জুমবাংলা ডেস্ক : এক বছরের বেশি সময় পর ক্যাম্পাসে এসে গোপনে পেছন দরজা দিয়ে আবার চলে গেলেন রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ড. নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ। দীর্ঘদিন ধরে ভিসিকে ক্যাম্পাসে ফেরানোর দাবিতে আন্দোলনরত ভিসিবিরোধী শিক্ষক-কর্মচারী-কর্মকর্তারা তার আগমনের খবর পেয়ে ক্যাম্পাসে অবস্থান নিয়ে তিন ঘণ্টা ধরে তার বাংলো, ভিসি দপ্তরে খুঁজেও পায়নি।
আন্দোলনকারীদের অবস্থানের কথা জানতে পেরে গোপনে ভিসি ভবনের পেছনের দরজা দিয়ে তিনি চলে যান।
আন্দোলনকারীরা জানান, দীর্ঘ টানা এক বছরেও বেশি ক্যাম্পাসে আসেন না ভিসি নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ। হঠাৎ করে শুক্রবার (১৬ জানুয়ারি) সকাল ৯টার দিকে গোপনে ক্যাম্পাসে তার বাংলোর পেছনের মূল পথ দিয়ে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেন। বিষয়টি জানাজানি হওয়ায় ভিসি বিরোধী শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তার বাংলোর সামনে অবস্থান নেন। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদ্যমান সমস্যা নিয়ে কথা বলার জন্য তারা সাক্ষাত চেয়ে খবর পাঠান। কিন্তু তাদের ডাকে সাড়া দেননি ভিসি কলিমুল্লাহ। দেখা করতে সম্মতি না দেওয়ায় আন্দোলনকারীরা তার বাংলো ঘেরাও করেন।
আন্দোলনকারীরা জানান, সকাল ৯টা থেকেই আমরা অবস্থান গ্রহণ করি। পরবর্তীতে তিনি সাক্ষাতে সম্মতি না দেওয়ায় বেলা ১১টা থেকে তাকে তার বাংলোতে ঘেরাও করে রাখেন আন্দোলনকারীরা। জুমার নামাজের সময় আন্দোলনকারীদের বেশিরভাগ নামাজ আদায়ের জন্য মসজিদে গেলে সুযোগ বুঝে বেলা ২টার কিছু পরে বাংলোর পেছনের ছোট দরজা দিয়ে ভিসি বেরিয়ে যান। ভিসির পালিয়ে যাবার ঘটনা জানার পর আন্দোলনকারীরা আবার বাংলোর সামনে সমবেত হয়ে বিক্ষোভ করেন। পরে তার বাসভবনে গিয়ে তল্লাশি করেন আন্দোলনকারীদের একটি অংশ।
আন্দোলকারীরা জানান, দিনের পর দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে আসেন না। এমনকি রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠান শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস স্বাধীনতা দিবস, রোকেয়া দিবস, একুশে ফেব্রুয়ারিতেও আসেন না। তার দীর্ঘ অনুপস্থিতির কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম ধ্বংস হয়ে গেছে। তার ওপর দুর্নীতি-লুটপাট ও ক্ষমতার অপব্যবহার করেই চলেছেন ভিসি।
বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান বলেন, উনি এমন কি ক্ষমতাধর হয়েছেন যে তার কর্মস্থলে আসবেন না। তারপরেও এই পদে তিনি কীভাবে থাকেন? বিষয়টি সরকারের নীতি নির্ধারকদের দেখা উচিত।
শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি ড. তুহিন ওয়াদুদ বলেন, ভিসি বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেন না। ১৩০০ দিনের মধ্যে ১১০০ দিনই তিনি অনুপস্থিত। আজ হঠাৎ তার আগমনের খবর পেয়ে আমরা তার সঙ্গে দেখা করতে তার বাসভবনে গিয়েছিলাম। তবে কখন যে তিনি চলে গেলেন টের পেলাম না। একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি এভাবে তার কর্মস্থলে না আসলে বিশ্ববিদ্যালয়টা চলে কীভাবে, প্রশ্ন রাখেন তিনি।
অধিকার সুরক্ষা পরিষদের আহবায়ক অধ্যাপক ড. মতিউর রহমান বলেন, আমরা এক সপ্তাহের মধ্যে ভিসির অনিয়ম-দুর্নীতি ও লুটপাটের সব ফিরিস্তি শ্বেতপত্র আকারে প্রকাশ করবো।
এ বিষয়ে জানতে ভিসির সঙ্গে বেশ কয়েকবার যোগাযোগ করা হলেও তার মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।