চাঁদের মাটিতে কেবল জন্মানো নয়, বেড়েও উঠতে পারে উদ্ভিদ। এ তথ্য জানা গেছে সম্প্রতি প্রকাশিত দুটি গবেষণাপত্রে। চলতি বছর যুক্তরাষ্ট্রের মাইক্রোগ্র্যাভিটি সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি এবং অ্যাক্টা অস্ট্রোন্টিকা জার্নালে গবেষণাপত্র দুটি প্রকাশিত হয়। গবেষণা দুটোর নেতৃত্ব দেন চীনের শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও সেন্টার অব স্পেস এক্সপ্লোরেশনের গবেষক অধ্যাপক জ্যাংশিং শেয়।
চীনা নভোযান শাঙ-ই ৪ চাঁদে অবতরণ করে। নভোযানটি সঙ্গে করে চার প্রজাতির উদ্ভিদের বীজ নিয়ে গিয়েছিল। চাঁদের মাটি তেজস্ক্রিয়। পৃথিবীর মাটির সঙ্গে বিস্তর ফারাক। তার ওপর চাঁদের মহাকর্ষ বলের পরিমাণ পৃথিবীর ছয় ভাগের এক ভাগ। সব মিলিয়ে চাঁদের মাটিতে উদ্ভিদ জন্মানোটা ছিল বড় চ্যালেঞ্জ।
শাঙ-ই ৪ নভোযানের উদ্দেশ্য ছিল, চাঁদের মাটিতে উদ্ভিদ জন্মাতে পারে কি না, তা যাচাই করা। কোনো মানুষ ছিল না এ মিশনে। পুরো কাজটাই করা হয় রোবটের সাহায্যে। নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে চাঁদের মাটিতে এসব বীজ রোপন করা হয়। চারটির মধ্যে শুধু তুলার বীজ থেকে চারা বেরোয়। আলোড়ন ফেলে এ খবর।
কিন্তু শুধু বীজ থেকে চারা গজালেই হবে না। পৃথিবীর তুলনায় চাঁদে উৎপাদনশীলতা কেমন, মহাকর্ষের কারণে গাছের কাঠামো কেমন হবে, তাও জানা জরুরি। এসব ঠিক না থাকলে চাঁদে উদ্ভিদ জন্মানোর বিষয়টা তেমন কাজে আসবে না।
চার বছর ধরে বিজ্ঞানীরা এসব নিয়ে গবেষণা করেছেন পৃথিবীতে বসে। তথ্য-প্রমাণের সাহায্যে তাঁরা দেখিয়েছেন, চাঁদের মাটিতে উদ্ভিদের বৃদ্ধি সম্ভব। নতুন এ গবেষণা বলছে, তীব্র বিকিরণ, কম মাধ্যাকর্ষণ ও বেশি সময় ধরে পড়া সূর্যের আলোতেও উদ্ভিদ বাড়তে পারে। তবে বিষয়টি হাতে-কলমে পরীক্ষার জন্য আরও অনেক সময় প্রয়োজন।
গবেষোণার বর্তমান ফলাফল মানবজাতির জন্য একটি আশার কথা। ভবিষ্যতে কী হবে, তা এখনই বলা যাচ্ছে না। তবে আশার আলোই দেখাচ্ছে। সত্যিই চাঁদের মাটিতে ফসল ফলানো গেলে সেখানে দীর্ঘমেয়াদী মানবসতি যেমন সম্ভব হবে, তেমনি মহাকাশ অভিযানে খুলে যাবে সম্ভাবনার অনেক দুয়ার।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।