নিজস্ব প্রতিবেদক, গাজীপুর: পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে গাজীপুরে কোরবানির পশু কেনা বেচার জন্য স্থায়ী হাটের পাশাপাশি অস্থায়ী হাট বসছে। গাজীপুর মহানগরীর টঙ্গী ও জয়দেবপুরে দুটি স্থায়ী হাট থাকলেও ইতোমধ্যে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন এলাকায় আরও ১০টি অস্থায়ী হাটের টেন্ডার দেয়া হয়েছে।
করোনা মহামারির কারণে যেসব ক্রেতা বিক্রেতা কোরবানির পশুর হাটে গিয়ে কেনা বেচা করতে অনিচ্ছুক তাদের জন্য অনলাইনে পশু বিক্রির উদ্যোগে নিয়েছে কয়েকটি ডেইরি খামারের মালিক।
গাজীপুর জেলা মার্কেটিং বিভাগ ও সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা গেছে, জেলায় চার শতাধিক বাজার রয়েছে। পাঁচটি উপজেলায় রয়েছে প্রায় অর্ধশত স্থায়ী বাজার। এসব বাজারে সপ্তাহে একদিন করে গবাদি পশুর হাট বসে। ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে গাজীপুর ও টঙ্গীতে বিশেষ ১০টি অস্থায়ী হাট বসবে।
গাজীপুর জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা দিপক রঞ্জন রায় বলেন, জেলায় মোট খামারির সংখ্যা ৬ হাজার ৮৬৮ জন। তারা ঈদুল আজহা উপলক্ষে ইতোমধ্যেই গবাদি পশু বিক্রির উপযোগী করে তুলেছেন। এর মধ্যে গরু ৬১ হাজার ১৫০টি, মহিষ ৪০ হাজার ৬৩৫টি এবং ছাগল ও ভেড়া রয়েছে ২০ হাজার ৯১৫টি।
তিনি আরও বলেন, এবার করোনা সংক্রমণের কারণে ক্রেতা-বিক্রেতার জন্য অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থার দিকে লক্ষ্য রেখে খোলা জায়গায় হাট স্থাপন করতে হবে।
ইতোমধ্যে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে বিভিন্ন ডেইরি খামারের গবাদি পশুর তালিকা নেয়া হয়েছে।
গাজীপুর সদর উপজেলার পিরুজালী এলাকার গ্রীন অ্যাগ্রো পার্কের ব্যবস্থাপক সুমন পাটোয়ারী বলেন, এ বছর গরু ক্রেতাদের জন্য খামারে স্বাস্থ্যবিধি মেনে থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা রেখেছি। কেউ গরু পছন্দ করার জন্য সময় নিয়ে থেকে-খেয়ে গরু ক্রয় করতে পারবেন। এছাড়া যারা হাটে বা খামারে আসতে পারবেন না তাদের জন্য অনলাইনে গরু বিক্রিরও উদ্যোগ নিয়েছি। আমাদের নিজস্ব ওয়েবসাইট, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পশুর ছবি আপলোড করার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এবার ১২০টি গরু বিক্রির জন্য প্রস্তুত রেখেছি। গাজীপুরের জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে গবাদিপশুর ওজন পরিমাপ, মূল্য নির্ধারণ বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা পেয়েছেন।
সদর উপজেলার বানিয়ারচালা গ্রামের জাহাঙ্গীর আলম বলেন, প্রতি ঈদুল আজহায় ৩৫ থেকে ৪০টি গরু কোরবানির জন্যে মোটাতাজা করি। এবার খামারে ৩৫টি গরু প্রস্তুত করা হয়েছে। অন্যান্য সময় হাট-বাজারে গরু নিয়ে যেতাম। এ বছর এখনও গরুর হাট বসতে শুরু করেনি। এ অবস্থায় কি করবো তা নিয়ে চিন্তায় আছি।
সদর উপজেলার দরগাচালা গ্রামের খামারি খবির হোসেন বলেন, ঈদুল আজহা উপলক্ষে ৪৫টি গবাদি পশু বিক্রির প্রস্তুতি নিয়েছি। ক্রেতারা খামারে আসবে কিনা বা ক্রেতাদের কাছে কিভাবে কোরবানির পশুর তথ্য পৌঁছানো যায় সেটা নিয়ে ভাবছি। করোনার এ মহামারির সময়ে পশুর উপযুক্ত মূল্য পাওয়া নিয়েও সংশয় রয়েছে।
গাজীপুরের জেলা প্রশাসক এসএম তরিকুল ইসলাম বলেন, গবাদি পশুর খামারিদের যেসব সংগঠন রয়েছে তাদের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। অন্যান্য বছরের মতো গবাদি পশুর বাজার জমবে কিনা তা নিয়ে বিক্রেতাদের শঙ্কার সংবাদ আমাদের কাছে রয়েছে। এ অবস্থা মোকাবিলা করতে আমরা অনলাইন প্ল্যাটফরমে পশু বিক্রির উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। এ লক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। অনলাইনে পশুর ওজন অনুযায়ী মূল্য নির্ধারণ করে দেয়া হবে, যেন ক্রেতা-বিক্রেতা কেউ প্রতারিত না হয়।
আর করোনার সংক্রমণরোধে স্থানীয় বাজারগুলো নজরদারি করতে এরই মধ্যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের বলা হয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।