চট্টগ্রাম জেলায় গতকাল করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়া ১১ জনের মধ্যে পাহাড়তলী থানাধীন সাগরিকা এলাকায় আক্রান্ত চারজন একই পরিবারের। মা এবং তাঁর দুই ছেলে ও এক মেয়ের নমুনা পরীক্ষায় করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিশ্চিত করেছে চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। নমুনা পরীক্ষায় এই পরিবারের শুধু সাড়ে তিন বছরের ছোট মেয়েটির ফলাফল নেগেটিভ এসেছে।
কিন্তু এই ফলাফলে খুশি হওয়ার চেয়ে বরং চিন্তার ভাজ পড়েছে পরিবারটিতে। কারণ ৬ সদস্যের পরিবারের প্রধান চট্টগ্রামের একটি গার্মেন্ট কারখানার কমার্শিয়াল এক্সিকিউটিভ হিসেবে কর্মরত বাবা গত ৮ এপ্রিল থেকে করোনায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। নিজেদের অসুস্থতার চেয়ে পরিবারের সবচেয়ে ছোট সদস্যটি এখন কার কাছে থাকবে তা নিয়েই দিশেহারা পরিবারটি।
পরিবারের ৪ সদস্য করোনা রোগী হিসেবে শনাক্ত হওয়ার পর গতকাল রাত সোয়া ১১টায় এই প্রতিবেদকের সঙ্গে মোবাইলে কথা হয় চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে গত ৮ এপ্রিল থেকে চিকিৎসাধীন চট্টগ্রামের গারটেক্স গার্মেন্টসের জুনিয়ার কমার্শিয়াল ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত বাবার সঙ্গে। তিনি মোবাইলের ওপার থেকে আহাজারি করতে করতে বলেন, ‘আমার লেদা মেয়েটা (ছোট মেয়ে) এখন কার কাছে থাকবে। সে একেবারে সুস্থ।
পরিবারের সবাই করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় তাদের হাসপাতালে নিয়ে আসবে। মেয়েটাকে তো আত্মীয়-স্বজন কেউ রাখবে না। আর মেয়েটিও মা ছাড়া কারো কাছে থাকবে না। এই মেয়ের কিছু হলে আমার পরিবারের কেউ বাঁচবে না। আপনারা একটা ব্যবস্থা করেন। দরকার হলে অন্যদের হাসপাতালে এনে তাদের মাকে ছোট মেয়েটিসহ বাসায় চিকিৎসা দেওয়া হোক।’
নিজে কিছুটা সুস্থ বোধ করলেও গতকাল পরিবারের সংবাদ শোনার পর তিনি দুশ্চিন্তায় আবারও অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বলে এই প্রতিবেদককে জানান। তিনি পরিবারের সদস্যদের করোনা আক্রান্তের জন্য নিজেকে দায়ী করে বলেন, আমার পরিবারের কেউ লকডাউনের পর বাড়ির বাহিরে যায়নি। কেবল আমি যেতাম। সম্ভবত: সাগরিকা জোলারহাট বাজার থেকে আমি করোনা সংক্রমিত হয়েছি।
গত ২ এপ্রিল থেকে অসুস্থ হওয়ার পর থেকে ছেলেরা নিয়মিত আমার জ্বর পরীক্ষা করত। অসচেতনতার কারণে পরিবারের অন্য সদস্যরাও কাছে আসত। সাগরিকা পেট্রল পাম্পের পেছনের গলির ভাড়া ২ বেড রুমের ভবনটিতে চাইলেও অন্যদের থেকে আলাদা হওয়ার সুযোগ ছিল না। পরিবারের সবাই আমার কাছ থেকেই করোনা সংক্রমিত হয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।