জুমবাংলা ডেস্ক : জ্বরে আক্রান্ত হয়ে রাস্তার পাশে সারাদিন পরে রইল দিনমজুর আব্দুস সামাদ মণ্ডল। করোনা সন্দেহে কেউ এগিয়ে যায়নি তার কাছে। খবর পেয়ে উপজেলা পুলিশ ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন। কিন্তু ফরিদপুর থেকে করোনা রোগীর জন্য বরাদ্দ এ্যাম্বুলেন্স দেরি করে আসায় রাস্তাতেই মৃত্যু হয় সামাদ মণ্ডলের। শুক্রবার ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলায় এ ঘটনাটি ঘটেছে।
আব্দুস সামাদ মণ্ডলের (৪৮) বাড়ি ঝিনাইদহ জেলায়। দিনমজুরের কাজ করতে তিনি কামারখালী গিয়েছিলেন।
ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. মো. মাহফুজুর রহমান বুলু জানান, শনিবার বেলা ১২ টা পর্যন্ত মরদেহের কোন স্বজন না পাওয়ায় লাশ পুলিশ হেফাযতে দেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। দুপুরে পরে মৃত্যের ছেলে আসলে পুলিশ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেয় বিশেষায়িত এ্যাম্বুলেন্স ও পিপিই পরিহিত ৪ জন কর্মী ঝিনাইদহ নিজ বাড়িতে পৌঁছে দিয়ে আসবে মরদেহ। তার নমুনা সংগ্রহ করে করোনা পরীক্ষার জন্য আইইডিসিআর এ পাঠানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।
মধুখালী উপজেলার কামারখালী বাজারের ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আলী জানান, আব্দুস সামাদ মণ্ডল কামারখালীতে এসেছিলেন দিনমজুরের কাজ করতে। জ্বরে আক্রান্ত হওয়ায় কাজ করতে পারেনি। গাড়ি বন্ধ থাকায় তিনি একটি ভ্যানযোগে হাসপাতালে যাচ্ছিলেন। তবে পথিমধ্যে জ্বরের রোগী জানতে পেরে ফরিদপুর-খুলনা মহাসড়কের মাঝিবাড়িতে একটি জুট মিলের সামনে রাস্তার পাশে ফেলে চলে যায় ওই ভ্যানচালক। এভাবে সারাদিন ওখানেই পরে ছিলো আব্দুস সামাদ। ওই পথ দিয়ে অনেকেই যাতায়াত করলেও করোনা আক্রান্ত সন্দেহে কেউ তার সাহায্যে এগিয়ে আসেনি। খবর পেয়ে সন্ধ্যার দিকে সেখান যান মধুখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও থানা পুলিশ।
মধুখালী থানার ওসি আমিনুর রহমান বলেন, লোকটি ভ্যানযোগে হাসপাতালে আসার পথে তাকে করোনা রোগী সন্দেহে পথে ফেলে যায় ভ্যানচালক। এরপর সে ওইখানেই ছিলো। দীর্ঘ সময় এভাবে পরে থাকার পর রাত ৯টার দিকে আমরা ওই রোগীকে ফরিদপুর থেকে আসা বিশেষ অ্যাম্বুলেন্সযোগে ফমেক হাসপাতালে পাঠাই।
মধুখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোস্তফা মানোয়ার জানান, অসুস্থ ওই ব্যক্তি জ্বরে আক্রান্ত ছিলেন বলে তাকে ফমেক হাসপাতালে নেয়ার জন্য একটি অ্যাম্বেুলেন্স চেয়ে পাঠাই। তবে ফরিদপুর থেকে ওই অ্যাম্বুলেন্স আসতে অনেক রাত হয়ে যায়।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. রেজা বলেন, জ্বরে আক্রান্ত আব্দুস সামাদকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অ্যাম্বুলেন্সে নেওয়ার সুযোগ ছিলো না সতর্কতার কারণে। তাহলে হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স ১৪ দিন সাধারণ রোগী বহন করতে পারতো না।
ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক ডা. মো. জুয়েল জানান, রাত পৌনে ১১টার দিকে ওই রোগীকে অ্যাম্বুলেন্সযোগে হাসপাতালে আনা হয়। পরীক্ষা করে তাকে মৃত পাই।
ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. সাইফুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ওই রোগীর নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এ্যাম্বুলেন্স দেরি করার বিষয়ে তিনি বলেন, তারা আগে দুই/এক জায়গায় এ্যাম্বুলেন্সের চেষ্টা করেছে, সেটা আমার জানা নেই, আমাকে জানানোর সাথে সাথেই এ্যাম্বুলেন্স পাঠিয়েছি। সূত্র : ইত্তেফাক
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।