জুমবাংলা ডেস্ক : গাইবান্ধায় সাঘাটা এলাকায় অভিযান চালিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন সুইটসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এর কয়েক ঘণ্টা পরই অসুস্থ অবস্থায় তাদেরকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এদের মধ্যে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। মারা যাওয়া ব্যক্তিরা হলেন, শফিকুল ইসলাম (৪৫) ও সোহরাব হোসেন আপেল (৩৫)।
এর আগে, মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) ভোর রাতের দিকে সাঘাটা ইউনিয়নের গোবিন্দী এলাকা থেকে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়। পরে মঙ্গলবার সকালে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শফিকুল ইসলাম এবং গাইবান্ধা আধুনিক সদর হাসপাতালে সোহরাব হোসেন আপেল মারা যান। সোহরাব সাঘাটা ইউনিয়নের রোস্তম আলীর ছেলে এবং শফিকুল একই ইউনিয়নের মালেক উদ্দিনের ছেলে।
নিহত সোহরাব হোসেনের স্বজনদের অভিযোগ, গ্রেফতারের পর তাকে মারধরসহ শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হয়। এ কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে।
এছাড়া, গ্রেফতার হওয়া অপর তিনজন বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। সাঘাটা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান সুইটসহ বাকিরা হলেন, শাহাদত হোসেন পলাশ ও রিয়াজুল ইসলাম রকি।
এদিকে, মঙ্গলবার বিকেলে চিকিৎসাধীন চেয়ারম্যান সুইট ও পলাশকে দেখতে যান গাইবান্ধা আধুনিক সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. মাহাবুব হোসেন। তিনি বলেন, অসুস্থ অবস্থায় সকালে তিনজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোহরাব নামে একজনের মৃত্যু হয়েছে। নিহত ও আহতদের শরীরের একাধিক জায়গায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
গাইবান্ধা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. আসিফুর রহমান বলেন, মৃত্যুটি অপ্রত্যাশিত ছিল। নিহতের পায়ে আঘাতের চিহ্ন ছিল। ব্যক্তিগতভাবে এটি আমার কাছে অপ্রত্যাশিত মনে হয়েছে। হয়তো নিহতের অভ্যন্তরীণ কোনও সমস্যা ছিল। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে মৃত্যুর আসল কারণ জানা যাবে বলেও জানান এই চিকিৎসক।
মঙ্গলবার বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করে গাইবান্ধার পুলিশ সুপার মো. মোশারফ হোসেন বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানে সাঘাটা উপজেলা থেকে ইউপি চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন সুইটসহ ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পরেই অসুস্থ হওয়ায় তাদের মধ্যে দুইজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শফিকুল ও আপেল নামে দুইজনের মৃত্যু হয়। গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলেও জানান তিনি।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহত শাহাদত হোসেনের দাবি, বাজার থেকে তাকে আটক করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এরপর চেয়ারম্যান সুইটের বাড়িতে তাকে নিয়ে যাওয়ার হয়। পরে তাকে মারধর করে আহত করা হয়।
প্রসঙ্গত, চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন সুইট দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় বিভিন্ন ধরনের অপকর্মে লিপ্ত ছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তার বিরুদ্ধে যমুনা নদীর চর দখল ও অবৈধভাবে বালু ব্যবসা করারও অভিযোগ রয়েছে।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর চেয়ারম্যান সুইট ও তার ভাইদের সিন্ডিকেট চক্রকে গ্রেফতার করে শাস্তির দাবিতে কয়েক দফায় বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেন এলাকাবাসী।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।