনুন। মসজিদ, মাদ্রাসা, স্কুলে বাজারে আগুন দেওয়া বন্ধে সচেতনতামূলক কাজ বাড়ান। আমরা বনের সুরক্ষা চাই।’
ভাওয়ালগড় বাঁচাও আন্দোলনের মহাসচিব ড. এ কে এম রিপন আনসারী বলেন, ‘বন কর্মকর্তাদের কাজ হলো গরিব মানুষের ওপর জুলুম নির্যাতন করা। হামলা মামলা দিয়ে তাদের হয়রানি করা। প্রকৃত বন ধ্বংসকারীদের বিরুদ্ধে তাদের শক্ত অবস্থান চোখে পড়েনি। বনে কারা আগুন দেয়? এটা এখনো শনাক্ত করতে পারেনি। তাহলে সংশ্লিষ্ট বন কর্মকর্তাদের কাজ কি?’
শ্রীপুর রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. মোকলেছুর রহমান বলেন, ‘বনে আগুন দেওয়ার ঘটনায় গত কয়েক দিন আগেও একজনকে আইনের আওতায় আনা হয়েছে। আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি। আপনাদের মাধ্যমে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে বন কর্মীদের পাঠানো হয়েছে। বনের ভেতর আগুন লাগলে নেভানো খুবই কঠিন।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।