সাইফুল ইসলাম, মানিকগঞ্জ : মানিকগঞ্জে গ্রামীণ ব্যাংকের যোনাল ম্যানেজারের বিরুদ্ধে কাজের বুয়াকে জোরপূর্বক ধর্ষনের অভিযোগ উঠেছে। গত শনিবার (৪ সেপ্টেম্বর) বেলা ১২ টার দিকে ধর্ষণের শিকার ওই নারী বাদি হয়ে মানিকগঞ্জ সদর থানায় লিখিত অভিযোগ করেন।
জানা গেছে, ধর্ষণের শিকার ওই নারী অভিযোগ দায়ের করার পর গতকাল রবিবার বিকেলে সদর থানা পুলিশ অভিযুক্ত গ্রামীণ ব্যাংকের যোনাল ম্যানেজার নূর মোহাম্মদ ও বিনয় কুমার সাহাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসেন। এরপর রাত ১০ টার দিকে বহু নাটকীয়তার মাধ্যমে বাদীকে থানায় এনে জোরপূর্বক আপোষ-মিমাংসার চাপসৃষ্টি করে মানহানীর মূল্য বাবদ ৮০ হাজার টাকা দিয়ে ঘটনা ধামাচাপা দেয়।
অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, ওই কাজের বুয়া দীর্ঘদিন ধরে গ্রামীণ ব্যাংকের মানিকগঞ্জ যোনাল অফিসে রান্নার কাজ করত। প্রতিদিনের ন্যায় গত (২০ আগস্ট) রান্নার কাজ শেষ করে ম্যানেজার নুর মোহাম্মদের কাপড়-চোপড় ধোয়ার জন্যে বাথরুমে যায়। এসময় অসৎ উদ্দ্যেশ্য নিয়ে নুর মোহাম্মদ কাজের বুয়াকে পান খাওয়ার কথা বলে রশিকতা করে তাকে বলে আপনিতো আজকে পান খান নাই, পান খেলে আপনার ঠোঁট টকটকে সুন্দর লাগে। আমি আপনার জন্য পান কিনে দিব। তখন কাজের বুয়া তার কথায় গুরত্ব না দিয়ে তাকে বলে মামা কাপড়-চোপর কোথায় শুকা দিব? যোনাল ম্যানেজার নুর মোহাম্মদ তাকে কাপড় বারান্দায় শুক্কা দিতে বলে। কাজের বুয়া কাপড় শুকা দিয়ে আসার সময় ম্যানেজার নুর মোহাম্মদ তাকে জোরপূর্বক জড়িয়ে ধরে কোলে করে রুমে নিয়ে খাটের উপর শুয়াইয়া পরনের কাপড় খুলিয়া ফেলে। এসময় ভুক্তভোগী কাজের বুয়া চিল্লাচিল্লি করিলে কাপড়ের আচল দিয়া মুখ আটকাইয়া ফেলে এবং তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর পূর্বক ধর্ষণ করে। পরে বিষয়টাকে ধামাচাপা দেওয়ার জন্য যোনাল ম্যানেজার বুয়াকে ৫ হাজার টাকা দেয়ার চেষ্টা করে। বুয়া কোন টাকা পয়সা না নিয়ে লজ্জায় কাউকে কোন কিছু না বলে বাড়ি চলে আসেন।
পরবর্তীতে বিষয়টাকে ধামাচাপা দেয়ার জন্যে যোনাল অফিসের কর্মরত বিনয় কুমার সাহা ও ঢাকুলী শাখায় কর্মরত সেকেন্ড অফিসার আমজাদ হোসেন গত ২২ আগস্ট বিকেলে কাজের বুয়ার বাড়িতে গিয়ে জোর করে ২০ হাজার টাকা রেখে আসে। এসময় আমজাদ হোসেন কাজের বুয়াকে এ ঘটনা কাউকে না জানাতে এবং মামলা মোকাদ্দমা না করতে হুমকি দিয়ে আসে।
ধর্ষণের শিকার ওই কাজের বুয়া বলেন, যোনাল স্যার নুর মোহাম্মদ শুক্রবার (২০ আগস্ট) ১২ টার সময় আমার সাথে যে ঘটনাটা ঘটাইছে ইয়া মানুষের সামনে বলা যায় না, ইজ্জত যায়। আমি তার কঠিন বিচার চাই।
এ ব্যাপরে গ্রামীণ ব্যাংকের মানিকগঞ্জ যোনাল ম্যানেজার নুর মোহাম্মদ বলেন, আমার বিরুদ্ধে এটা ষড়যন্ত্র। আমার অফিসের কিছু লোক আমার কাছ থেকে অর্থনৈতিক সুবিধা নেয়ার জন্য এ ধরনের মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছে।
এ বিষয়ে মানিকগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আকবর আলী বলেন, ধর্ষণের কোন ঘটনা ঘটেনি। তাদের মধ্যে একটা ভুল বুঝাবুঝি হয়েছিল। সেটা সমাধান হয়ে গেছে।
এ প্রসঙ্গে মানিকগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) ভাস্কর সাহা বলেন, আমরা দুই পক্ষকে থানায় ডেকেছিলাম। তাদের মধ্যে অফিসিয়াল ঝামেলা ছিল। তারা মিলে গেছে। ধর্ষণের অভিযোগটি মিথ্যা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।