জুমবাংলা ডেস্ক : গৃহকর্মী শিশু জান্নাতিকে বেদরম চড় থাপ্পড় ও পিটিয়ে অজ্ঞান করার পর বাথরুমে আটকে রাখেন গৃহকর্ত্রী রোকসানা। পরে সেখান থেকে জান্নাতীর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।
মোহাম্মদপুরে শিশু গৃহকর্মী জান্নাতী হত্যার ঘটনায় গৃহকর্ত্রী রোকসানা পারভিন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) ঢাকার একটি আদালতে রোকসানা পারভিন জবানবন্দি দেন। মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জি জি বিশ্বাস এই তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, মামলার অপর আসামি রোকসানা পারভিনের স্বামী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সাঈদ আহমেদ পলাতক আছেন।
ওসি বলেন, ‘রোকসানা পারভিন হত্যার কথা স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। তিনি মঙ্গলবার শিশুটিকে মারধর করেছেন। এসময় দেয়ালের সঙ্গে আঘাত পেয়ে শিশুটি অজ্ঞান হয়ে যায়। গৃহকর্ত্রীর মারধরের কারণেই শিশুটির মৃত্যু হয়েছে বলে রোকসানা পারভিন স্বীকার করেছেন।’
বৃহস্পতিবার রাতে জিজ্ঞাসাবাদের পর শুক্রবার সকালে রোকসানা পারভিন আদালতে স্বীকারোক্তি দেওয়ার কথা জানান। এরপর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেওয়ার আবেদন করেন। আদালত শুক্রবার দুপুরের পর তার স্বীকারোক্তি লিপিবদ্ধ করেন।
ওসি আরও বলেন, ‘আসামিকে রিমান্ডে নেওয়ার আগেই তিনি স্বীকারোক্তি দিতে রাজি হন। তার স্বীকারোক্তি দেওয়ার পর আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। এই মামলায় অপর আসামি রোকসানা পারভিনের স্বামী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সাইদ আহমেদ পলাতক রয়েছেন। তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’
শিশুটি ধর্ষণের শিকার হয়েছে কিনা জানতে চাইলে সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের প্রভাষক ও জান্নাতীর ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক এ কে এম মাইনউদ্দীন বলেন, ‘আমাদের কাছে প্রাথমিকভাবে সন্দেহ হওয়ায় ধর্ষণের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার জন্য গৃহকর্মীর ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। শিশুটির শরীরে নতুন-পুরনো অসংখ্য দাগ ছিল। ডিএনএ রিপোর্ট পেলে জানা যাবে, শিশুটি ধর্ষণের শিকার হয়েছিল কিনা। তবে, আমাদের সন্দেহ হওয়ায় আমরা ডিএনএ টেস্টের জন্য পাঠিয়েছি।’
বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) দুপুরে জান্নাতীর বাবা জানু মোল্লা মোহাম্মদপুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, জান্নাতী অসুস্থ এই খবর দিয়ে গত মঙ্গলবার ভোরে তার বাবাকে ঢাকায় ডেকে আনা হয়। তিনি ঢাকায় এসে দেখেন মেয়ে মৃত। সেই সময় তিনি মেয়ের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন দেখতে পান বলে তার দাবি।
জান্নাতীর বাবা রিকশা চালক জানু মোল্লা বলেন, জান্নাতীকে তারা পিটিয়ে হত্যা করেছে। প্রায়ই মেয়েকে মারধর করতো। পরিবারের সঙ্গে জান্নাতীকে যোগাযোগ করতে দেয়া হতো না। মোবাইলে ফোন দিলেও তার সঙ্গে কথা বলতে দিতো না। ওই বাসায় তার মেয়ে চার বছর ধরে কাজ করছে। তাদের গ্রামের বাড়ি বগুড়ার গাবতলী। আসামিদের ফাঁসির দাবী করেন তিনি। আসামিরা প্রভাবশালী হওয়ায় ন্যায় বিচার নিয়েও তার শঙ্কা রয়েছে। সূত্র : আলোকিত বাংলাদেশ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।