নিজস্ব প্রতিবেদক: পাইপলাইনের মাধ্যমে রংপুরসহ উত্তরাঞ্চলের ১১টি জেলায় গ্যাস যাবে-এটি আর স্বপ্ন নয়। খুব শিগগিরই তা বাস্তবায়ন হতে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে বগুড়া-রংপুর-সৈয়দপুর ১৪৭.৫ কিলোমিটার গ্যাস সঞ্চালন পাইপলাইনের মধ্যে ১৪০ কিলোমিটারের নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে।
আজ নিজেই এই সুখবরটি দিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু।
সুখবরটি দিয়ে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে তিনি লিখেছেন, ‘উত্তরাঞ্চলের মানুষের কাছে গ্যাস পৌঁছে দেবার ওয়াদা করেছিলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেটা বাস্তবায়নের দ্বারপ্রান্তে আমরা। বগুড়া-রংপুর-সৈয়দপুর ১৪৭.৫ কিলোমিটার গ্যাস সঞ্চালন পাইপলাইনের মধ্যে ১৪০ কিলোমিটারের নির্মাণ কাজ শেষ। বাকী কাজ দ্রুতই শেষ হবে।’
ফেসবুক পেজে উত্তরাঞ্চলের মানুষের উদ্দেশে তিনি আরও লিখেছেন, ‘বর্তমান সরকারের হাত ধরে উত্তরাঞ্চলে মঙ্গা দূর হয়েছে। এবার শিল্পায়নের পালা। ৩০ ইঞ্চি ব্যাসের উচ্চচাপ সম্পন্ন এই পাইপলাইনের মাধ্যমে গ্যাস পৌঁছে যাবে উত্তরাঞ্চলের ১১টি জেলায়। গ্যাস সংযোগকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠবে শিল্পকারখানা, ইপিজেড, গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, কৃষি পণ্য সরক্ষণের জন্য হিমাগার। বাড়বে কর্মসংস্থান। সমৃদ্ধ হবে উত্তরাঞ্চলের মানুষের জীবনমান তথা বাংলাদেশের অর্থনীতি।’
গ্যাস ট্রান্সমিশন কোম্পানি লিমিটেড সূত্রে জানা যায়, দেশের উত্তর জনপদে প্রাকৃতিক গ্যাস সরবরাহের মাধ্যমে আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত এবং গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র ও শিল্প প্রতিষ্ঠান নির্মাণের সুযোগ সৃষ্টিসহ বাণিজ্যিক ও অন্যান্য গ্রাহকের গ্যাসের চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে এক হাজার পিএসআইজি এর ৩০ ইঞ্চি ব্যাসের দেড়শ কিলোমিটার দীর্ঘ পাইপলাইন এবং আনুষঙ্গিক স্থাপনা নির্মাণের উদ্যোগ নেয় সরকার।
এক হাজার ৩৭৮ কোটি ৫৫ লাখ টাকা ব্যয়ে এ প্রকল্পের বাস্তবায়নের সময় নির্ধারণ করা হয়েছে ২০১৮ সালের অক্টোবর থেকে ২০২৩ সালের জুন মাস পর্যন্ত।
বগুড়া-রংপুর-সৈয়দপুর গ্যাস সঞ্চালন পাইপলাইন নির্মাণ প্রকল্পটি সরকারি ও গ্যাস ট্রান্সমিশন কোম্পানি লিমিটেডের যৌথ অর্থায়নে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
এ প্রকল্পের আওতায় ১৪৭.৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পাইপলাইন নির্মাণের পাশাপাশি ইপিসি ভিত্তিতে সৈয়দুপুরে একশ এমএমএসসিএফডি (মিলিয়ন স্ট্যান্ডার্ড কিউবিক ফিট পার ডে) ক্ষমতা সম্পন্ন একটি সিজিএস (সেন্ট্রাল গ্যাস সাপ্লাই), রংপুরে ৫০ এমএমএসসিএফডি ক্ষমতা সম্পন্ন একটি টিবিএস (টাউন বর্ডার স্টেশন) এবং পীরগঞ্জে ২০ এমএমএসসিএফডি ক্ষমতা সম্পন্ন একটি টিবিএস স্থাপন করা হচ্ছে।
প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে প্রকল্প এলাকায় ১০০ কিলোমিটার গ্যাস বিতরণ পাইপলাইন নেটওয়ার্ক এবং তিনটি ডিস্ট্রিক্ট রেগুলেটিং স্টেশন স্থাপন করে শিল্প ও বিদ্যুৎ কেন্দ্র খাতে ১০২টি সংযোগের ১৬৫ এমএমসিএফডি গ্যাস সরবরাহ করতে পারবে মন্ত্রণালয়।
প্রধানমন্ত্রী ২০১১ সালের ৮ জানুয়ারি রংপুর সফরকালে পর্যাপ্ত গ্যাস পাওয়া গেলে রংপুরে তথা দেশের উত্তর জনপদে গ্যাস লাইন সম্প্রসারণের প্রতিশ্রুতি দেন। সেই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে এই প্রকল্প নেয়া হয়েছে।
বগুড়া-রংপুর-সৈয়দপুর গ্যাস সঞ্চালন পাইপলাইন নির্মাণ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক খন্দকার আরিফুল ইসলাম জানান, করোনার কারণে মালামাল আমদানিতে কিছুটা বিলম্ব হয়েছে। বর্তমানে জোরেসোরে পাইপ লাইন স্থাপনের কাজ চলছে। আশা করছি নির্ধারিত সময়ের আগেই বগুড়া থেকে নীলফামারীর সৈয়দপুরে গ্যাস সরবরাহের কাজ শেষ করতে পারবো।
উত্তরা ইপিজেড এর কারণে নীলফামারী আর্থ-সামাজিক অবস্থার বৈপ্লবিক পরিবর্তন হয়েছে। সরকার গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে দেশের ১০ম ইপিজেড হিসেবে ‘রংপুর ইপিজেড’ এর আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু করেছে। গ্যাস সরবরাহ শুরু হলে এই দুই ইপিজেড এর পাশাপাশি উত্তরাঞ্চলে ব্যাপক শিল্পায়ন হবে। এতে নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগও তৈরি হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।