জুমবাংলা ডেস্ক : ছেলেকে চিকিৎসক বানাতে গিয়ে সহায় সম্বল সব হারিয়েছেন। বাড়ির ভিটেমাটিও দিয়েছেন সেই ছেলের নামেই। ছেলে সুজাউদৌল্লা এখন গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার। নিজের রক্ত পানি করে চিকিৎসক বানানো সেই ছেলের কাছেই জায়গা হচ্ছে না বৃদ্ধ পিতা-মাতার। ভরণপোষণ না দিয়ে উল্টো বাবা-মাকে বাড়ি থেকে বিতাড়িত করতে চালাচ্ছেন নির্যাতন।
ছেলের নির্যাতন থেকে রক্ষা এবং ভরণপোষণের দাবি জানিয়ে সোমবার (৭ মে) সকালে গুরুদাসপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন বৃদ্ধা মা মনিরা বেগম।
অভিযুক্ত চিকিৎসক সুজাউদৌল্লা গুরুদাসপুর পৌর সদরের আনন্দনগর মহল্লার খাইরুল ইসলামের ছেলে। তিনি প্রায় দেড় বছর ধরে গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আবাসিক মেডিকেল অফিসারের দায়িত্বে আছেন।
বৃদ্ধা মা মনিরা বেগম বলেন, গরিব হওয়া সত্ত্বেও ছেলেকে চিকিৎসক বানিয়েছেন। ছেলেকে পড়াতে গিয়ে সহায় সম্বল সব হারিয়ে তারা এখন নিঃস্ব। একমাত্র ছেলে হওয়ায় মাথাগোঁজার ঠাঁইটুকুও লিখে দিয়েছেন ছেলের নামেই।
তিনি বলেন, ছেলে চিকিৎসক হলেও তাদের ভরণপোষণ দেন না। পেটের তাগিদে অসুস্থ শরীর নিয়ে ভ্যান চালান তার স্বামী খাইরুল ইসলাম। যা আয় হয় তাতেই কোনোমতে দিনাতিপাত করেন তারা। এখন বাড়ি থেকে তাদের বের করে দিতে চিকিৎসক ছেলে নিয়োমিত শারীরিক-মানসিক নির্যাতন শুরু করেছেন। ছেলের নির্যাতন সইতে না পেরে প্রতিকার চেয়ে তিনি ইউএনও অফিসে অভিযোগ দিয়েছেন।
খাইরুল ইসলাম বলেন, বাড়ি থেকে বের করে দিতে চিকিৎসক ছেলে সুজাউদৌল্লা অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করছেন। গায়ে হাত তুলছেন। অথচ সব শেষ করে সেই ছেলেকেই তিনি চিকিৎসক বানিয়েছেন। ছেলের নামে লিখে দেওয়া ভিটেমাটিও ফেরত চান তিনি।
অভিযুক্ত চিকিৎসক সুজাউদ্দৌলা বলেন, পিতামাতার সঙ্গে তার খারাপ সম্পর্ক নাই। অন্যের প্রয়োচনায় তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছেন তার মা। তিনি নিয়মিত পিতামাতার খোঁজ খবর রাখছেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার চিকিৎসক সুজাউদৌল্লাকে সতর্ক করেছেন তিনি। কিন্তু সুজাউদৌল্লা কোনো কথাই শুনছেন না।
চিকিৎসক সুজাউদৌল্লার বিরুদ্ধে মায়ের করা অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সালমা আক্তার বলেন, ইতিমধ্যে চিকিৎসক সুজাউদৌল্লাকে হাজির হতে বলা হয়েছে। দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।