জুমবাংলা ডেস্ক : গ্রামবাংলার এক সময়কার ঐতিহ্যের বাহন ছিল পালকি আর গরু-মহিষের গাড়ি। বিয়ের অনুষ্ঠানে বরযাত্রা অথবা কনের শ্বশুরালয়ে যাত্রায় ব্যবহার হতো এসব বাহন। যান্ত্রিকতার যুগে সেসব এখন শুধুই অতীত। সেই অতীতকে স্মরণ করতেই এ যুগেও বর নিয়ে বরযাত্রীরা মহিষের গাড়িতে গেল বিয়ের অনুষ্ঠানে। অনুষ্ঠান শেষে নববধূকে নিয়ে ফিরলেন সেই বাহনে।
নীলফামারীর ডোমার উপজেলায় একটি বিষের অনুষ্ঠানে ব্যবহার হতে দেখা গেছে ঐতিহ্যের ওই বাহন। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে পাঁচটি মহিষের গাড়িতে ৪০জন বরযাত্রীসহ বর ওই উপজেলার পাঙ্গামুটুকপুর ইউনিয়নের বাবুপাড়া গ্রামের কনের বাড়িতে পৌঁছায় ১০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে। রাতে বিয়ের অনুষ্ঠান শেষে শুক্রবার সকালে নববধূ নিয়ে পৌঁছায় বোড়াগাড়ী ইউনিয়নের মাহিগঞ্জ রমণীপাড়া গ্রামে।
বরযাত্রায় আনন্দ করেছেন পুরোনো দিনে বিয়ের গীত বাজিয়ে। নতুন কোনো যন্ত্রে নয়, গাড়ির সামনে পুরানো দিনের আদলে মাইক বেঁধে শুনেছেন এসব গীত। নববধূকে নিয়ে শুক্রবার সকালে বরযাত্রীদের মহিষের গাড়ির বহর দেখে আর মাইকে বিয়ের গীতের শব্দ শুনে পথে পথে ভিড় জমে উৎসুক মানুষের।
বর বিধান চন্দ্র রায়ের (২৮) বাবা অধীর চন্দ্র রায় (৬৫) একজন কৃষক। অপরদিকে কনে বাসনা রাণী রায়ের (২৪) বাবা রমেশ চন্দ্র রায়ও একজন কৃষক। পুরনো দিনের অনুষ্ঠানের আদলে নতুন বন্ধন তৈরিতে সম্মত ছিলেন ওই দুই কৃষক পরিবার। এমন সম্মতিতে তারা ব্যবহার করেছেন পুরনো ঐতিহ্যের বাহন মহিষের গাড়ি।
বরের বাবা অধীর চন্দ্র রায় বলেন, ‘আমি বিয়ে করেছিলাম গরু-মহিষের গাড়িতে চড়ে। এখন যন্ত্রের যুগে সে ঐতিহ্য আমরা ভুলতে বসেছি। পুরনো সেসব দিনকে স্মৃতিতে নতুন করে স্মরণ করতে ছেলের বিয়েতে ব্যবহার করেছি মহিষের গাড়ি। এসব বাহন খুঁজে পাওয়াও এখন দুষ্কর। তাই প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূর থেকে পঞ্চগড় জেলার বোদা উপজেলার মাড়েয়া এলাকা থেকে ১৫ হাজার টাকার ভাড়া করা হয় পাঁচটি মহিষের গাড়ি।’
বর বিধান চন্দ্র রায় বলেন, ‘আমার বাবার ইচ্ছা পূরণ করতে এমন আয়োজন। তাতে বিয়ের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করা সকলে আনন্দ পেয়েছেন। পাশপাশি ভুলে যাওয়া ওই বাহনে বিয়ের আয়োজন দেখে এলাকার মানুষও আনন্দ পেয়েছেন।’
নববধূ বাসনা রাণী রায় বলেন, ‘যান্ত্রিকতার যুগে পুরনো দিনের আদলে বিয়ের আনুষ্ঠান আমার জীবনে একটি স্মরণীয় অধ্যায় হয়ে থাকবে।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।