শুভাশীষ ভট্টাচার্য্য, চট্টগ্রাম: চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে সবুজ গালিচা বিছানো গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকতকে আরও পর্যটকবান্ধব করা হচ্ছে। এখানে দেশি-বিদেশি পর্যটক টানতে দৃষ্টিনন্দন অবকাঠামো নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে জেলা প্রশাসন।
গুলিয়াখালী বীচের রাস্তা প্রশস্তকরণ ও ওয়াকওয়েসহ প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণের জন্য অর্থ বরাদ্দ চেয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে ইতোমধ্যে চিঠি দেয়া হয়েছে।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মো. ফখরুজ্জামান বলেন, ‘গুলিয়াখালী প্রকৃতির অপরূপ নিদর্শন। এটাকে পরিকল্পিতভাবে সাজানো গেলে বিপুল পর্যটকের সমাগম হবে। ইতোমধ্যে নকশা তৈরি করা হয়েছে। বীচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির কিছু ফান্ড আছে। সেগুলো ব্যবহারের সুযোগ আছে। এছাড়া সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে জানানো হয়েছে। আশা করছি ইতিবাচক খবর পাবো। মাস খানেকের মধ্যে কাজ শুরুর ইচ্ছে আছে।’
পূর্বে পাহাড় আর পশ্চিমের বঙ্গোপসাগরের মোহনায় আবৃত সীতাকুণ্ড উপজেলার অপরূপ প্রাকৃতিক সৈতক গুলিয়াখালী। প্রাকৃতিকভাবে এক প্রকার সবুজ ঘাসের চাদর এই সৈকতকে অনন্য করে তুলেছে। একপাশে দিগন্তজোড়া সাগরের জলরাশি ও অন্যপাশে ঘন কেওড়া বন। সাগড়ের ঢেউ এখানে আছড়ে পড়ে সবুজ ঘাসের ওপর। এসব কিছু এই সৈকতকে অনিন্দ্য সুন্দর করে তুলেছে।
গুলিয়াখালী সমুদ্রসৈকত অসংখ্য ছোট খালের মিলনস্থল। এসব খালে ছোট নৌকা দিয়ে ঘুরে বেড়ানো যায়। ভাটার সময় দারুণ লাগে পুরো সৈকত।
চট্টগ্রাম সিটি গেট থেকে গুলিয়াখালী সৈকতের দূরত্ব মাত্র ৩১ কিলোমিটার। আর ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সীতাকুণ্ড সদর থেকে এর দূরত্ব ৬ কিলোমিটার। প্রতিদিনই দলে দলে ভ্রমণপিপাসু মানুষ ভিড় করে সীতাকুণ্ডের এই সৈকতে। চট্টগ্রাম শহর থেকে সকালে রওয়ানা করে সারা দিন নান্দনিক এই সৈকতে থেকে সন্ধ্যায় আবার শহরে ফিরে আসা যায়।
পর্যটকদের কাছে দিন দিন এই সৈকত জনপ্রিয় হয়ে উঠলেও এখানে পর্যটকবান্ধব কোনও অবকাঠামো নেই।
সম্প্রতি গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকত পরিদর্শন শেষে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মো. ফখরুজ্জামান সৈকতে দৃষ্টিনন্দন ওয়াকওয়ে, রিসোর্ট, রেস্টুরেন্ট, শৌচাগারসহ যাবতীয় স্থাপনা নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়ার জন্য স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দেশ দেন।
এরই ধারাবাহিকতায় সীতাকুণ্ড উপজেলা প্রশাসন ইতোমধ্যে সৈকতের উন্নয়নের জন্য নকশা তৈরি করেছেন। এছাড়া সৈকতের নিরাপত্তার জন্য টুরিস্ট পুলিশের ইউনিট চালুসহ আরও কিছু উদ্যোগ নিচ্ছে উপজেলা প্রশাসন।
এ প্রসঙ্গে সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কে. এম. রফিকুল ইসলাম জানান, ‘প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও পরিবেশ ঠিক রেখে সৈকতের ওয়াকওয়ে, রিসোর্টসহ সকল স্থাপনার দৃষ্টিনন্দন নকশা করা হয়েছে। এছাড়া সৈকতের আবর্জনা পরিষ্কার রাখা, অপরিকল্পিত দোকানপাট পরিকল্পিত স্থানে সরিয়ে আনারও পরিকল্পনা রয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘বর্ষাকালে এবং জোয়ারের সময় সৈকত ডুবে গেলে পর্যটকরা বেকায়দায় পড়েন। সব ঋতুতে পর্যটকেরা যেন সৈকতের সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারেন তেমনই একটি নকশা করা হয়েছে। নকশা অনুযায়ী বেড়িবাঁধ থেকে ইংরেজি ওয়াই আকৃতির ১০ফুট ওয়াকওয়ে নির্মাণ করা হবে। এর দুই দিকে রেস্তোরাঁ, রিসোর্টসহ অন্যান্য স্থাপনা নির্মাণ করা হবে।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।