জুমবাংলা ডেস্ক : গুমসংক্রান্ত কমিশনে অভিযোগ দায়েরের সময়সীমা বাড়ানো হয়েছে। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামী ১০ অক্টোবর পর্যন্ত গুমসংক্রান্ত কমিশন অব ইনকোয়ারিতে অভিযোগ জানানো যাবে। আগে এই সময়সীমা ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নির্ধারিত ছিল।
মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) গুমসংক্রান্ত কমিশন অব ইনকোয়ারির জনসংযোগ কর্মকর্তা নাছির উদ্দিন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত সময়ের মধ্যে সংঘটিত জোরপূর্বক গুমের ঘটনার ভিকটিম নিজে অথবা পরিবারের কোনো সদস্য বা আত্মীয়-স্বজন বা গুমের ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী বা কোনো ব্যক্তি সশরীরে কমিশনের কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে অথবা ডাকযোগে বা কমিশনের ই-মেইলে অভিযোগ দাখিল করতে পারবেন।
সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত অভিযোগ দাখিল করা যাবে। তবে এই সময়সূচি অনুযায়ী অভিযোগ দাখিলের ক্ষেত্রে হটলাইনের মাধ্যমে অ্যাপোয়েন্টমেন্ট নেওয়ার অনুরোধ করা হয়েছে।
এর আগে গত ২৭ আগস্ট আওয়ামী লীগের শাসনামলে গুম হওয়া ব্যক্তিদের সন্ধানে তদন্ত কমিশন গঠন করে প্রজ্ঞাপন জারি করে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার। এরপর ১৫ সেপ্টেম্বর আওয়ামী লীগের শাসনামলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে গুম হওয়া ব্যক্তিদের সন্ধানে গঠিত এই তদন্ত কমিশনের দায়িত্বে পরিবর্তন আনা হয়। একইসঙ্গে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার সময়ও বাড়ানো হয়।
আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, শৃঙ্খলা বাহিনী, গোয়েন্দা সংস্থা, তদন্তকারী সংস্থা এবং এমন যে কোনো বাহিনী বা সংস্থার কোনো সদস্য বা সরকারের মদদে, সহায়তায় বা সম্মতিতে কোনো ব্যক্তি বা ব্যক্তি-সমষ্টির ‘আয়না ঘর’ বা যেকোনো জ্ঞাত বা অজ্ঞাত স্থানে বলপূর্বক গুম হওয়া ব্যক্তিদের সন্ধান, বলপূর্বক গুমের ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তি সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান চিহ্নিতকরণ ও তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সুপারিশ এবং বলপূর্বক গুম হওয়ার ঘটনা প্রতিরোধের জন্য প্রয়োজনীয় আইন সংস্কারের সুপারিশসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য কার্যাদি সম্পাদনের জন্য এ তদন্ত কমিশন গঠন করা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয় প্রজ্ঞাপনে।
কমিশন অব ইনকোয়ারি অ্যাক্ট ১৯৫৬ অনুসারে তদন্তকার্য সম্পন্ন করে তিন মাসের মধ্যে সরকারের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করবে কমিশন।
এ কমিশনের সভাপতি হাইকোর্ট বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী। এ ছাড়া সদস্য হিসেবে আছেন হাইকোর্ট বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মো. ফরিদ আহমেদ শিবলী, মানবাধিকার কর্মী নূর খান, ব্রাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নাবিলা ইদ্রিস ও মানবাধিকারকর্মী সাজ্জাদ হোসেন।
তদন্ত কমিশন ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি থেকে চলতি বছরের ৫ আগস্ট পর্যন্ত সময়ের মধ্যে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, শৃঙ্খলা বাহিনী, গোয়েন্দা সংস্থা, তদন্তকারী সংস্থা এবং অনুরূপ যেকোনো বাহিনী বা সংস্থার কোনো সদস্য বা সরকারের মদদে, সহায়তায় বা সম্মতিতে কোনো ব্যক্তি বা ব্যক্তি-সমষ্টির আয়না ঘর বা যে কোনো জ্ঞাত বা অজ্ঞাত স্থানে বলপূর্বক গুম হওয়া ব্যক্তিদের সন্ধান, তাদের শনাক্ত করা এবং কোনো পরিস্থিতিতে গুম হয়েছিল তা নির্ধারণ করবে এবং সেই উদ্দেশ্যে গুমের শিকার ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যসহ যে কোনো ব্যক্তি বা সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করবে।
এ ছাড়া বলপূর্বক গুম হওয়া ব্যক্তিদের সন্ধান পাওয়া গেলে তাদের আত্মীয়-স্বজনকে জানাবে কমিশন। গুম হওয়ার ঘটনা সম্পর্কে অন্য কোনো সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানের পরিচালিত তদন্তের তথ্য সংগ্রহ করা করবে তারা। বলপূর্বক গুমের ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তি, সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান চিহ্নিত করা এবং তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সুপারিশও দেবে এ কমিশন।
সেইসঙ্গে বলপূর্বক গুমের ঘটনা প্রতিরোধের জন্য প্রয়োজনীয় আইন সংস্কারের জন্যও সরকারকে সুপারিশ করবে তদন্ত কমিশন।
তদন্তের স্বার্থে কমিশন বাংলাদেশের যে কোনো স্থান পরিদর্শন এবং যে কোনো ব্যক্তিকে তলব ও জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে। এক্ষেত্রে তদন্ত কমিশনকে সাচিবিক সহায়তাসহ সব ধরনের সহায়তা দেবে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।