মা চতুর্থ শ্রেণির বেশি পড়তে পারেননি। বিয়ের সময় একটি গরু ও একটি ছাগল দান হিসেবে পেয়েছিলেন। বাবা চা শ্রমিক। দিনে ৩০ টাকা মজুরি।
২০০৯ সালে আমি ক্লাস সিক্সে ভর্তি হলাম। স্কুলড্রেস, বেতন, খাতা, কলম ইত্যাদির জন্য টাকা লাগত। কিন্তু হাতে টাকা নেই। তখন থেকেই মা পুঞ্জির কাজে যাওয়া শুরু করেছিলেন। দিনে ৪০ টাকা করে পেতেন। মায়ের সোনার দুলের খুব শখ ছিল। এভাবে কষ্ট করে করে দুল কেনার জন্য ১০ হাজার টাকা জমিয়েছিলেন। ২০১৫ সালে কলেজে ভর্তিসহ নানা কাজে আমার বেশ কিছু টাকার দরকার পড়ে। মা দুল না কিনে আমাকে সেই টাকা দিয়েছিলেন!
একসময় যখন পুঞ্জির আয় দিয়েও পরিবার চলত না, তখন মা এলবিনটিলা চা-বাগানে অস্থায়ী কামলা হিসেবে কাজ নিলেন। এক বেলা মজুরি ৬০ টাকা, দুই বেলা কাজ করলে ১২০ টাকা পেতেন। বাগানে কাজ করতে করতে মায়ের শরীরে নানা সমস্যা দেখা দেয়। এ কারণে দুই বছর ধরে বাগানের কাজে যাচ্ছেন না। শরীর সুস্থ থাকলে এখনো মাঝে মাঝে পুঞ্জিতে কাজে চলে যান।
আমাদের তিন ভাই-বোনকে পড়াতে অনেক টাকা খরচ হয়। আমাদের টাকা দিতে গিয়ে মা কখনো ভালো কিছু খেতে পারেন না। এমনকি দুর্গাপূজায়ও মা কাপড় কেনেননি। মা ভালোমানের তেল, সাবান, শাড়ি থেকে শুরু করে কিছু ব্যবহার করেননি। কখনো শখ করে কিছু কেনেননি। তাঁর শখ মনেই রয়ে গেছে। চাকরিতে ঢুকলে প্রথমে মাকে সোনার দুল কিনে দেব। ধীরে ধীরে তাঁর অন্য শখগুলোও পূরণের চেষ্টা করব। সূত্র : কালের কণ্ঠ
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।