জুমবাংলা ডেস্ক : দরজায় কড়া নাড়ছে পবিত্র ঈদুল আজহা। কোরবানির এই ঈদ ঘিরে গরুর বাড়তি যত্ন নেন খামারিরা। গরু মোটাতাজা করতে দেন বাড়তি খাবার। কিন্তু গো-খাদ্যের দাম বাড়ায় বিপাকে পড়েছেন তারা। খামারিদের সাথে কথা বলে প্রতিবেদন করেছে জাগো নিউজ।
ঢাকার মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধে বাবু এগ্রো খামার। কোরবানির ঈদে বিক্রির জন্য এবার এই খামারে শতাধিক গরু প্রস্তুত করা হয়েছে। কিন্তু গো-খাদ্যের দাম বাড়ার কারণে দিশেহারা খামারি।
বাবু এগ্রোর ব্যবস্থাপক শফিকুল ইসলাম শফিক বলেন, ‘আমাদের কষ্টের কথা কার কাছে বলব? কেউ দেখেও দেখে না। সারা বছর গো-খাদ্যের দাম এমনিতেই বাড়তে থাকে। তার ওপরে কোরবানির ঈদে আরও বেশি বাড়তে থাকে। আমি দীর্ঘদিন গরু পরিচর্যায় আছি। একটা বিষয় খেয়াল করলাম। রোজার ঈদে মানুষের খাবারের দাম বাড়ে, অন্যদিকে কোরবানির ঈদ ঘিরে বাড়ে গরুর খাবারের দাম। এভাবে গো-খাদ্যের দাম বাড়লে ব্যবসা গুটানো ছাড়া উপায় থাকবে না। তাই সরকারকে বলবো গো-খাদ্যের দাম কমান, খামারিদের বাঁচান।’
খামারিরা জানান, বর্তমানে এক বস্তা গমের ভুসি ১ হাজার ৮৫০ টাকা। প্রতি কেজি ছোলার ভুসি ৮০ টাকা ও ভুট্টা ভাঙা ৪৯ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ধানের কুড়া মণপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ৯০০ টাকা। সম্প্রতি ৫০ কেজির প্রতি বস্তা ধানের কুড়ার দাম বেড়েছে ১৫০ টাকা। ৫০ কেজি ভুট্টা ভাঙা ২ হাজার ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
গো-খাদ্যের দাম বাড়ার কারণে বিপাকে ব্যাপারীরাও। কুষ্টিয়ার নাসির ব্যাপারী বলেন, ‘মানুষের খাবারের চেয়ে গরুর খাবারের দাম বাড়তি। কীভাবে গরু পালবো? ছোলার ভুসির কেজি ৮০ টাকা। ভালো মানের চালের দামও ৮০ টাকা না।’
মূল্যবৃদ্ধির কারণ জানতে চাইলে কুষ্টিয়ার মিরপুরের বড় বাজারের আলম ট্রেডার্সের মালিক কাওসার বলেন, ‘গো-খাদ্যের দাম কেন বাড়তি কিছু জানি না। ব্যাপারী ও খামারিরা এমনিতেই এসব অভিযোগ করছে। গো-খাদ্যের দাম তেমন একটা বাড়েনি।’
গো-খাদ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের উদ্যোগ জানতে চাইলে কোনো মন্তব্য করতে চাননি অধিদপ্তরের উপপরিচালক (খামার) মো. শরিফুল হক।
এদিকে, ঈদুল আজহার ঘিরে খামারিরা এখন ব্যস্ত গরু পরিচর্যায়। খামারগুলোতে বেড়েছে ক্রেতাদের আনাগোনা। তবে এখন পছন্দের গরু কিনে খামারেই রেখে যাচ্ছেন ক্রেতারা। ঈদের আগ মুহূর্তে এসব কোরবানির পশু তাদের বাড়ি পৌঁছে যাবে। কারণ ব্যস্ত এই নগরে গরু রাখার মতো স্থান অনেকেরই নেই।
ঢাকার গাবতলী পশুর হাট এখনও জমেনি। এখন হাটের প্রস্তুতি চলছে। বাঁশ ও খুঁটি বসিয়ে গরু রাখার স্থান ঠিক করা হচ্ছে। কয়েকজন ব্যাপারী হাতে গোনা কিছু গরু তুলেছেন।
কসাইয়ের কাছে বিক্রিসহ কোরবানির জন্যও কিছু গরু বিক্রি হচ্ছে। নগরীর আশপাশে যাদের বাড়িতে পর্যাপ্ত জায়গা আছে, তারা গরু কিনে বাড়ি নিয়ে যাচ্ছেন। পাঁচ মণ মাংস মিলবে এমন গরুর দাম হাঁকা হচ্ছে এক লাখ ৮০ হাজার টাকা। চার মণ মাংস মিলবে এমন গরুর দাম এক লাখ ৩০ হাজার ও ৩ মণ মাংস মিলবে এমন গরুর দাম এক লাখ পাঁচ হাজার টাকা হাঁকা হচ্ছে।
পাবনার ঠাণ্ডু ব্যাপারী বলেন, ‘মাংসের দাম হিসাব করে কোরবানির গরু বিক্রি হয় না। তারপরও বলা যায় কোরবানির গরুর মাংস কেজিতে ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা পড়বে। সেই হিসাবে ৩ মণ ওজনের একটা গরু কিনতে এবার এক লাখ দুই হাজার থেকে পাঁচ হাজার টাকা পড়বে। কারণ এবার গরুর খাবারের দাম বাড়তি। এর কম বিক্রি হলে খামারিদের পোষাবে না।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।