মনোজ কুমার সাহা, বাসস: গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় সোনালী আংশ পাটের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। এ বছর আবহাওয়া পাট চাষের অনুকূলে ছিল। তাই পাটে কোন পোকা মাকড়ের আক্রমণ হয়নি। পাট চাষের শুরুতে বৃষ্টিপাত তেমন হয়নি। তারপরও কৃষক সেচ দিয়ে পাট চাষ করেন। এরপর পাটের জন্য প্রয়োজনীয় বৃষ্টিপাত হয়েছে। কৃষক সময় মতো পাটের পরিচর্যা করেছেন। তাই এবার টুঙ্গিপাড়ার মাঠে মাঠে পাট ভালো দেখা যাচ্ছে। আগামী ১০ দিন পর থেকে পাট কাটা শুরু হবে। কৃষক আশা করছে এবার পাটের বাম্পার ফলন হবে।
টুঙ্গিপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ জামাল উদ্দিন জানান, এ বছর উপজেলার ১ হাজার ৪৩৫ হেক্টর জমিতে উচ্চ ফলনশীল তোষাপাট-৮/বারি-১, জেআরও মহারাষ্ট্র (বঙ্কিম) জাতের পাটের আবাদ হয়েছে। উৎপাদন লক্ষ্য ধরা হয়েছে ৭৯ হাজার ৭৮৬ মণ পাট। কৃষক ভালোভাবে পাটের পরিচর্যা করেছে। পাটে কোন রোগ বালাই হয়নি। তাই মাঠে মাঠে পাট গাছ বেশ বড় হয়েছে। গাছ বেশ পুষ্ট হয়েছে। এ গাছ থেকে কৃষক অতিরিক্ত আঁশ পাবেন। ধারণা করা হচ্ছে এ বছর পাটের বাম্পার ফলন হবে। হেক্টর অন্তত ৫৫ থেকে ৬০ মণ পাট উৎপাদিত হবে। খরচ বাদে হেক্টর প্রতি কৃষকের অন্তত ১ লাখ টাকা লাভ করতে পারবেন। এছাড়া পাটকাঠি বিক্রি করেও কৃষক বাড়তি টাকা পাবেন। পাটের আগে এ জমি থেকে কৃষক সরিষা তুলেছেন। পাট কেটে কৃষক ওই ক্ষেতে আমন আবাদ করবেন। এরমধ্য দিয়ে আমরা ২ ফসলের জমিকে ৩ ফসলী জমিতে পরিণত করেছি। কৃষকের আয় বাড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করছি।
এ অঞ্চলের সবচেয়ে বড় পাটের মোকাম টেকেরহাটের পাট ব্যবসায়ী সজল সাহা বলেন, বাজারে নতুন পাট আসতে শুরু করেছে, কোরবানীর ঈদের আগে প্রতিমণ নতুন পাট ২ হাজার ৮ শ’ টাকা থেকে ২ হাজার ৯ শ’ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। কোরবানীর ঈদের পর বুধবারের হাটে জুটমিল গুলো পাট কিনতে শুরু করেছে। তাই বুধবারের হাটে প্রতিমণ পাট ৩ হাজার থেকে ৩ হাজার ১০০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। পাট বাজারে আসতে পাটের বাজার চাঙ্গা। তাই কৃষক এ বছর পাটের ভালো দাম পাবেন বলে আশা করা যাচ্ছে।
টুঙ্গিপাড়া উপজেলার পাটগাতী ইউনিয়নের কাকইবুনিয়া গ্রামের কৃষক বিজয় মন্ডল বলেন, আমি ১ একর জমিতে পাটের আবাদ করেছি। পাটের ফলন ভালো হয়েছে। বাজারে প্রতিমণ পাট ৩ হাজার টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে । এছাড়া পটিকাঠি বিক্রি করেও বাড়তি টাকা ঘরে তুলতে পারব। গত কয়েক বছর ধরে পাটের দাম আমরা ভালো পাচ্ছি। ক্ষেত থেকে সরিষা তোলার পাট চাষ করেছি। পাট কাটার পর আমন ধান চাষ করব। সেই সাথে এক জমিতে ৩টি ফসল ফলিয়ে আমাদের আয় বাড়ছে। এভাবে সফল উৎপাদন করতে পারলে আমাদের আয় প্রায় দ্বিগুন হয়ে যাবে। খোর পোষের কৃষিকে আমরা বাণিজ্যিক কৃষিতে রূপান্তরিত করতে পারব।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।