জুমবাংলা ডেস্ক: পাট একসময় সোনালি আঁশ নামেই সর্বাধিক পরিচিত ছিল। এখন আবার পাটের সেই সুদিন ফিরেছে। চলতি বছরে সিরাজগঞ্জে ১৭ হাজার ২৯৮ হেক্টর জমিতে তোষা, মেস্তা ও কেনাফ জাতের পাটের আবাদ হয়েছে। ফলে বিভিন্ন উপজেলায় পাট কাটা ও জাগ দেওয়া নিয়ে কৃষকেরা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন। বর্তমানে এ জেলায় পাটের ফলন ও দাম ভালো পাওয়ায় খুশি চাষিরা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরে সিরাজগঞ্জের কাজিপুরে ৫ হাজার ৬৪৫ হেক্টর, সদর উপজেলায় ৩ হাজার ৩৫০ হেক্টর, উল্লাপাড়ায় ১ হাজার ৬২০ হেক্টর, বেলকুচিতে ১ হাজার ৯৬০ হেক্টর, শাহজাদপুরে ৪৩৫ হেক্টর, তাড়াশে ৭৪৫ হেক্টর, রায়গঞ্জে ৮৯২ হেক্টর, চৌহালীতে ৯২০ হেক্টর এবং কামারখন্দে ১ হাজার ৭৩১ হেক্টর জমিতে পাট চাষাবাদ হয়েছে। জেলায় মোট ১৭ হাজার ২৯৮ হেক্টর জমি থেকে পাট উৎপাদনের লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে ৩৬ হাজার ২০৯ মেট্রিক টন।
জেলার হাট-বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিভিন্ন স্থানের কৃষকেরা পাট ধুয়ে বাজারে ভালো দামে বিক্রি করতে শুরু করেছেন। বর্তমানে হাটে তোষা পাট সাড়ে ৩ হাজার টাকা, মেছতা পাট ৩ হাজার ৩০০ থেকে ৩ হাজার ৫০০ টাকা মণ বিক্রি হচ্ছে। দাম ভালো পাওয়ায় স্থানীয় কৃষকেরা খুশি।
উল্লাপাড়া উপজেলার বড়হর গ্রামের কৃষক আমজাদ বলেন, এবার তিন বিঘা জমিতে কেনাফ জাতের পাট চাষা করেছি। জমিতে পাটের ভালো ফলন হয়েছে। ইতোমধ্যে পাট কাটা শুরু হয়েছে। পাট চাষাবাদ থেকে শুরু করে কাটা পর্যন্ত প্রায় ১৫ হাজার টাকার খরচ হয়েছে। আশা করছি, পাট এবং পাঠকাঠি বিক্রি করতে পারবো প্রায় লাখ টাকায়। এতে আমার অনেক টাকা লাভ হবে।
সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার রতনকান্দি গ্রামের কৃষক আলতাফ হোসেন বলেন, পাট চাষাবাদে জমির অনেক উপকার হয়। একদিকে বিঘা প্রতি প্রায় ১০ মণ হারে পাট এবং ১ হাজার ২০০ হাতা পাটখড়ি পাওয়ায় যায়। যা বিক্রি করে অনেক টাকা লাভ হয়। পাটের পাতা জমিতে পড়ে পচে গেলে কম্পোস্ট সার তৈরি হয়। এতে জমির মাটির গুণাগুণ বৃদ্ধিসহ রাসায়নিক সারের ব্যবহার কমে আসে। সবদিক থেকে পাট চাষ লাভজনক।
রায়গঞ্জ ও উল্লাপাড়া উপজেলার কৃষক মান্নান মন্ডল, জাবেদ আলী, হাসেম শেখ জানান, প্রখর রোদের কারণে পাটগাছ বড় হওয়ার পরে অনেক স্থানে গাছের পাতা শুকিয়ে যাচ্ছিল কিন্তু সম্প্রতি বৃষ্টি হওয়ায় খাল-বিল ও পুকুরে পানি জমেছে। বন্যার পানি এসেছে। ফলে চাষিরা পাট জাগ দেওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তামুক্ত হয়েছে।
উল্লাপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকতা সুর্বনা ইয়াসমিন সুমি জানান, পাট চাষাবাদে কম খরচ ও পরিশ্রমে বেশি লাভবান হওয়া যায়। তাই চাষিদের সোনালি আঁশ চাষাবাদে বিনামূল্যে বীজসহ মাঠ পর্যায়ে নানা ধরনের পরার্মশ ও সহযোগিতা দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি মাঠ পর্যায়ে উচু, নিচু, পতিত জমিতে কৃষকদের পাট চাষাবাদে উৎসাহিত ও পরামর্শ দিয়েছি। কৃষকরা পরামর্শ মতে পাট চাষাবাদ করেছেন। এবার পাটের ভালো ফলন এবং দামে কৃষকরা লাভবান হচ্ছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-সহকারী কৃষি অফিসার মো. শামীনূর ইসলাম বলেন, পাট চাষ অনেক লাভজনক। আমরা কৃষি বিভাগ থেকে পাট চাষাবাদের জন্য কৃষকদের বীজসহ নানা প্রণোদনা দিয়ে যাচ্ছি। আমরা কৃষকদের পাট চাষাবাদে উৎসাহিত করেছি। বাজারে পাটের ন্যায্য মূল্য পেলে কৃষকদের মুখে হাসি ফুটবে। আগামী দিনে কৃষকরা পাট চাষে আরো আগ্রহী হবেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।