দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যেভাবে সমৃদ্ধি অর্জন করেছে তা অনেক দেশের কাছেই ঈর্ষণীয় ছিল। কিন্তু তার আগে গ্রেট ডিপ্রেশনের সময়ে মানুষ ভয়াবহ বাজে পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে গিয়েছে। নিউ ইয়র্ক স্টক এক্সচেঞ্জ ভেঙে পড়ে, মানুষের বেকারত্ব বৃদ্ধি পেতে থাকে ও শিল্প কারখানা বন্ধ হয়ে যায়।
বড় শহরের অসংখ্য মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়ে। ব্যাংকের ছাতার মতো বস্তি গড়ে উঠতে থাকে। গোটা দুনিয়াতে গ্রেট ডিপ্রেশনের বিরূপ প্রভাব দেখা যায়। আধুনিক পৃথিবী এর আগে কখনো ভয়াবহ অর্থনৈতিক মন্দ দেখেনি। এজন্য ইতিহাসে এটাকে বলা হয় দ্য গ্রেট ডিপ্রেশন।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপের অবস্থা অনেক খারাপ ছিল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র খাদ্য, অস্ত্র সহ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র রপ্তানি করতে থাকে ইউরোপে। তখন ইউরোপের বাজারকে টার্গেট করে আমেরিকা নিজেদের উৎপাদন বাড়িয়ে দেয়।
এর ফলে শিল্প-কারখানা গড়ে ওঠে এবং মানুষের কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পায়। ওই সময় আমেরিকা খুব দ্রুত স্বচ্ছল রাষ্ট্র হয়ে ওঠে। ১৯২০ থেকে ১৯২৯ সালের মধ্যে শেয়ার বাজারের অবস্থা দুর্দান্ত ছিলো। ব্যাংক সহজ শর্তে মানুষকে ঋণ দিচ্ছিলো।
যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর ইউরোপের সকলের রাষ্ট্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উপর নির্ভরশীল না হয়ে নিজেদের সমৃদ্ধ করার চেষ্টা করছিল। এর ফলে ইউরোপে আমেরিকার কৃষিপণ্য রপ্তানি অনেকটাই কমে যায়।
এ বিষয়টির নেতিবাচক প্রভাব পড়েছিল শেয়ার বাজারের উপর। শেয়ার বাজারের হঠাৎ বড় দরপতন দেখে ব্যাংক এবং সাধারণ জনগণ সবাই বিস্মিত হয়ে গিয়েছিল। এর ফলে অর্থনৈতিক অবস্থা বাজে হতে শুরু করে। মানুষ কর্মসংস্থান হারাতে শুরু করে।
একে একে শিল্প-কারখানা বন্ধ হয়ে যেতে শুরু করে। সকল প্রতিষ্ঠান কর্মী ছটাই শুরু করে। অনেক ব্যাংক দেউলিয়া হয়ে যায়। বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগ করা বন্ধ করে দেয়। কৃষকদের ফসল নষ্ট হয়ে যায়। শপিংমলে পণ্য কেনার মত মানুষ খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না।
অনেক মানুষ অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতা থেকে গরিব হতে শুরু করে। অথচ কয়েকদিন আগেও বেকার মানুষ খুঁজে পাওয়া ছিল অনেক কষ্টসাধ্য বিষয়। অথচ এক বছরের মাথায় দেড় কোটি মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়ে। আত্মহত্যা, খুন, ছিনতাই, ডাকাতি বৃদ্ধি পেতে থাকে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।