জুমবাংলা ডেস্ক: চীনা ই–কমার্স জায়ান্ট আলিবাবার প্রতিষ্ঠাতা জ্যাক মা সম্প্রতি ‘গোপনে’ ঢাকা সফর করেছেন। ঢাকা হয়ে বিশেষ ফ্লাইটে নেপাল যান জ্যাক মা। এরপর পাকিস্তানও সফর করেছেন তিনি।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড নেপালের ইমিগ্রেশন দপ্তরের সূত্রের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, ঢাকা হয়ে একটি বিশেষ ফ্লাইটে করে গত ২৭ জুন কাঠমাণ্ডুর ত্রিভূবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন জ্যাক মা।
নেপালি সংবাদমাধ্যম কাঠমাণ্ডু পোস্টের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইমিগ্রেশন বিভাগের মহাপরিচালক ঝালাক্রাম অধিকারী নিশ্চিত করেছেন, গত মঙ্গলবার বেলা আড়াইটায় জ্যাক মাকে বহনকারী বিশেষ ফ্লাইটটি ত্রিভূবন বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার গুলশানে একটি বিলাসবহুল হোটেলের অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর অব সেলস মো. ওয়ালিদ শামীম রবিবার জ্যাক মার সঙ্গে একটি গ্রুপ ছবি তাঁর ফেসবুক অ্যাকাউন্টে পোস্ট করেছেন। ক্যাপশনে তিনি লিখেছেন, ‘ঢাকা সফরে জ্যাক মাকে স্বাগত জানানো ছিল অত্যন্ত সম্মানের ব্যাপার।’ স্পষ্টত ওই হোটেলেই উঠেছিলেন জ্যাক মা।
এদিকে একজন ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তার বরাত দিয়ে কাঠমাণ্ডু পোস্ট বলেছে, খুব কম কর্মকর্তাই জ্যাক মার সফর সম্পর্কে জানতেন।
জ্যাক মা নেপালের প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কমল দাহাল এবং অর্থমন্ত্রী প্রকাশ শরণ মাহাতর সঙ্গে দেখা করার জন্য আগেই অনুরোধ পাঠিয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারীরা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
চীনের ব্যাংক ব্যবস্থা এবং সরকারি নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর সমালোচনা করার পর ২০২০ সালের অক্টোবর থেকে ২০২১ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত ‘নিখোঁজ’ ছিলেন জ্যাক মা। সরকারও তাঁর ব্যাপারে কিছু বলছিল না। পরে অ্যান্ট গ্রুপের দায়িত্ব ছেড়ে দিয়ে শিক্ষকতা পেশায় যোগ দেওয়ার কথা জানান।
নেপালের ব্যবসায়ী নেতাদের একজন সদস্য কাঠমাণ্ডু পোস্টকে বলেন, জ্যাক মার কাঠমান্ডু সফরকে একটি ‘ব্যবসায়িক সফর’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এর বেশি কোনো তথ্য তিনি দিতে পারেননি।
নেপালেও জ্যাক মার সফরসূচি গোপন রাখা হয়েছিল। একজন জ্যেষ্ঠ নিরাপত্তা কর্মকর্তা ওই সময় জানিয়েছিলেন, ‘আমরা শুনেছি যে, বৃহস্পতিবার (২৯ জুন) পাকিস্তানে যাওয়ার আগে তিনি চিতওয়ান সফর করবেন। তবে আমরা এখনো তাঁর দলের কাছ থেকে এ ব্যাপারে নিশ্চিত তথ্য পাইনি।’
পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের তথ্য অনুযায়ী, নেপাল সফর শেষে পাকিস্তানের লাহোরে পৌঁছান জ্যাক মা। তাঁর সঙ্গে ছিল সাত সদস্যের ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দল। তাঁরা ছিলেন চীন, ডেনমার্ক এবং যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ী প্রতিনিধি। প্রতিনিধি দলের দুজন সদস্য ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া ন্যারেটিভকে বলেন, জ্যাক মা চীনের বাইরে ব্যবসা সম্প্রসারণের কথা ভাবছেন।
তবে পাকিস্তানে সরকারের কোনো ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সঙ্গে বৈঠক করেননি জ্যাক মা। সাংবাদিকদের সঙ্গেও কথা বলেননি। পাকিস্তানের বিনিয়োগ বোর্ডের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আজফার আহসান ইন্ডিয়া ন্যারেটিভকে বলেছেন, এটি ছিল একেবারেই ব্যক্তিগত সফর। তবে একাধিক সূত্র বলছে, অর্থনৈতিক সংকটে নিপতিত পাকিস্তানে দাতব্য কার্যক্রম বাড়ানোর পরিকল্পনা করছেন জ্যাক মা।
এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হংকং থেকে একটি চার্টার্ড ফ্লাইটে করে প্রতিনিধি দল নিয়ে ঢাকা হয়ে কাঠমাণ্ডু, এরপর লাহোরে পৌঁছান জ্যাক মা।
পাঁচ বছর আগে জ্যাক মার প্রতিষ্ঠিত আলিবাবা এরই মধ্যে ই–কমার্স কোম্পানি দারাজ অধিগ্রহণ করেছে। দারাজ এখন দক্ষিণ এশিয়ার বাংলাদেশ, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, মিয়ানমার এবং নেপালে কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
ব্লুমবার্গ বিলিয়নিয়ার সূচক অনুসারে, ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত জ্যাক মা চীনের চতুর্থ ধনী ব্যক্তি। তাঁর মোট সম্পদ ৩৪ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার। বিশ্বের ৩৯ তম ধনী ব্যক্তি তিনি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।