নিজস্ব প্রতিবেদক, গাজীপুর: গাজীপুরে প্রকাশ্যে সাংবাদিক হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গভীর দুঃখ প্রকাশ করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি বলেন, “আমরা জাতি হিসেবে ক্রমেই অসহিষ্ণু হয়ে পড়েছি, ধৈর্যের অভাব দেখা দিচ্ছে। আগে সমাজে কোনো আপত্তিকর ঘটনা ঘটলে সবাই প্রতিহত করতে এগিয়ে আসত, এখন মানুষ ভিডিও ধারণে ব্যস্ত থাকে।”
রোববার (১০ আগস্ট) দুপুরে আইনশৃঙ্খলাসংক্রান্ত কোর কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব মন্তব্য করেন।
উপদেষ্টা বলেন, “জনসম্মুখে ঘটনা ঘটলেও কেউ থামাতে এগিয়ে আসে না। সরকারি বাহিনীর সদস্যরা সবসময় কাছাকাছি থাকেন না—পরে এসে পৌঁছান। গাজীপুরের ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক, যা সমাজে ঘটবে তা কল্পনাও করা যায় না। তবে জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হয়েছে। যার জীবন চলে গেছে, তাকে ফেরানো সম্ভব নয়। সবাই সচেতন হলে এবং ধৈর্য ধরলে এ ধরনের ঘটনা কমে আসবে।”
তিনি জানান, অভিযুক্তদের প্রায় সবাই গ্রেপ্তার হয়েছে এবং শাস্তি নিশ্চিত করা হবে। “পাবলিক চার্টার” আইনে জনগণের প্রতিরোধমূলক ভূমিকার কথা থাকলেও তা এখন প্রায় ভুলে যাওয়া হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পুরনো ভিডিও ছড়িয়ে আতঙ্ক সৃষ্টির সমালোচনা করেন।
জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী উদাহরণ দিয়ে বলেন, “শেরপুরে নানিকে হত্যার সময় নাতি ভিডিও করছে—শুধু ইউটিউবে আয় করার জন্য। এটি সমাজের অবক্ষয়ের চিত্র।”
তিনি আরও জানান, নিউমার্কেট থেকে উদ্ধার হওয়া দেশীয় অস্ত্রের নির্মাতা ও সরবরাহকারীদেরও আইনের আওতায় আনা হবে। হারানো অস্ত্র উদ্ধারে শিগগিরই পুরস্কার ঘোষণাসহ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে।
গাজীপুরের সাংবাদিক হত্যাকাণ্ড প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “ভিডিও ফুটেজের মাধ্যমে ঘটনাটি প্রকাশ পেয়েছে। সাত বা ১৫ দিনের মধ্যে চার্জশিট দেওয়া সম্ভব কি না, তা নিয়েও কাজ চলছে। চেষ্টা করছি দ্রুততম সময়ে চার্জশিট দেওয়ার।”
এ ছাড়া আসন্ন নির্বাচনে নিরাপত্তার বিষয়েও তিনি কথা বলেন। প্রিসাইডিং কর্মকর্তাদের নিরাপত্তায় এবার অস্ত্রসহ আনসার মোতায়েন করা হবে। পূর্বে চারজন নারী ও ছয়জন পুরুষ আনসারের মধ্যে মাত্র দুজনের কাছে হাতিয়ার থাকত, এবার তিনজনের কাছে হাতিয়ার থাকবে। পুলিশ, বিজিবি ও সেনাবাহিনীর কাছেও প্রয়োজনীয় অস্ত্র থাকবে বলে জানান তিনি।
বৈঠকে আরেকটি ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে উপদেষ্টা বলেন, “গাজীপুরে পুলিশের সামনেই একজনকে ইট দিয়ে থেঁতলে হত্যা করা হয়েছে। কমিশনার জানিয়েছেন, এখনো পুলিশ ট্রমার মধ্যে রয়েছে। একজনের কাজ করতে এখন তিনজন পুলিশ লাগছে।”