গাজীপুরের টঙ্গী, কালিয়াকৈর ও মৌচাক এলাকায় কারখানা শ্রমিকদের বকেয়া বেতন-ভাতা দাবির প্রতিবাদে ব্যাপক বিক্ষোভ ও মহাসড়ক অবরোধের ঘটনা ঘটেছে। টঙ্গীর হোসেন মার্কেট এলাকায় বিএইচআইএস অ্যাপারেলস লিমিটেড কারখানার শ্রমিকরা মঙ্গলবার সকালে বেতন-ভাতা না পাওয়ায় বিক্ষোভ শুরু করেন। তারা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করলে উভয় পাশে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়। যাত্রীরা চরম দুর্ভোগে পড়েন।
শ্রমিকদের অভিযোগ, তাদের প্রতি মাসের ২৫ তারিখের মধ্যে বেতন পরিশোধ করার কথা থাকলেও ফেব্রুয়ারি মাসের বেতন ৯ মার্চ দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কারখানা কর্তৃপক্ষ বারবার আশ্বাস দিলেও নির্ধারিত দিনে বেতন পরিশোধ করেনি। সোমবার শ্রমিকরা কাজে যোগ দিয়ে বেতন চাইলে কর্তৃপক্ষ কালক্ষেপণ করে এবং পরে কারখানার মূল ফটকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধের নোটিশ ঝুলিয়ে দেয়। মঙ্গলবার সকালে শ্রমিকরা কাজে এসে এই নোটিশ দেখে বিক্ষোভ শুরু করেন এবং ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করেন।
এদিকে, গাজীপুর মহানগরীর বাসন থানার কড্ডা নান্দুন এলাকায় কেমিও ইউএসএ নীটওয়্যার লিমিটেডের শ্রমিকরা ফেব্রুয়ারি মাসের বেতন না পাওয়ার কারণে বিক্ষোভ করেন। কর্তৃপক্ষ একাধিকবার আশ্বাস দিয়েও বকেয়া পরিশোধ করেনি। সোমবার রাতে শ্রমিকরা কারখানার সামনে বিক্ষোভ করলে মালিক পক্ষের লোকজন তাদের ওপর হামলা চালায়। এতে বেশ কয়েকজন শ্রমিক আহত হন। এর প্রতিবাদে মঙ্গলবার সকাল থেকে শ্রমিকরা ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করেন এবং কারখানার ভেতরে ব্যাপক ভাঙচুর চালান। কিছু শ্রমিক তৈরি পোশাক ও অন্যান্য মালামালে আগুন ধরিয়ে দেন এবং কিছু মালামাল লুট করে নিয়ে যান বলে কারখানা কর্তৃপক্ষ অভিযোগ করেছে।
এছাড়া, কালিয়াকৈর উপজেলার মৌচাক এলাকায় গ্লোবাস কারখানার এক শ্রমিককে মারধরের ঘটনায় বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা সকাল ৮টা থেকে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করেন। এতে ওই মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। শ্রমিক অসন্তোষের কারণে আশপাশের অন্তত ১০-১২টি কারখানা সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
গাজীপুর শিল্প পুলিশের (টঙ্গী জোন) ওসি ইসমাইল হোসেন জানান, আলোচনার পর শ্রমিকদের বেতন পরিশোধের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলে তারা বেলা ১১টার দিকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে সরে যান। পুলিশ ও সেনা সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেন। শিল্প পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার মো. ওয়াহিদুজ্জামান জানান, শ্রমিকরা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক ও ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করায় যান চলাচল প্রায় ৪ ঘণ্টা বন্ধ ছিল। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হস্তক্ষেপে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
শ্রমিকদের দাবি, তাদের দুই মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে এবং এটি অবিলম্বে পরিশোধ করতে হবে। কারখানা কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের সাথে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করার আশ্বাস দিয়েছে। তবে শ্রমিকদের একাংশ বলছে, যদি প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বেতন-ভাতা পরিশোধ করা না হয়, তাহলে তারা আবারও আন্দোলনে নামবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।