নিজস্ব প্রতিবেদক, গাজীপুর: গাজীপুরের কাপাসিয়ায় চাঁদাবাজির টাকার ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে অভ্যন্তরীণ বিরোধের জেরে জাহিদুল ইসলাম (২৮) নামে এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। তিনি কাপাসিয়া উপজেলার সনমানিয়া ইউনিয়নের বড়কান্দা গ্রামের মৃত হারিছউদ্দিনের ছেলে।
নিহত জাহিদুলের স্ত্রী শিফা আক্তার জানান, শুক্রবার বিকেলে ভাত খাওয়ার পর তাঁর স্বামীর দুই বন্ধু মুন্না ও মইনুল মোবাইল ফোনে কল করে ডেকে নেন। এরপর রাত ১০টার দিকে জানতে পারেন, জাহিদুলকে কুপিয়ে স্থানীয় আড়াল বাজারের উত্তর পাশে খান বাড়ি এলাকায় ফেলে রাখা হয়েছে। দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে জাহিদুলকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হলে চিকিৎসক ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর পরামর্শ দেন। সেখানে রাত ১২টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
শিফা আক্তার আরও জানান, তাঁর স্বামী জাহিদুল বাড়িতে তেমন একটা থাকে না। তাঁর বন্ধু মইনুল, মুন্না, সৈকত ও মারুফ প্রায়ই তাকে ফোন করে বাইরে নিয়ে যেতেন। এমনকি গত রমজান মাসে তারা জাহিদুলকে হত্যার চেষ্টা করেছিলেন। তবে সেবার প্রাণে বেঁচে ফিরলেন তিনি।
স্থানীয় একটি সূত্র জানায়, সম্প্রতি জাহানারা বেগম নামের এক নারীর বাড়ি নির্মাণের কাজ থেকে আদায় করা ৫০ হাজার টাকা চাঁদার ভাগাভাগি নিয়ে জাহিদুলের সঙ্গে মইনুল, মুন্না, সৈকত ও মারুফের বিরোধ চলছিল। ওই বিরোধের জেরে শুক্রবার বিকেলে তাঁরা জাহিদুলকে ডেকে নিয়ে যান। পরে বিষয়টি মীমাংসা না হওয়ায় রাত সাড়ে ৯টার দিকে আড়াল বাজারের পাশে একটি পাটক্ষেতে নিয়ে গিয়ে তাঁকে কুপিয়ে ফেলে রাখা হয়।
এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সনমানিয়া ইউনিয়নে মাদক, সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজি নিয়ে তিনটি গ্রুপ দীর্ঘদিন ধরে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে—মারুফ-বাবু গ্রুপ, মইনুল গ্রুপ ও আমির হোসেন গ্রুপ। এসব সন্ত্রাসীদের ভয়ে সাধারণ মানুষ আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। এমনকি আড়াল পুলিশ ফাঁড়ির সদস্য তাঁদের হামলার শিকার হয়েছেন। দুই মাস আগেও এই ধরনের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে এক যুবক গুরুতর আহত হন।
সনমানিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক সদস্য তৌহিদুজ্জামান সরকার তপন বলেন, ‘রাত সাড়ে ১০টার দিকে আহত জাহিদুলকে হাসপাতালে পাঠানোর পর আড়াল পুলিশ ফাঁড়ির দুই সদস্য ফাঁড়িতে ফেরার পথে বর্ণমালা স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনে মাদক কারবারি ও সন্ত্রাসীদের ধাওয়ার শিকার হন। পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় আব্দুল গাফফার নামে এক মাদক কারবারিকে আটক করা হয়। এ সময় অপর দুজন পালিয়ে যায়।’
এ বিষয়ে কাপাসিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জয়নাল আবেদীন মণ্ডল জানান, ‘যাঁরা হত্যা করেছেন এবং যিনি নিহত হয়েছেন, তাঁরা সবাই একই চক্রের সদস্য। তাঁরা এলাকায় মাদক ব্যবসা, সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত। ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে বিরোধের জেরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।