জুমবাংলা ডেস্ক : নির্যাতনের অভিযোগে রংপুরে যুগ্ম জেলা জজ ও তার চিকিৎসক স্ত্রীসহ ৪ জনকে আসামি করে রংপুর মেট্রোপলিটন কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা করা হয়েছে। ঘটনার ৮ দিন পর শনিবার রাতে মামলাটি করেন নির্যাতনের শিকার কিশোরী গৃহকর্মীর মা শিরিনা বেগম।
থানা সূত্রে জানা গেছে, মামলায় অভিযুক্তরা হলেন- গৃহকর্তা নওগাঁয় কর্মরত যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ রেজাউল বারী, তার স্ত্রী চিকিৎসক কানিজ কান্তা, শাশুড়ি খালেদা বেগম ও শ্যালিকা শাপলা বেগম।
নির্যাতিত শিশুটি বর্তমানে কোতোয়ালি থানার ভিকটিম সার্পোট সেন্টারে রয়েছে। ২৮ নভেম্বর টাকা চুরির অভিযোগে রংপুর নগরীর আদর্শপাড়ায় কিশোরী গৃহকর্মী আঁখিমনির গোপনাঙ্গে গরম ছ্যাঁকাসহ নানাভাবে নির্যাতন করেন মামলায় অভিযুক্তরা।
রংপুর মেট্রোপলিটন কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রাজিবুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, নীলফামারী জেলার কিশোরগঞ্জ উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়নের মেলাবর গ্রামের মৃত বাছেদ আলী ফকিরের মেয়ে আঁখিমনি। তাকে তার মা শিরিনা বেগম প্রতিবেশী ডালিম চন্দ্র রায়ের মাধ্যমে রংপুর নগরীর আর্দশপাড়ার যুগ্ম দায়রা জজ রেজাউল বারী ও দন্ত চিকিৎসক কানিজ কান্তা দম্পতির বাসায় গৃহকর্মী হিসেবে পাঠান।
গত দুই বছর ধরে আঁখিমনি সেখানে গৃহকর্মীর কাজ করত। গত ২৮ নভেম্বর শনিবার ডালিম চন্দ্র রায় আঁখিমনির মা শিরিনা বেগমকে সঙ্গে নিয়ে ওই বাসায় যান। সেখানে গেলে তারা জানান- তার মেয়ে টাকা চুরি করেছে। তাই তারা তাকে আর বাসায় রাখবে না। এ সময় মেয়েটি বলছিল- সে টাকা চুরি করেনি। তবুও বাড়ির লোকজন তাকে শারীরিক নির্যাতন ও গোপনাঙ্গে গরম ছ্যাঁকা দিয়ে নির্যাতন করেছে।
নির্যাতিতার মা আরও জানান, এ অবস্থায় কান্তা বেগম ও তার স্বামী রেজাউল বারী ৩০০ টাকার একটি সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিয়ে মেয়েকে তার মায়ের হাতে তুলে দেয়। মেয়েকে নিয়ে গ্রামে ফিরে আসেন। এখানে এসে মেয়ের শারীরিক অবস্থা খারাপ হলে গ্রামবাসীকে জানান।
ঘটনার দুই দিন পর সোমবার বিকালে গুরুতর অসুস্থ শিশু আঁখিমনিকে নিয়ে তার মা শিরিনা বেগম রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভর্তি হওয়ার জন্য গেলে তাকে ভর্তি করা হয়নি। বাধ্য হয়ে তিনি মেয়েকে আবার বাড়িতে নিয়ে আসেন।
এরপর জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে ফোন পেয়ে কিশোরগঞ্জ থানা পুলিশ এসে শিশুটিকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখান থেকে পুলিশি প্রহরায় তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
এ ঘটনা জানিয়ে নির্যাতিতা গৃহকর্মী আঁখিমনির মা শিরিনা বেগম কিশোরগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ করলে থানা থেকে নারী পুলিশ কনস্টেবলের সহায়তায় তাদের শুক্রবার রংপুর কোতোয়ালি থানায় পাঠিয়ে দেয়া হয়। কোতোয়ালি থানার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে শনিবার রাতে যুগ্ম দায়রা জজসহ চারজনকে আসামি করে মামলা রেকর্ড করা হয় বলে নিশ্চিত করেন কোতোয়ালি থানার ওসি তদন্ত রাজিবুর রহমান।
তিনি জানান, বিষয়টি এখন তদন্তাধীন রয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।