জুমবাংলা ডেস্ক: চাঁপাইনবাবগঞ্জের কৃষিতে সম্ভাবনাময় প্রযুক্তি হচ্ছে ‘পলিনেট হাউস।’ জেলার দুইজন কৃষি উদ্যোক্তাদের মধ্যে প্রায় ৪০ লাখ টাকা ব্যয়ে পলিনেট হাউজ বানিয়ে দিয়েছে কৃষি দপ্তর। অত্যাধুনিক এই প্রযুক্তির ছোঁয়ায় শীতকালীন ও গ্রীষ্মকালীন উচ্চমূল্যের সব ধরেণের ফসল ও চারা উৎপাদন করতে পারবেন চাষিরা। নতুন এই প্রযুক্তির সংযোজনের ফলে জেলার কৃষিতে আসবে নতুন মাত্রা দাবি কৃষি কর্মকর্তাদের।
কৃষি দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার কৃষি উদ্যোক্তা মুঞ্জের আলম মানিক ও শিবগঞ্জ উপজেলার কৃষি উদ্যোক্তা আব্দুল মান্নান কৃষি দপ্তর থেকে নিরাপদ ফসল উৎপাদনের জন্য পলিনেট হাউজ বরাদ্দ পান। এই দুইজন উদ্যোক্তা মিলে জেলার ২৫ শতাংশ করে মোট ৫০ শতাংশ জমিতে প্রথম বারের মতো পলিনেট হাউজে চাষাবাদ শুরু করেন।
পলিনেট হাউজে উন্নত মানের পলি ওয়ালপেপার ব্যবহার করায় সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি ভেতরে প্রবেশ করতে পারবে না এবং প্রাকৃতিক দূর্যোগেও ফসল থাকবে অক্ষত। এছাড়াও প্লাষ্টিক দিয়ে বানানো এই ঘরে রয়েছে ডিপ, ও স্প্রিংকলার ইরিগেশনের সুবিধা। উৎপাদিত ফসলের প্রয়োজনভেদে এই প্রযুক্তিগুলো ব্যবহার করে জমিতে সেচ দেওয়া যাবে। এই প্রযুক্তিতে আরও রয়েছে অত্যাধুনিক বালাই ব্যবস্থাপনার সুবিধা।
পলিনেট হাউজে পোকা-মাকড় আক্রমণ করতে না পারায় কিটনাশক ব্যবহার করতে হয় না। যার ফলে এ প্রযুক্তির মাধ্যমে বিষমুক্ত সবজি উৎপাদন করা সম্ভব বলে জানালেন কৃষি উদ্যোক্তা মুঞ্জের আলম মানিক।
মুঞ্জের আলম মানিক বলেন, ‘সহজ পদ্ধতিতে পলিনেট হাউজে চাষাবাদ করা যাচ্ছে। আবহাওয়ার কারণে ঘরের তাপমাত্রা বেড়ে গেছে, স্প্রিংকলার ছেড়ে দিলে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে। গাছের গোড়ায় পানি দেওয়ার প্রয়োজন হলে ড্রিপ ছেড়ে দিলেই সহজেই সেচ দেওয়া যায়।’
আব্দুল মান্নান নামের অপর আরেক কৃষি উদ্যোক্তা বলেন, ‘প্রথম বারের মতো পলিনেট হাউজে স্ট্রবেরি চাষাবাদ করছি। হাউজের ভেতরে আবহওয়া অনুকূলে থাকায় গাছগুলোতে সহজেই ফুল এসেছে। এই প্রযুক্তির মাধ্যমে বিষমুক্ত নিরাপদ স্ট্রবেরির ভালো ফলন পাবো বলে আশা করছি।’
রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের উপ-প্রকল্প পরিচালক এস এম আমিনুজ্জামান বলেন, ‘উচ্চ মূল্যের ফসল উৎপাদন করায় পলিনেট হাউজের মূল উদ্দেশ্য। উচ্চ মূল্যের ফসল উৎপাদন করে কৃষকদের আর্থিক ভাবে লাভবান করতে এই প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। নতুন নতুন যারা শিক্ষিত উদ্যোক্তা তাদেরকে আমরা ‘পলিনেট হাউজ’ প্রযুক্তির মাধ্যমে চাষাবাদের জন্য উদ্বুদ্ধ করছি।’
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণের উপ-পরিচালক পলাশ সরকার বলেন, ‘নিরাপদ খাবার উৎপাদনের জন্য পলিনেট হাউজ অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ।এখানে আদ্রতা এবং তাপমাত্রাকে নিয়ন্ত্রণ করে বছর ব্যাপী উচ্চমূল্যের ফসল সহজেই আবাদ করা যায়। এই পদ্ধতিতে চাষাবাদে বালাইনাশকের ব্যবহার খুব সীমিত পর্যায়ে করা হয়ে থাকে। অল্প পরিসরে পলিনেট হাউজের মাধ্যমে চাষাবাদ শুরু হয়েছে। এর মাধ্যমে জেলার কৃষিতে নতুন প্রযুক্তি সংযোজন হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘পলিনেট হাউজ পদ্ধতিটিকে জনপ্রিয় করতে সব ধরণের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।