ঘণ্টাপ্রতি ফিতে পার্কিং ব্যবস্থা চায় ঢাকা উত্তর সিটি
জুমবাংলা ডেস্ক : সড়কে যত্রতত্র পার্কিং ঠেকাতে সড়কের মধ্যে নির্দিষ্ট স্থানে ঘণ্টাপ্রতি ফি নির্ধারণ করে অ্যাপভিত্তিক পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করতে চায় উত্তর সিটি করপোরেশন। পাইলট প্রকল্প হিসেবে গুলশানের কয়েকটি সড়কে এটি শুরু করার জন্য স্থানও নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন না পাওয়ায় এটি আটকে গেছে। মন্ত্রণালয় ফি নির্ধারণ নিয়ে আপত্তি জানিয়ে তা সুনির্দিষ্টভাবে জানানোর জন্য কয়েক দফা চিঠি দিয়েছে। সিটি করপোরেশন তার উত্তর দিলেও এখনো উদ্যোগটি অনুমোদন পায়নি।
সিটি করপোরেশন বলছে, শহরে ব্যক্তিগত গাড়ির সংখ্যা বেড়েই চলছে, কিন্তু পার্কিংয়ের ব্যবস্থা সীমিত থাকায় যত্রতত্র পার্কিংয়ের কারণে যানজট বাড়ছে। তাই পার্কিংব্যবস্থা একটি কাঠামোতে আনা ও যত্রতত্র পার্কিংয়ে নিরুত্সাহিত করতে এ ফি নির্ধারণের প্রস্তাব করা হয়েছে।
ঢাকা উত্তর সিটি সূত্রে জানা গেছে, গুলশানের ৯টি সড়কে ২০২টি গাড়ি পার্কিং স্পটের ব্যবস্থা করতে চায় সিটি করপোরেশন। এসব সড়কের মধ্যে রয়েছে গুলশানের ৪৬, ৫২, ৫৮, ৬২, ৬৩, ৬৪ ও ১০৩ নম্বর সড়কের পাশাপাশি গুলশান-২ ও কাঁচাবাজার এলাকার অভ্যন্তরীণ ও বাইরের বৃত্তাকার সড়ক। পাইলট প্রকল্প হিসেবে ‘স্মার্ট পার্কিং’ পরিষেবাটি পর্যায়ক্রমে এ এলাকায় শুরু হলেও পরে অন্যান্য এলাকায় সম্প্রসারিত করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। ব্যবহারকারীরা পার্কিং স্পেস অ্যাপের মাধ্যমে বুকিং করতে পারবেন। প্রথম দুই ঘণ্টার জন্য অ্যাপটি ৫০ টাকা চার্জ করবে। তৃতীয় ঘণ্টার জন্য ফি ৫০ টাকা। তার পরে ব্যবহারকারীদের পরবর্তী প্রতি ঘণ্টার জন্য ১০০ টাকা চার্জ করা হবে। এছাড়া মোটরসাইকেলের জন্য দুটি স্পট থাকবে এবং মোটরসাইকেলের পার্কিং ফি প্রথম দুই ঘণ্টার জন্য ১৫ টাকা, তৃতীয় ঘণ্টার জন্য ১৫ টাকা এবং তৃতীয় ঘণ্টার পরে প্রতি ঘণ্টার জন্য ৩০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
ঢাকা উত্তর সিটি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা ইতিমধ্যে বিভিন্ন স্থানে পার্কিং স্পট নির্দেশ করে সাইনবোর্ড লাগিয়েছে। পার্কিং স্পেস সিসিটিভি ক্যামেরার মাধ্যমে নজরদারি করা হবে এবং একটি কন্ট্রোল রুম থেকে পর্যবেক্ষণ করা হবে। প্রতিটি পার্কিং জোনে একজন ওয়ার্ডেন থাকবেন। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ তাদের সহায়তা করবে। এ উদ্যোগটি চালু করতে গত বছরের ২০ ডিসেম্বর স্মার্ট পার্কিং রেট অনুমোদনের জন্য এলজিআরডি মন্ত্রণালয়ে আবেদন করে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন। পরবর্তীতে, ১২ জানুয়ারি, মন্ত্রণালয় সিটি করপোরেশনকে রাস্তার পার্কিংনীতির তথ্য সরবরাহ করতে এবং একটি সংশোধিত রেট চার্ট জমা দেওয়ার অনুরোধ করে। উত্তরে, উত্তর সিটি অনুরোধ করা তথ্যসহ ২৬ জানুয়ারি একটি চিঠি পাঠায়। ২ এপ্রিল মন্ত্রণালয় এক চিঠিতে সিটি করপোরেশনকে জানায় যে, তারা প্রস্তাবের বিষয়ে এখনো অসন্তুষ্ট। তারা আরও বিস্তারিত তথ্য চায়। বিশেষ করে ভিআইপিসহ বিভিন্ন শ্রেণির লোকদের ব্যবহৃত গাড়ির পার্কিংব্যবস্থার স্পেসিফিকেশনের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট পার্কিং ফি সম্পর্কে স্পষ্টীকরণের অনুরোধ করা হয়েছে। এছাড়া চতুর্থ ঘণ্টার পরে ফি নিয়েও তারা আরও জানতে চায়।
এ বিষয়ে ঢাকা উত্তর সিটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা ইত্তেফাককে বলেন, খুব শিগগিরই মন্ত্রণালয়ে আরেকটি চিঠি পাঠানো হবে এবং আশা করা হচ্ছে খুব অল্প সময়ের মধ্যে পার্কিং রেট চার্টের অনুমোদন মিলবে। মন্ত্রণালয় মূলত স্বাভাবিক কিছু বিষয়ে জানতে চেয়েছে ফি-সংক্রান্ত রেট চার্টের ব্যাপারে। এছাড়া বিষয়টি বোর্ড সভায় অনুমোদন নেওয়া হয়েছে কি না তা জানতে চাওয়া হয়েছে।
শহরের বাসিন্দাদের ব্যক্তিগত যানবাহন ব্যবহারে নিরুত্সাহিত করতে চতুর্থ ঘণ্টার পরে স্মার্ট পার্কিংয়ের জন্য ফি বাড়ানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে বলেও জানান তিনি। এ বিষয়ে জানার জন্য এলজিআরডি মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের নগর উন্নয়ন বিভাগের (সিটি করপোরেশন-১) উপসচিব মোহাম্মদ শামসুল ইসলামের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে সাড়া মেলেনি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।