জুমবাংলা ডেস্ক: চট্টগ্রামে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় ১১ রোগীর মৃত্যু হয়েছে। এ সময়ে নতুন ৯৪৫ জনের নমুনায় ভাইরাস শনাক্ত হয়। সংক্রমণ হার ৩৩ দশমিক ০২ শতাংশ। এদিন জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৭০ হাজার অতিক্রম করে।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের রিপোর্টে বলা হয়, এন্টিজেন টেস্ট, কক্সবাজার মেডিক্যাল কলেজসহ মোট বারোটি ল্যাবে গতকাল শনিবার চট্টগ্রামের ২ হাজার ৮৬২ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। নতুন ৯৪৫ জন আক্রান্তের মধ্যে শহরের বাসিন্দা ৬৩৯ জন ও চৌদ্দ উপজেলার ৩০৬ জন।
উপজেলায় আক্রান্তদের মধ্যে সর্বোচ্চ পটিয়ায় ৪৫ জন, রাউজানে ৪২ জন, বোয়ালখালীতে ৪০ জন, হাটহাজারীতে ২৮ জন, ফটিকছড়িতে ২৭ জন, চন্দনাইশে ২৬ জন, বাঁশখালী ও রাঙ্গুনিয়ায় ১৮ জন করে, সীতাকু-ে ১৭ জন, মিরসরাই ও সন্দ্বীপে ১৩ জন করে, লোহাগাড়া ও সাতাকানিয়ায় ৮ জন করে এবং আনোয়ারায় ৩ জন রয়েছেন। জেলায় করোনাভাইরাসে মোট সংক্রমিত ব্যক্তির সংখ্যা এখন ৭০ হাজার ৯০২ জন।
সংক্রমিতদের মধ্যে ৫৩ হাজার ৯৬১ জন শহরের ও ১৬ হাজার ৯৪১ জন গ্রামের বাসিন্দা।
গতকাল করোনায় শহরের ২ জন ও গ্রামের ৯ জন মারা যান। ফলে জেলায় মোট মৃতের সংখ্যা এখন ৮৩৫ জন। এতে শহরের বাসিন্দা ৫১৭ জন ও গ্রামের ৩১৮ জন। সুস্থতার ছাড়পত্র পেয়েছেন নতুন ২৪৪ জন। এতে মোট আরোগ্য লাভকারীর সংখ্যা ৫২ হাজার ৩৫৫ জনে উন্নীত হয়েছে। এর মধ্যে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন ৭ হাজার ২২৫ জন ও ঘরে থেকে চিকিৎসায় সুস্থ হন ৪৫ হাজার ১৩০ জন। হোম কোয়ারেন্টাইন ও আইসোলেশনে নতুন যুক্ত হন ২১৮ জন, ছাড়পত্র নেন ১৭৯ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন ১ হাজার ৮৪৮ জন।
উল্লেখ্য, গতকাল ১১ জনের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে চলতি মাসের প্রথম সতেরো দিনে চট্টগ্রামে ১২৮ করোনা রোগীর মৃত্যু হয়। এটি চট্টগ্রামে একদিনের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মৃত্যু। দেশে করোনার প্রকোপ শুরুর পর চট্টগ্রামে একদিনে সর্বোচ্চ ১৪ জন মারা যান গত ১০ জুলাই। এর আগ পর্যন্ত ২৪ এপ্রিল ১১ জনের মৃত্যুই ছিল সবচেয়ে বেশি। গেল এপ্রিল, মে ও জুন মাসের প্রথম ১৭ দিনে যথাক্রমে ৭০, ৬৩ ও ৩২ করোনা রোগীর মৃত্যু হয়েছিল।
এ মাসে সর্বনিম্ন আক্রান্ত শনাক্ত হয় ২ জুলাই, ২৬২ জন। সংক্রমণ হার ছিল ২৫ শতাংশ এবং একজনের মৃত্যু হয়।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্টে দেখা যায়, গতকাল এন্টিজেন টেস্টে সবচেয়ে বেশি ৮৪৮ জনের করোনা পরীক্ষা হয়েছে। এতে শহরের ৯৮ ও গ্রামের ১৬১ জনকে আক্রান্ত বলে জানানো হয়। ফৌজদারহাটস্থ বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল এন্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস (বিআইটিআইডি) ল্যাবে ৭১৮ জনের নমুনার মধ্যে শহরের ১২৭ ও গ্রামের ৩৩ জনের রিপোর্ট পজিটিভ আসে। চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি এন্ড এনিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় (সিভাসু) ল্যাবে ২৯৮ টি নমুনায় শহরের ৪৩ ও গ্রামের ৪৬ টিতে ভাইরাস পাওয়া যায়। চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) ল্যাবে ১৭০ জনের নমুনা পরীক্ষায় শহরের ৪৯ ও গ্রামের ৭ জন জীবাণুবাহক শনাক্ত হয়।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ল্যাবে ১৫৭ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হলে শহরের ৪৭ জন ও গ্রামের ৩৫ জন জীবাণুবাহক বলে চিহ্নিত হন। নগরীর বিশেষায়িত কোভিড চিকিৎসা কেন্দ্র আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতালের আরটিআরএল-এ ৪১ টি নমুনার মধ্যে গ্রামের ৪ টিসহ ২২ টির রেজাল্ট পজিটিভ আসে।
নগরীর বেসরকারি ক্লিনিক্যাল ল্যাবরেটরির মধ্যে শেভরনে ২৪১ টি নমুনা পরীক্ষায় গ্রামের ৭ টিসহ ৭৩ টি, ইম্পেরিয়াল হাসপাতালে ১৮২ টি নমুনার মধ্যে গ্রামের একটিসহ ৮২ টি, মা ও শিশু হাসপাতাল ল্যাবে ৫২ টি নমুনায় গ্রামের ৭ টিসহ ৩৫ টি, মেডিকেল সেন্টারে ১২ টি নমুনা পরীক্ষা করা হলে শহরের ৭ টি এবং এপিক হেলথ কেয়ারে ১৩৫ টি নমুনার মধ্যে গ্রামের ৪ টিসহ ৭৯ টিতে ভাইরাসের অস্তিত্ব মিলে।
এদিন চট্টগ্রামের ৮ জনের নমুনা কক্সবাজার মেডিক্যাল কলেজ ল্যাবে পাঠানো হয়। পরীক্ষায় একজনের পজিটিভ ও অবশিষ্টগুলোর ফলাফল নেগেটিভ আসে।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্ট বিশ্লেষণে সংক্রমণ হার পাওয়া যায়, এন্টিজেন টেস্টে ৩০ দশমিক ৫৪ শতাংশ, বিআইটিআইডি’তে ২২ দশমিক ২৮, সিভাসু’তে ২৯ দশমিক ৮৬, চমেকে ৩২ দশমিক ৯৪ শতাংশ, চবিতে ৫২ দশমিক ২৩, আরটিআরএলে ৫৩ দশমিক ৬৬, শেভরনে ৩০ দশমিক ২৯, ইম্পেরিয়ালে ৪৫ দশমিক ০৫, মা ও শিশু হাসপাতালে ৬৭ দশমিক ৩১, মেডিকেল সেন্টারে ৫৮ দশমিক ৩৩, এপিক হেলথ কেয়ারে ৫৮ দশমিক ৫২ এবং কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ল্যাবে ১২ দশমিক ৫০ শতাংশ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।