বিনোদন ডেস্ক: রিকশা চালাতে চালাতে গুনগুন করতেন গান। আর সেই গানের সুরে মুগ্ধ হতেন রিকশার যাত্রীরা। এভাবে যশোর শহরজুড়ে নাম ছড়াতে থাকে ইত্যাদি খ্যাত সঙ্গীতশিল্পী আকবর।
জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী কিশোর কুমারের ভক্ত ছিলেন আকবর। নিজের প্রিয় সেই শিল্পীর গানই যেন একদম অবকিল গাইতেন। আর এভাবেই নাম ছড়াতে ছড়াতে ইত্যাদির হানিফ সংকেতের নজরে আসেন তিনি। আর তারপর থেকেই বদলে যায় আকবর। রিকশাওয়ালা আকবর থেকে হয়ে যান শিল্পী আকবর।
ইত্যাদির আকবরের বৃহস্পতি তখন তুঙ্গে। ইত্যাদির প্রথম আসরে জনপ্রিয় হওয়া আকবর পেলেন পরের ইত্যদির পর্বেও সুযোগ। আর এবার কোনো কভার করা গান নয়। নিজের মৌলিক গানের যাত্রা শুরু হলো। ‘তোমার হাতপাখার বাতাসে’ গানটি গাইলেন। হানিফ সংকেতের প্রেরণায় নিজের মৌলিক গানের মিউজিক ভিডিও নিজেই অভিনয় করলেন আর সহশিল্পী হিসেবে স্ত্রীর চরিত্রে তার সঙ্গে অভিনয় করলেন ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় তারকা ‘পূর্ণিমা’।
‘তোমার হাত পাখার বাতাসে’র মাধ্যমে জনপ্রিয়তার আরও চূড়ায় পৌঁছে যান তিনি। ভাগ্য বদলে গিয়ে রিকশাচালক থেকে পুরোদস্তুর গায়ক হয়ে ওঠেন আকবর।
রবিবার (১৩ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যাল হাসপাতালের আইসিইউতে মারা যান তিনি। মৃত্যুর পরও তার গাওয়া গানগুলোর আবেদন কমেনি। তবে সবচেয়ে আলোচনায় আছে সেই ‘তোমার হাতপাখার বাতাসে’ গানটি। কারণ এখানে ছিলেন পূর্ণিমা।
গানটি প্রচারের পরপই গুজব ছড়ায়। জনশ্রুতি আছে, গায়ক আকবর বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিলেন ঢালিউডের নায়িকা দিলারা হানিফ পূর্ণিমাকে। এমনকি জোর গুঞ্জন ছিল নায়িকা পূর্ণিমার কারণেই প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে ডিভোর্স হয় প্রয়াত আকবরের। এই গুজব নিয়ে অনেকেই বাজেভাবে আকবরকে অপমানও করেছেন।
ব্যাপারটি খোলাসা করেছেন নায়িকা পূর্ণিমা। তিনি গণমাধ্যমে জানিয়েছেন, ‘এটি একদমই মিথ্যা একটা গুঞ্জন। আকবর আমকে যথেষ্ট সম্মান ও শ্রদ্ধা করতেন।’
তিনি আরও জানান, ‘এটি খুবই নোংরা এবং খুবই বাজে বিষয়। আমার আমার কারণে উনার সংসার ভেঙেছে, আমাকে প্রেমের বা বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছেন এটা একদমই মিথ্যা কথা। মিউজিক ভিডিওর পর আমার সঙ্গে ফোনে উনার কথাই হয়নি কখনও।’
তিনি আরও যোগ করেন, ‘সেসময় এখনকার মতো ফেসবুক থাকলে এই গুজব ভাইরাল হয়ে যেত।
দীর্ঘদিন ধরেই কিডনির অবস্থা খারাপ হওয়ায় গায়ক আকবরের শরীরে পানি জমে গিয়েছিল। সে কারণে পচন ধরে নষ্ট হয়ে যায় তার ডান পা। যার ফলে সম্প্রতি তার এক পা কেটে ফেলতে হয়।
শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে গত ৫ নভেম্বর দুপুরে আকবরকে রাজধানীর একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর আশঙ্কাজনক অবস্থায় ৯ নভেম্বর ভোরে আইসিইউতে নিয়ে যাওয়া হয়। ১৩ নভেম্বর তিনি সেখানেই মারা যান।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।