জুমবাংলা ডেস্ক : বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদকে মারধর করে হল ছাড়া করার পরিকল্পনা ছিল হ’ত্যাকারীদের। এ নিয়ে ফেসবুকের ম্যাসেঞ্জার গ্রুপ খুলে নানা কথোপকথন করেছে তারা। আবরার হ’ত্যাকাণ্ডে গ্রেপ্তার হওয়া বুয়েট শাখার ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ফেসবুক মেসেঞ্জারে গোপন কথোপকথনে থেকে এমনটাই জানতে পেরেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
আবরার ফাহাদকে হ’ত্যার আগে ও পরে আসামিদের ফেসবুক মেসেঞ্জারে কী কথোপকথন হয়েছিল তা নিম্নরূপ—
বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান ওরফে রবীন (গ্রেপ্তার হয়ে রিমান্ডে আছে) গত শনিবার দুপুর ১২টা ৪৭ মিনিটে এই গ্রুপে লেখে, ‘১৭-র আবরার ফাহাদ। মেরে হল থেকে বের করে দিবি দ্রুত। এর আগেও বলেছিলাম। তোদের তো দেখি কোনো বিকার নেই। শিবির চেক দিতে বলেছিলাম।’
মনিরুজ্জামান (এই মামলায় গ্রেপ্তার): ‘ওকে ভাই।’
মেহেদী: ‘দুই দিন টাইম দিলাম।’
মনিরুজ্জামান: ‘ওকে ভাই।’
মেহেদী: ‘দরকারে (দরকার হলে) ১৬ ব্যাচের মিজানের (এই মামলায় গ্রেপ্তার ও আবরারের রুমমেট) সাথে কথা বলিস। ও আরও কিছু ইনফরমেশন দেবে শিবির ইনভলভমেন্টের বিষয়ে।’
এর পরের দিন রোববার রাত ৭টা ৫২ মিনিটে মনিরুজ্জামান মনির মেসেঞ্জারের ওই গ্রুপে লেখে, ‘নিচে নাম সবাই।’
এর পর শাহীন (পুরো পরিচয় জানা যায়নি) লেখে, ‘ওকে ভাই।’
শওকত (পুরো পরিচয় জানা যায়নি) লেখে, ‘ওকে ভাই।’
মেসেঞ্জারে আবু নওশাদ সাকিব (পুরো পরিচয় জানা যায়নি) নামের বুয়েট ছাত্র লেখে, ‘আবরার ফাহাদ কী হলে আছে?’
জবাবে শামসুল (এই মামলায় গ্রেপ্তার) লেখে, ‘হ ভাই। ২০১১ তে’। তখন আবু নওশাদ লেখে, ‘২০১১ তে আছে।’
মেসেঞ্জার গ্রুপে রাত ১টা ২৬ মিনিটে একজন (নাম পড়া যায়নি) লেখে, ‘আবরার ফাহাদকে ধরছিলি তোরা?’
জবাবে ইফতি মোশাররফ (আবরারকে হ’ত্যা মামলায় আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়েছে) ফেসবুক মেসেঞ্জারে লেখে, ‘হ।’
এর পর একজন (নাম পড়া যায়নি) লেখে, ‘বের করসস।’
জবাবে মোশাররফ লেখে, ‘কী? হল থেকে নাকি স্বীকারোক্তি?’
একজন (নাম পড়া যায়নি) লেখে, ‘স্বীকার করলে তো বের করে দেওয়া উচিত।’
জবাবে ইফতি মোশাররফ লেখে, আবরার ফাহাদ মরে যাচ্ছে।
ইফতি লেখে, ‘মরে যাচ্ছে। মাইর বেশি হয়ে গেছে।’
উল্লেখ্য, আবরার ফাহাদ ছিলেন তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের (১৭তম ব্যাচ) ছাত্র। তিনি থাকতেন বুয়েটের শেরেবাংলা হলের নিচতলার ১০১১ নম্বর কক্ষে।
গত রোববার রাতে তাকে ২০১১ কক্ষে ডেকে নিয়ে কয়েক ঘণ্টা ধরে দফায় দফায় মারধর করা হয়। এর পর মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে রাত ২টার দিকে প্রথম ও দ্বিতীয় তলার মাঝের সিঁড়িতে রেখে দেয় উল্লিখিত হ’ত্যাকারীরা। সেখানেই তার মৃ’ত্যু হয় বলে জানিয়েছেন সহপাঠীরা। আবরার হ’ত্যার ঘটনায় যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাদের অনেকেই স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।