নিজস্ব প্রতিবেদক, গাজীপুর: গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার বরমী ইউনিয়নের মধ্যপাড়া গ্রামে নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন এক তরুণী। চার মাসের শিশুকে পাশে রেখে তার স্বামী সুইটি আক্তারকে (২০) পিটিয়ে ও শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। বুধবার (৬ আগস্ট) রাত সাড়ে ১০টার দিকে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে।
নিহত সুইটি আক্তার ময়মনসিংহের পাগলা থানার নিগুয়ারী ইউনিয়নের চাকুয়া গ্রামের মৃত আফসারুল ইসলামের মেয়ে। ছোটবেলায় মাকে হারিয়ে খালার কাছে বড় হন তিনি। উচ্চ মাধ্যমিকে পড়ার সময় খালু নাজমুল তাকে গোপনে বিয়ে দেন মাদকাসক্ত ও মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত বলে পরিচিত নূরুল ইসলামের সঙ্গে।
বিয়ের পর থেকেই স্বামী নূরুল ইসলাম নিয়মিত শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালিয়ে আসছিলেন বলে অভিযোগ নিহতের স্বজনদের। ঘটনার রাতে চার মাস বয়সী শিশুটির কান্নার শব্দে প্রতিবেশীরা ছুটে গিয়ে বাড়ির ভেতরে পড়ে থাকা সুইটির নিথর দেহ দেখতে পান। তার শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন ছিল। হাঁটুর নিচ থেকে পা থেঁতলানো, মাথা ও শরীরেও আঘাতের দাগ স্পষ্ট ছিল। পাশে বসে কাঁদছিল তার ছোট্ট সন্তান, যার গায়েও মায়ের রক্ত লেগে ছিল।
নিহতের মামা জসিম শেখ বলেন, “আমরা গিয়ে দেখি সুইটির মরদেহ মেঝেতে পড়ে আছে। বারবার নির্যাতনের কথা জানালেও আমরা তাকে রক্ষা করতে পারিনি।”
সুইটির খালা আকলিমা বলেন, “এই মেয়েটার জীবনটাই গেল নির্যাতনের মধ্যে। কতবার বলেছি, বোঝানোর চেষ্টা করেছি। কিন্তু লাভ হয়নি। এখন সেই নির্যাতনেই সে প্রাণ হারাল। ছোট শিশুটি এখন মায়ের দুধের জন্য কাঁদছে। জানি না, কীভাবে ওকে বড় করব।”
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল বারিক জানান, খবর পেয়ে রাতেই পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে। তার শরীরে একাধিক গুরুতর আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, প্রথমে পিটিয়ে এবং পরে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে।
ঘটনার পর থেকেই অভিযুক্ত স্বামী পলাতক রয়েছে। পুলিশ তাকে ধরতে অভিযান চালাচ্ছে। ইতোমধ্যে সন্দেহভাজন হিসেবে নিহতের শাশুড়িকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় একটি হত্যা মামলার প্রস্তুতি চলছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।