নিজস্ব প্রতিবেদক, গাজীপুর: নথি পর্যালোচনা করে সাক্ষর করতে চাওয়ায় গাজীপুর সিটি করপোরেশনের প্রধান হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মঞ্জুরুল হাসানকে লাঞ্ছিতের অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্তরা হলো গাসিক হিসাব বিভাগের এক কর্মকর্তাসহ কয়েকজন ঠিকাদারের বিরুদ্ধে। এ ঘটনার পরপরই তিনি নগর ভবন থেকে বের হয়ে চলে যান। এ দিকে এ ঘটনায় নগর ভবনের অন্য কর্মকর্তাদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
শুক্রবার (০৬ অক্টোবর) বিকেলে গাসিক প্রধান হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মঞ্জুরুল হাসানের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে কথা হয় এ প্রতিবেদকের সাথে। এর আগে বৃহস্পতিবার দুপুরে গাজীপুর নগর ভবনের নিজ কক্ষে তিনি এ ঘটনার শিকার হন।
মঞ্জুরুল হাসান বলেন, ‘আমি কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ দেব না। মন্ত্রণালয় আমাকে এখানে পাঠিয়েছে, তাই আমি এখানে এসেছিলাম। এখানে সততার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছি। দেশপ্রেমের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছি। আজকে তার প্রতিদান পেয়েছি। আমার ভাগ্যে ছিল জুতা মারবে, তাই মেরেছে। আল্লাহ নিশ্চিই এর বিচার করবেন। তবে আজকের পর আমি আর সিটি করপোরেশনে অফিস করতে আসব না। মন্ত্রণালয়ে আবেদন করে আমি অন্যত্র বদলি হয়ে চলে যাব। এ নিয়ে আমি আর কিছু বলতে চাই না বলেই মোবাইল ফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুত ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও নগর ভবনের একাধিক কর্মকর্তা জানান, বেশ কিছুদিন অনুপস্থিত থাকার পর বৃহস্পতিবার অফিসে যান সিটি করপোরেশনের প্রধান হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মঞ্জুরুল হাসান। তিনি তাঁর কক্ষে স্বাভাবিকভাবেই কাজ করছিলেন। দুপুর দুইটার দিকে তিনি তাঁর কক্ষ থেকে বাইরে বের হন। এ সময় সিটি করপোরেশনের হিসাব বিভাগের একজন কর্মকর্তা ও কয়েকজন ঠিকাদার প্রধান হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার কক্ষে একটি নথি নিয়ে যান। সেখানে তাকে না পেয়ে বাইরে এসে ধাক্কা দিয়ে পুনরায় তাঁর কক্ষে নিয়ে যান। এ সময় ঠিকাদারেরা নথিটি দ্রæত স্বাক্ষর করে দেওয়ার জন্য প্রধান হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তাকে চাপ দেন। এ সময় মঞ্জুরুল হাসান নথিটি দেখে পরে স্বাক্ষর করে দেবেন বলে জানালে তারা অসন্তুষ্ট হন। এ নিয়ে কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে ঠিকাদারেরা প্রধান হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার সঙ্গে ধাক্কাধাক্কি করেন এবং শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন। এ ঘটনার পরপর প্রধান হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা নগর ভবন থেকে চলে যান।
সূত্র আরো জানান, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের প্রধান হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা হিসেবে মঞ্জুরুল হাসানকে পদায়নের পর তিনি যোগদান করলেও বেশ কিছুদিন তাঁকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়া হয়নি। এ নিয়ে শুরু থেকেই হিসাব বিভাগের এক কর্মকর্তার সঙ্গে তাঁর বিরোধ চলে আসছিল।
এ ব্যাপারে গাসিক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এ এস এম শফিউল বলেন, ‘জাইকার একটি কনফারেন্সে থাকায় ওইদিন আমি অফিসে যাইনি। এ ধরনের কোনো ঘটনার কথা কেউ আমাকে জানায়নি। তবে যদি এ ধরনের ঘটনা ঘটে থাকে, এটি একটি ক্রিমিনাল অফেনস্। অবশ্যই তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানান।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।