সাম্প্রতিক অগ্নিকাণ্ডের প্রেক্ষিতে দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোতে নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশনা পাওয়ার পর চট্টগ্রাম বন্দরে শুরু হয়েছে সর্বোচ্চ সতর্কতা।
শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পর সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে নির্দেশনা আসে সব গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় নিরাপত্তা বাড়ানোর। সেই নির্দেশনা অনুযায়ী চট্টগ্রাম বন্দর ও কাস্টম হাউজে নেওয়া হয়েছে কড়াকড়ি নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
গত বৃহস্পতিবার বন্দরের নিরাপত্তা পরিস্থিতি সরেজমিনে পরিদর্শন করেছে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের ১৮ সদস্যের বিশেষ নিরাপত্তা টিম। বাংলাদেশ ন্যাশনাল অথরিটি ফর কেমিক্যাল উইপন কনভেনশন (বিএনএসিডব্লিউসি)-এর সমন্বয়ে গঠিত এই দলে সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, ফায়ার সার্ভিস ও বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তারা অংশ নেন।
পরিদর্শন শেষে দলটি বন্দর কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে নিরাপত্তা ব্যবস্থার সার্বিক দিক নিয়ে আলোচনা করে।
বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়সংক্রান্ত বিশেষ দূত ড. লুৎফে সিদ্দিকীর নেতৃত্বে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান, বিভাগীয় প্রধান ও কাস্টমস কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় বন্দরের স্পর্শকাতর স্থানে নজরদারি বৃদ্ধি, সন্দেহভাজন চলাচলকারীদের তল্লাশি জোরদার, প্রবেশগেটে নিরাপত্তা স্ক্যানিং আরও কঠোর করা, এবং নিরাপত্তা বাহিনীগুলোর মধ্যে সমন্বয় জোরদার করার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়।
নিরাপত্তা টিম জানায়, কোনো ধরনের নাশকতা, অগ্নিসংযোগ বা অন্তর্ঘাতমূলক কর্মকাণ্ড ঠেকাতে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি অনুসরণ করতে হবে। এজন্য বন্দর এলাকায় ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে মোবাইল কোর্টের সংখ্যা বাড়ানোর নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের পরিচালক (ট্রাফিক) এনামুল করিম বলেন,“বন্দরের নিরাপত্তায় জিরো টলারেন্স নীতি বাস্তবায়নে সব সংস্থা সমন্বিতভাবে কাজ করছে।”
বর্তমানে বন্দরের নিয়মিত নিরাপত্তা কার্যক্রমে সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, পুলিশ, আনসার ও বন্দর নিরাপত্তা কর্মীরা নিয়োজিত আছেন। বিশেষ করে বন্দরের সবচেয়ে বড় টার্মিনাল নিউ মুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) নৌবাহিনী কর্তৃক পরিচালিত হওয়ায় বন্দরের অভ্যন্তরে নৌবাহিনীর উপস্থিতি ও টহল কার্যক্রম আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়া চট্টগ্রাম বন্দর সংলগ্ন এলাকায় নৌবাহিনীর স্থাপনাগুলোর নিরাপত্তা বলয়কে আরো শক্তিশালী করা হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, বন্দর ও কাস্টম হাউজ দুটি কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা হিসেবে সরকারের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার তালিকায় রয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, চট্টগ্রাম বন্দর দেশের আমদানি-রপ্তানির ৯০ শতাংশ কার্যক্রম পরিচালনা করে। এ কারণে বন্দরের নিরাপত্তা কেবল একটি প্রতিষ্ঠানের বিষয় নয়, বরং এটি গোটা দেশের অর্থনৈতিক নিরাপত্তার সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।



