জুমবাংলা ডেস্ক: ঢাকা-সিলেট মহাসড়ককে চারলেনে উন্নীত করার কাজ অবশেষে বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) অর্থায়নে এ প্রকল্প বাস্তবায় করা হবে।
এই মহাসড়ককে চারলেনে উন্নীত করার কাজ শুরু করার কথা ছিল অনেক আগেই। কিন্তু চীনের নির্মাণ প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে সড়ক সচিবকে ঘুষ দেওয়ার চেষ্টায় ঝুলে যায় সে প্রক্রিয়া। পরে নিজস্ব অর্থায়নে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।
সম্প্রতি এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) অর্থায়নে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করার প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে সারসংক্ষেপ পাঠিয়েছে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ২০১৭ সালে ঢাকা-সিলেট ২২৬ কিলোমিটার মহাসড়ক চার লেনে নির্মাণে ৫৮ শতাংশ বেশি দরপ্রস্তাব করেছিল চায়না হারবার। পরে তা কমিয়ে ৪৩ শতাংশ বাড়তি দর প্রস্তাব করা হয়। তাতেও সওজের প্রস্তাবিত দরের সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় তৃতীয় আরেকটি প্রস্তাব দেয় চায়না হারবার। এতে দুই প্রস্তাবের মধ্যে এক হাজার ৮৫৬ কোটি টাকা বা ১৪ দশমিক ৬৫ শতাংশ দর পার্থক্য থেকে যায়। যদিও ৪৩ শতাংশ বেশি ব্যয়েই কাজটি দেওয়ার জন্য ২০১৭ সালের মে মাসে সুপারিশ করেন তৎকালীন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। অর্থমন্ত্রীকে পাঠানো চায়না হারবারের এক চিঠিতে প্রকল্পটি দ্রæত অনুমোদনে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে অনুরোধ করা হয়। এজন্য চায়না হারবারের পাঠানো ওই প্রস্তাবের ওপর অর্থমন্ত্রী লেখেন, ‘প্লিজ রিলিজ দিস ইস্যু অ্যাট ইউর আর্লিয়েস্ট কনভেনিয়েন্স।’
যদিও অর্থমন্ত্রীর ওই সুপারিশেও সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ প্রকল্পটি অনুমোদনে সম্মত হয়নি।
পরবর্তীকালে সড়ক বিভাগের সচিব পরিবর্তন হলে নতুন সচিবকে এক লাখ ডলার ঘুষ দেওয়ার চেষ্টা করে চায়না হারবার। তবে ঘুষের অর্থ ফেরত দিয়ে বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়ে দেন সড়ক বিভাগের সচিব। এতে প্রকল্পটি থেকে বাদ দেওয়া হয় চায়না হারবারকে। সে সময় নিজস্ব অর্থায়নে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।
সওজের তথ্যমতে, ঢাকা-সিলেট রুটে ২১৪ দশমিক ৪৪ কিলোমিটার মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত করা ছাড়াও উভয় পাশে ধীরগতির যানবাহনের জন্য পৃথক সার্ভিস লেন নির্মাণ করা হবে। এছাড়া পুরো চার লেনের ঝুঁকিপূর্ণ বাঁকগুলো সরলীকরণ করা হবে, যাতে ৮০ কিলোমিটার গতিতে যান চলাচল করতে পারে। এছাড়া প্রকল্পটির আওতায় ৩২১টি কালভার্ট, ৭০টি ছোট-মাঝারি সেতু, পাঁচটি রেল ওভারপাস, চারটি ফ্লাইওভার, ১০টি আন্ডারপাস ও ৪২টি ফুট ওভারব্রিজ নির্মাণ করা হবে।
জানা গেছে, নিজস্ব অর্থায়নে ঢাকা-সিলেট চার লেন বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছিল ১২ হাজার ৬১০ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। চলতি বছর শুরু হয়ে ২০২২ সালের জুনে প্রকল্পটি শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল। এছাড়া ঢাকা-সিলেট-তামাবিল পর্যন্ত চার লেন নির্মাণে জমি অধিগ্রহণের জন্য পৃথক প্রকল্প নেওয়া হয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।