নিজস্ব প্রতিবেদক, গাজীপুর: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের গাজীপুরের ৫টি সংসদীয় আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগ ও স্বতন্ত্রসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ৪৪ প্রার্থী তাদের মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন। রোববার (০৩ ডিসেম্বর) শুরু হয়ে সোমবার (০৪ ডিসেম্বর) মনোনয়নপত্র বাছাই শেষ হয়েছে। বাছাই শেষে গাজীপুরের ৫টি সংসদীয় আসনে মোট ৪১ জনের প্রার্থীতা বৈধ ও ঋণ খেলাপীর কারণে ২ জনের এবং পৌর কর খেলাপীর কারণে ১ জনের প্রার্থীতা বাতিল করা হয়েছে।
রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গাজীপুরের ৫টি সংসদীয় আসনে দাখিল করা মনোনয়নপত্র রোববার ও সোমবার বাছাই করা হয়। জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের ভাওয়াল সম্মেলন কক্ষে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক আবুল ফাতে মোহাম্মদ সফিকুল ইসলাম প্রার্থীদের মনোনয়ন বাছাই করেন। এসময় জেলা পুলিশের পুলিশ সুপার কাজী শফিকুল আলম, সহাকারী রিটার্নিং কর্মকর্তাবৃন্দ, জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা এ এইচ এম কামরুল হাসান, বিভিন্ন ব্যাংক, আর্থিক ও সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি, নির্বাচনে অংশ গ্রহণকারী প্রার্থী বা তাদের প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন।
সূত্র আরো জানায়, বাছাইকালে ঋণ খলাপী থাকার কারণে বাছাইয়ের প্রথম দিনে গাজীপুর-১ আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী ও সাবেক সচিব এম এম নিয়াজ উদ্দীন ও দ্বিতীয় দিনে গাজীপুর-৪ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী ও কেন্দ্রীয় কৃষকলীগের উপদেষ্টা আলম আহমেদের মনোনয়ন বাতিল ঘোষণা করা হয়। তবে, গাজীপুর-৫ আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসাবে সাবেক সচিব এম এম নিয়াজ উদ্দীনের মনোনয়ন বৈধ বলে ঘোষণা করা হয়। এছাড়া গাজীপুর-৫ আসনে পৌর কর খেলাপী থাকায় স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ আমজাদ হোসেনের মনোনয়ন বাতিল করা হয়।
দুইদিনের বাছাইয়ের ফলাফল:
গাজীপুর–১ আসন: বাতিল হলেন এম এম নিয়াজ উদ্দিন (জাতীয় পার্টি)। নির্বাচনী লড়াইয়ে টিকে থাকলেন ৮ জন। তাঁরা হলেন, আ ক ম মোজাম্মেল হক (আওয়ামী লীগ, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী ও বর্তমান এমপি), রেজাউল করিম রাসেল (আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র ও কালিয়াকৈর আওয়ামী লীগ সম্পাদক), আল আমিন (জাতীয় পার্টি), ফজলুর রহমান (ইসলামী ঐক্যজোট), চৌধুরী ইরাদ আহমদ সিদ্দিকী (তৃণমুল বিএনপি ও বিএনপি নেতা তানভীর সিদ্দিকীর ছেলে), মো: আব্দুল জব্বার সরকার (তৃণমুল বিএনপি), মো. সফিকুল ইসলাম (বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন) ও মো: মানিক সরকার(জাকের পার্টি )।
গাজীপুর–২ আসন: বৈধ হয়ে টিকে থাকলেন ১০ জন। তাঁরা হলেন, মো. জাহিদ আহসান রাসেল (আওয়ামী লীগ, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী, বর্তমান এমপি), কাজী আলিম উদ্দিন বুদ্দিন (আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র), মো. সাইফুল ইসলাম (আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র), মো. জয়নাল আবেদীন (জাতীয় পার্টি), রিনা রহমান (জাকের পার্টি), কাজী হাসিবুর রহমান রাব্বী (ন্যাশনাল পিপলস পার্টি), সৈয়দ আবু দাউদ মছনবী হায়দার (বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন), এস এম জাহাঙ্গীর আলম (বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি), মো. আমির হোসাইন (ইসলামী ফ্রৃন্ট বাংলাদেশ) ও রেহানা আক্তার রিনা (বাংলাদেশ কংগ্রেস)।
গাজীপুর–৩ আসন: বাছাইয়ে বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে ৮ জনকে। বৈধ প্রার্থীগণ হলেন, রুমানা আলী টুসি (আওয়ামী লীগ, প্রয়াত রহমত আলীর মেয়ে, সংরক্ষিত এমপি), ইকবাল হোসেন সবুজ (আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র. জেলা আওয়ামী লীগের সম্পাদক ও বর্তমান এমপি), মো. আব্দুর রহমান (কৃষক-শ্রমিক-জনতা লীগ), মো. জহিরুল হক মন্ডল বাচ্চু (জাসদ-ইনু), মো. আলাউদ্দিন (জাকের পার্টি), মো. জয়নাল আবেদীন (বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন), এফ এম সাইফুল ইসলাম (জাতীয় পার্টি) ও এ কে এম সাখাওয়াত হোসেন খান (স্বতন্ত্র)।
গাজীপুর–৪ আসন: এ আসনে ঋণ খেলাপীর কারণে বাতিল হলেন আলম আহমেদ (আওয়ামী লীগ স্বতন্ত্র)। বৈধ প্রার্থী হিসাবে টিকে থাকলেন ৭ জন। তাঁরা হলেন, সিমিন হোসেন (রিমি) (আওয়ামী লীগ, তাজউদ্দীন আহমদের কন্যা, বর্তমান এমপি ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম মেম্বার), জুয়েল কবির (জাকের পার্টি), সামসুল হক (স্বতন্ত্র), সামসুদ্দিন খান (জাতীয় পার্টি), মাসুদ চৌধুরী (বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি), এ্যাড. সারোয়ার ই কায়নাত (বাংলাদেশ ন্যাশনাল ফ্রন্ট-বিএনএফ), আব্দুর রউফ খান (বাংলাদেশ কংগ্রেস পার্টি)।
গাজীপুর–৫ আসন: এ আসনে বাতিল হলেন মোহাম্মদ আমজাদ হোসেন (স্বতন্ত্র)। বৈধ প্রার্থী হলেন, ৮ জন। তাঁরা হলেন, মেহের আফরোজ চুমকি (আওয়ামী লীগ, বর্তমান এমপি. মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি), আখতার উজ্জামান ((আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র, সাবেক এমপি), এম এম নিয়াজ উদ্দিন (জাতীয় পার্টি), উর্মি (বাংলাদেশ সুপ্রীম পার্টি, তৃতীয় লিঙ্গ), মো. সোহেল মিয়া (গণফোরাম), মো. আল আমিন দেওয়ান (ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ), মোহাম্মদ তরিকুল ইসলাম আকন্দ (জাসদ), এ এন এম মনিরুজ্জামান (জাকের পার্টি)
নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের বিরুদ্ধে আপিল ও নিষ্পত্তি হবে ৬ থেকে ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ১৭ ডিসেম্বর। আর প্রতীক বরাদ্দ হবে ১৮ ডিসেম্বর। ৫ জানুয়ারি প্রচার শেষ করে ৭ জানুয়ারি ভোট।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।