ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশে সম্প্রতি ভূবনেশ্বরী নামের এক নারীকে হত্যাকাণ্ডে সিসিটিভির একটি ফুটেজ পুলিশের হাতে এসেছে।
কয়েকদিন আগে রাজ্যের তিরুপতিতে ওই নারীর ৯০ শতাংশ পুড়ে যাওয়া লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এরপর তদন্তে নেমে হত্যাকাণ্ডে তার স্বামী শ্রীকান্ত রেড্ডির সম্পৃক্ততা পায় পুলিশ।
গা শিউরে ওঠা ওই ভিডিওতে দেখা গেছে, কোলে শিশু সন্তান নিয়ে লাল রঙের একটি সুটকেস নিয়ে লিফটে উঠেন শ্রীকান্ত। এরপর তার ফ্ল্যাটে নামেন। সন্তানকে করিডোরের এক পাশে রেখে সুটকেসটি ফ্ল্যাটের দরজার সামনে রাখেন। এরপর সন্তান ও সুটকেস নিয়ে রুমে প্রবেশ করেন। কিছুক্ষণ পর ভারী সুটকেস নিয়ে লিফট দিয়ে নীচে নামেন। ফ্ল্যাট থেকে বের হওয়ার সময় প্রতিবেশী এক নারী তার শিশু সন্তানকে আদর করেন। শ্রীকান্তের সঙ্গে ওই নারীর কথা বলতেও দেখা যায়। কিন্তু তাকে দেখে বোঝার উপায় নেই স্ত্রীর পোড়া লাশ বহন করে নিয়ে যাচ্ছেন!
তবে শ্রীকান্তের হিসাবে একটু ভুল হয়ে যায়। তিনি যে সরকারি হাসপাতালের কাছে সুটকেসটি ফেলে এসেছিলেন, সেই হাসপাতালের সিসিটিভি ক্যামেরায় ধরা পড়ে সেই দৃশ্য।
সেই ফুটেজে দেখা যায়, ক্যাবচালকের সহায়তায় এক যুবক স্যুটকেসটি ফেলে চলে যায়। ফুটেজ থেকে ক্যাবের নাম্বার নিয়ে চালককে খুঁজে বের করে পুলিশ। সেই সূত্র ধরে শ্রীকান্ত রেড্ডিকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, ভুবনেশ্বরীকে মারার পর শপিংমল থেকে সুটকেস কিনে আনেন শ্রীকান্ত। এরপর স্ত্রীর লাশ তাতে ভরে ফ্ল্যাট থেকে বের করে নিয়ে যান। যখন তার লাশ উদ্ধার করা তখন তার হার এবং মাথার খুলি ছাড়া কিছুই অবশিষ্ট ছিল না।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে শ্রীকান্ত পুলিশকে জানিয়েছে, লকডাউনের জেরে চাকরি হারান তিনি। এ নিয়ে বেশ কিছুদিন হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েন। এক সময় হতাশা আর ক্ষোভ উগড়ে দেন নিজের স্ত্রী ভূবনেশ্বরীর ওপর। স্ত্রীকে হত্যার পর পুড়িয়ে ফেলেন। এরপর দগ্ধ লাশ একটি স্যুটকেসে ভরে ফেলে দেন এক হাসপাতালের সামনে পরিত্যাক্ত স্থানে।
নিহতের পরিবাবের বরাতে তিরুপতি থানা পুলিশ জানিয়েছে, ২০১৯ সালে কাদাপার শ্রীকান্ত রেড্ডির সঙ্গে বিয়ে হয় ভুবনেশ্বরীর। তাদের ১৮ মাসের একটি মেয়েও রয়েছে। লকডাউনে কাজ হারান শ্রীকান্ত। তারপর থেকেই মদের নেশায় বুঁদ হয়ে থাকতেন। বিষয়টি নিয়ে ভূবনেশ্বরীর সঙ্গে ঝগড়া হতো। গত ২২ জুন ঝগড়ার মধ্যে মেজাজ হারিয়ে ভুবনেশ্বরীকে খুন করেন শ্রীকান্ত। পরে স্ত্রীর মৃতদেহ পুড়িয়ে একটি স্যুটকেসে ভরে গভীর রাতে ফেলে দিয়ে আসেন।
খুনের পর শ্রীকান্ত নিহতের বাবা-মাকে জানান, করোনার আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ভুবনেশ্বরীর। বিষয়টি খটকা লাগে ভুবনেশ্বরীর পরিবারের। বেশ কয়েকটি হাসপাতাল এবং মর্গে খোঁজ চালান তারা। মরদেহ খুঁজে না পেয়ে থানায় ভুবনেশ্বরীর নিখোঁজের অভিযোগ করেন তারা।
নিহত ভুবনেশ্বরী টাটা কনসালটেন্সি সার্ভিসে কর্মরত ছিলেন। আর শ্রীকান্ত পেশায় প্রকেৌশলী।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।