লাইফস্টাইল ডেস্ক : কয়েকবছর ধরে গ্রিন টি নিয়ে একটা হুজুগ তৈরি হয়েছে৷ কেউ সকালে ঘুম থেকে উঠেই গ্রিন টিতে চুমুক দিচ্ছেন৷ কেউ আবার অফিসে গিয়ে গ্রিন টি বানিয়ে খাচ্ছেন৷ কেউ-কেউ তো আবার বন্ধুবান্ধবদেরও দেদারসে উপহার দিচ্ছেন গ্রিন টি৷
কিন্তু কী এমন মহৌষধি রয়েছে এই গ্রিন টিতে? জিজ্ঞেস করুন কারোকে, দেখবেন গতে বাঁধা কয়েকটা কথা শুনতে পাবেন৷ যেমন, এতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট রয়েছে, বয়স ধরে রাখতে এর জুড়ি মেলা ভার, ওজন কমাতেও অত্যন্ত কার্যকরী ভূমিকা নেয় গ্রিনটি৷
সবই মেনে নিলাম৷ কিন্তু একটা কথা একবার ভেবে দেখুন তো৷ কত কিছুতেই তো রয়েছে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট৷ তাছাড়া, অনেককিছু খেয়ে না-খেয়েই তো ওজন কমানো যায়৷ এমনকি, পাতিলেবু থেকে শুরু করে মুসম্বি লেবু, সবকিছুই তো বয়স ধরে রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়৷ তাহলে সব ছেড়ে কেন গ্রিনটি৷
আসলে হুজুগ যখন ওঠে, তখন তাকে দমন করা বড়ই মুশকিল হয়৷ কাকে কান নিয়ে গিয়েছে শুনলে যদি আমরা কাকের পিছনে ধাওয়া করি, কান কানের জায়গায় আছে কিনা তা না-দেখেই, তাহলে সেভাবে কিছুই বলার থাকে না৷ কিন্তু একটু হুজুগের বাইরে বেরোলেই জানা যায় ব্যাপারটা আসলে কী৷
প্রথমেই বলি, বিভিন্ন ফলেই কিন্তু প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি অক্সিড্যান্ট থাকে৷ আমরা যা খাবার খাই, তারমধ্যে বেশকিছু অন্তত অ্যান্টি অক্সিডেন্টে ভরপুর৷ কিন্তু তা সত্ত্বেও আলাদা করে গ্রিন টির কোনও প্রয়োজন আছে কি৷ আর তাছাড়া, পাতিলেবু থেকে শুরু মুসম্বি লেবু, যেকোনও একটা নিয়মিত খেলেই আপনি প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি পাবেন৷ যা বয়সও ধরে রাখতে সাহায্য করবে, আবার শরীরে মেদও ঝরাবে দ্রুত৷
অবশ্য আপনার যদি ইচ্ছে করে, তাহলে আপনি গ্রিনটি খেতেই পারেন৷ কেউ বাধা দিচ্ছে না৷ কিন্তু তার জন্য অহেতুক এর গুণগান গাওয়ার বোধহয় প্রয়োজন নেই৷ বরং, বলে রাখা ভাল, দিনে এক-দুকাপের বেশি গ্রিন-টি খেলে আপনার অপকার বই কোনও উপকার হবে না৷ এমনকি, তা-ও নির্দিষ্ট সময় মেনে৷ বলি তাহলে৷
মাত্রাতিরিক্তি গ্রিন-টি খেলে শরীরে টক্সিসিটি লেভেল বেড়ে যায় বলে দাবি করেন অনেক গবেষক৷ শুধু তাই-ই নয়, এতে করে লিভারও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে৷
অনেকেই সকালে ঘুম থেকে উঠে খালিপেটে গ্রিন-টি খান৷ কিন্তু তা একেবারেই উচিত নয়৷ এতে করে পাকস্থলীর ক্ষতি হতে পারে৷ তাই গ্রিন-টি খেলে ভরা পেটেই খাওয়া উচিত৷
দুপুরের খাওয়ার পর বা লাঞ্চের পর কখনই গ্রিন-টি খাওয়া ঠিক নয়৷ কারণ হিসেবে বলা হয়, তাহলে খাবারের মধ্যে যেসব পুষ্টিগুণ রয়েছে, তা ঠিকমতো শোষিত হতে পারে না শরীরে৷ আরও একটা কারণ আছে৷ খাওয়ার পর গ্রিন-টি কেন, এমনি চা খেলেও খাবার ঠিকমতো হজম হয় না৷ কারণ, ওই সময়ে হজম করানোর জন্য পাকস্থলীতে যে ধরনের এনজাইম বা অ্যাসিড ক্ষরণ হয়, চা বা জল খেলে তা ঠিকমতো কাজ করতে পারে না৷ ফলে হজমের বারোটা বাজে৷
অনেকে আবার মনে করেন, রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে গ্রিন-টি খাওয়া খুব ভাল৷ কিন্তু এখনও পর্যন্ত এর স্বপক্ষে কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি৷ বরং এটুকু জানা গিয়েছে, রাতে ঘুমোনোর আগে গ্রিন-টি খেলে স্ট্রেস লেবেল বেড়ে গিয়ে ঘুমের বারোটা বাজতে পারে৷
অতএব একটাই কথা৷ ভেবেচিন্তে গ্রিন-টি খান৷ আর তা ভরাপেটে, দিনে এক থেকে বড়জোর দু-বার৷
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।