নিজস্ব প্রতিবেদক, গাজীপুর: গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার নিশ্চিন্তপুর এলাকায় মনট্রিমস কারখানায় শ্রমিকের আত্মহত্যার ঘটনায় পরিবারকে আর্থিক সহায়তা করেছে কারখানা কর্তৃপক্ষ। এছাড়াও দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে দুই কর্মকর্তাকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
শনিবার সকালে (১৯ এপ্রিল) কারখানার সামনে অব্যাহতির নোটিশ ও শোকাহত ব্যানার সাঁটিয়ে দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও কারখানায় যথারীতি উৎপাদন কার্যক্রম চালু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) মধ্যরাতে ওই কারখানার দুই জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ তুলে ফেসবুকে স্ট্যাস্টাস দিয়ে কারখানায় মো. ইদ্রিস আলী নামে এক শ্রমিক বিষাক্ত কেমিকেল পানে আত্মহত্যা করেন। তবে কারখানা কর্তৃপক্ষ প্রাথমিক অনুসন্ধানে জেনেছে, ওই শ্রমিক অ্যালুমিনিয়াম ফসফাইড নামে বিষাক্ত পদার্থ সেবন করেছেন, যা তাদের প্রতিষ্ঠানে ছিল না।
মারা যাওয়া মো. ইদ্রিস আলী (২৩) উপজেলার নিশ্চিন্তপুর এলাকায় সপরিবার ভাড়া বাসায় থেকে মনট্রিমস্ লিমিটেড কারখানার কাজ করতেন।
কারখানা কর্তৃপক্ষ ও শ্রমিকরা জানায়, শ্রমিক ইদ্রিস আলী গত বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) রাতে তার ফেসবুক আইডিতে কারখানার অনিয়মের অভিযোগ ও কারখানার সহকারী ব্যবস্থাপক (প্লানিং) কামরুল ইসলাম ও উপ ব্যবস্থাপক (কার্টন সেকশন) হারুন অর রশিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন। তিনি ফেসবুকে স্ট্যাস্টাস দেয়ার পর কেমিকেল জাতীয় কিছু খেয়ে আত্মহত্যা করেন। পরে কারখানা কর্তৃপক্ষ বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে ওই দুই কর্মকর্তাকে রাতেই চাকরি থেকে অব্যাহিত দেয়। এছাড়া সকালে কারখানার প্রধান ফটকের সামনে নেটিশ সাঁটিয়ে দেয়। তাতে লেখা আছে, ‘‘আমাদের সহকর্মী মো. ইদ্রিস আলীর অকাল মৃত্যুতে আমরা গভীরভাবে শোকাহত।’’
এছাড়া আরেকটি অফিস আদেশ দিয়েছেন। তাতে লেখা আছে, ‘‘সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও প্রভাবমুক্ত তদন্তের স্বার্থে কারখানার সহকারী ব্যবস্থাপক (প্লানিং) কামরুল ইসলাম ও উপ ব্যবস্থাপক (কার্টন সেকশন) হারুন অর রশিদকে চাকরি হতে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এদিকে শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) বন্ধ থাকার পর আজ শনিবার (১৯ এপ্রিল) সকাল থেকে যথারীতি কারখানা খুলে দেওয়া হয়েছে। শ্রমিকরা শতঃস্ফূর্তভাবে কাজ করছেন।’’
ওই কারখানা শ্রমিক লাবিব হোসেন বলেন, ‘‘ইদ্রিসের মৃত্যুতে আমরা সবাই শোকাহত। ইতোমধ্যে কারখানা কর্তৃপক্ষ বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তাতে আমরা সন্তুষ্ট। তার পরিবারকেও আর্থিক সহায়তা দিয়েছে।’’
কারখানা কর্তৃপক্ষ একটি লিখিত নোটিশে জানান, ইদ্রিসের পরিবারের সঙ্গে প্রাথমিক কথোপকথনে, তারা জানতে পেরেছেন, যে তিনি ব্যক্তিগত সমস্যায় ভুগছিলেন যা মানসিক যন্ত্রণার কারণ ছিল। কর্তৃপক্ষ তার পরিবারকে ইতোমধ্যে ৪ লাখ টাকা দিয়েছে। তার পরিবারের যোগ্য সদস্য, বিশেষ করে তার স্ত্রী ইচ্ছুক এবং সক্ষম হন, তাহলে উপযুক্ত চাকরি দেওয়া হবে।
মনট্রিমস্ লিমিটেড কারখানার মহাব্যবস্থাপক (জিএম) গোলাম সারওয়ার বলেন, ওই দুই কর্মকর্তাকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। সকাল থেকে কারখানা খুলে দেয়া হয়েছে এবং শ্রমিকরা কাজে যোগ দিয়েছে। তার পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে।
গাজীপুর শিল্প পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার আবু তালেব জানান, নিরাপত্তার স্বার্থে কারখানা এলাকায় অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তবে কোনো অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি হয়নি। শ্রমিকরা শান্তিপূর্ণভাবে কাজ করছেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।