নিজস্ব প্রতিবেদক: গত কয়েকদিন ধরে ঊর্ধ্বমুখী থাকা চালের দাম হুহু করে বেড়েই চলেছে। ডিম ও মুরগিতে কিছুটা স্বস্তির খবর থাকলেও চালের বাজার নিয়ে দুশ্চিন্তা কাটেনি।
শুল্ক কমিয়ে চাল আমদানির অনুমতি দেওয়া হলেও বাজারে এখনও সেটির প্রভাব নেই। উল্টো কয়েকদিন পর পর কেজিতে দু-এক টাকা করে দাম বাড়ছে চালের। এক থেকে দুই টাকা বেড়ে খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি মিনিকেট চাল বিক্রি হচ্ছে ৭২ থেকে ৭৫ টাকা। গত সপ্তাহে মিনিকেট ৭০ থেকে ৭৪ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। কেজিতে দুই টাকা বেড়ে বিআর-২৮ জাতীয় চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৮ থেকে ৬০ টাকায়। নাজিরশাইল বিক্রি হচ্ছে ৭৫ থেকে ৯২ টাকায়, যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছে ৭৫ থেকে ৯০ টাকা।
এছাড়া, স্বর্ণা জাতীয় মোটা চালের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫৪ থেকে ৫৫ টাকা কেজি দরে।
চালের দাম আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। তারা বলেন, পাইকারি পর্যায়ে ৫০ কেজি ওজনের প্রতি বস্তা মিনিকেট চালের দাম আরও ৫০ টাকা বেড়েছে। ২৫ কেজি ওজনের নাজিরশাইলের বস্তাতেও বেড়েছে ৫০ টাকা। অর্থাৎ এ দুই ধরনের চালের কেজিতে পাইকারি পর্যায়ে এক টাকা করে দাম বেড়েছে, যা খুচরা বাজারে কেজিতে দুই টাকা পর্যন্ত বাড়তে পারে।
এদিকে, উত্তরাঞ্চলের অন্যতম বৃহত্তম ঈশ্বরদী চালের মোকামেও চলছে অস্থিরতা। এক সপ্তাহের ব্যবধানে সেখানে চালের দাম ৫০ কেজির বস্তায় ৪০০-৭০০ টাকা আর কেজিতে ৮-১৪ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। ইতোমধ্যেই এই মোকামের অর্ধেক মিল-চাতাল বন্ধ হয়ে গেছে।
ডিজেলের দাম বৃদ্ধির কারণে পরিবহণ খরচ বেড়ে যাওয়ায় চালের দাম অস্বাভাবিক বেড়েছে বলে চাতাল মালিক ও চালকল মালিক সমিতি জানিয়েছে।
মোকামের চাতাল মালিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পঞ্চাশ কেজি বস্তার মিনিকেট সপ্তাহের ব্যবধানে ৩,২০০ টাকা থেকে বেড়ে ৩,৬০০ টাকা, ব্রি আটাশ ২,৮০০ টাকা থেকে ৩,৩০০ টাকা, বাসমতি ৩,৪০০ টাকা থেকে ৪,১০০ টাকা, লাল টোপা বোরো ২,৩০০ টাকা থেকে ২,৭০০ টাকা এবং গুটি স্বর্ণা ২,৩০০ টাকা থেকে বেড়ে ৩,০০০ টাকারও উপরে বিক্রি হচ্ছে। মিনিকেট প্রতি কেজিতে ৮ টাকা, আটাশ ১০ টাকা, বাসমতি ১৪ টাকা, লাল টোপা বোরো ৮ টাকা এবং স্বর্ণার দাম ১৪ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।
মোকামের সম্পদ ট্রেডার্সের স্বত্তাধিকারী মনজুর আলম জানান, মোকামেও ধানের দাম বেড়েছে। পাশাপাশি জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় পরিবহণ খরচ অনেক বেড়েছে। রাজশাহীর তানোর মোকাম থেকে আগে এক গাড়ি ধান আনতে আগে ট্রাক ভাড়া ছিল ১০ হাজার টাকা। এখন বেড়ে ১৪ হাজার হয়েছে। কিশোরগঞ্জ মোকাম থেকে ধান আনার ভাড়া ছিল ১৩-১৪ হাজার টাকা। এখন ২১ হাজার টাকা হয়েছে।
ঈশ্বরদী চালকল মালিক সমিতির সভাপতি জুলমত হায়দার জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় ট্রাক ভাড়া অনেক বেড়েছে বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘সরকার চাল আমদানির জন্য কর প্রত্যাহার করেও কোনো লাভ হয়নি। ডলারের বর্তমান দামে চাল আমদানি করলে লোকসান হবে। তাই আমদানিকারকরা কেউ এলসি করছে না। ধানের মোকামের মজুদদাররা যখনই দেখেছে চাল আমদানি হচ্ছে না, তখনই সুযোগ বুঝে ধানের দামও বাড়িয়ে দিয়েছে।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।