জুমবাংলা ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের বহুল প্রত্যাশিত বাণিজ্য চুক্তির ‘প্রথম পর্যায়’ নিয়ে গণমাধ্যমগুলোর নেতিবাচক মন্তব্য নাকচ করে দিয়েছে চীনা ট্যাবলয়েড গ্লোবাল টাইমস। বরং বিশ্বের শীর্ষ দুই অর্থনীতি প্রথম পর্যায়ের চুক্তির ‘অত্যন্ত কাছে’ পৌঁছেছে বলে দাবি করেছে চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদপত্র পিপলস ডেইলি পরিচালিত ট্যাবলয়েডটি। এদিকে দুই পক্ষের বাণিজ্য আলোচনা নিয়ে নতুন আশাবাদ ও হংকংয়ে গণতন্ত্রপন্থী দলগুলোর জয়ের সুবাদে গতকাল এশিয়ার শেয়ারবাজারগুলো চাঙ্গা হয়ে ওঠে। খবর রয়টার্স, এএফপি।
গত সপ্তাহের শেষে চীন মেধাসম্পদ অধিকার লঙ্ঘনকারীদের জরিমানা বাড়ানো হতে পারে বলে জানায়। উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্যযুদ্ধের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে চীনের বিরুদ্ধে মেধাসম্পদ চুরির অভিযোগ। ফলে দুই পক্ষের মধ্যে একটি বাণিজ্য চুক্তির সাফল্য মেধাসম্পদ চুরি নিয়ে চীন-যুক্তরাষ্ট্রের ঐকমত্যের ওপর অনেকাংশে নির্ভর করছে।
শুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও বাণিজ্য আলোচনা সম্পর্কে ফক্স নিউজকে জানান, চুক্তির ‘সম্ভাবনা অনেক কাছাকাছি’ রয়েছে।
চীন সরকারের ঘনিষ্ঠ বিশেষজ্ঞদের উদ্ধৃতি দিয়ে নিজেদের টুইটার ফিডে গ্লোবাল টাইমস জানিয়েছে, চীন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তির দ্বিতীয় পর্যায় বা তৃতীয় পর্যায় নিয়েও আলোচনা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
গত সপ্তাহে বাণিজ্য বিশেষজ্ঞ ও হোয়াইট হাউজের ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, চুক্তির প্রথম পর্যায় নভেম্বরে সম্পন্ন হওয়ার কথা থাকলেও তা আগামী বছর পর্যন্ত গড়াতে পারে। মূলত বেইজিং আরো ব্যাপক শুল্ক প্রত্যাহারের জন্য চাপ দেয়ায় এবং ওয়াশিংটন নিজস্ব দাবিতে অনড় থাকায় আলোচনা মন্থর হয়ে পড়ছে বলে জানানো হয়।
যুক্তরাষ্ট্র ও চীনকে যেহেতু এ মুহূর্তে একটি প্রাথমিক ঐকমত্যে পৌঁছতেই কষ্ট করতে হচ্ছে, এ পরিস্থিতিতে চুক্তির দ্বিতীয় পর্যায়ের সম্ভাবনা অনেক কম বলে দুই পক্ষের সরকারি কর্মকর্তাদের পাশাপাশি আইনপ্রণেতা ও বাণিজ্য বিশেষজ্ঞরা মত দিয়েছিলেন।
বিশেষজ্ঞদের এ মতামতকেই নাকচ করে দিয়েছে গ্লোবাল টাইমস। এছাড়া শনিবার যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা রবার্ট ও’ব্রায়ান জানান, চলতি বছরের শেষ নাগাদ চীনের সঙ্গে একটি প্রাথমিক বাণিজ্য চুক্তি করার সম্ভাবনা এখনো রয়েছে।
এদিকে বিশ্বের শীর্ষ দুই অর্থনীতির মধ্যে বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনার অগ্রগতি গতকাল এশিয়ার শেয়ারবাজারগুলো চাঙ্গা করে তোলে। এর মধ্যে হংকংয়ে গণতন্ত্রপন্থীদের বিশাল জয়ের সুবাদে শহরটির শেয়ারবাজারে সবচেয়ে বেশি অগ্রগতি দেখা গেছে। গতকাল হংকংয়ের হ্যাং সেং সূচক ১ দশমিক ৫ শতাংশ বেড়ে ২৬ হাজার ৯৯৩ দশমিক শূন্য ৪ পয়েন্ট দিয়ে লেনদেন শেষ করে।
গত সপ্তাহে দশমিক ৪ শতাংশ হারানোর পর গতকাল জাপান বাদে এশীয়-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের বিস্তৃত এমএসসিআই সূচক দশমিক ৭ শতাংশ ঊর্ধ্বগতি নিয়ে ঘুরে দাঁড়ায়।
গতকাল জাপানের নিক্কেই ২২৫ সূচক দশমিক ৮ শতাংশ বেড়ে ২৩ হাজার ২৯২ দশমিক ৮১ পয়েন্ট দিয়ে লেনদেন শেষ করেছে। এছাড়া সাংহাই দশমিক ৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে লেনদেন শেষ করেছে। এশিয়ার অন্যান্য শেয়ারবাজারের মধ্যে সিউল ১ শতাংশ, সিঙ্গাপুর দশমিক ১ শতাংশ, সিডনি দশমিক ৩ শতাংশ ও মুম্বাই দশমিক ৯ শতাংশ যোগ করেছে। এছাড়া ওয়েলিংটন ও ব্যাংককের বাজারে চাঙ্গা ভাব থাকলেও তাইপে, ম্যানিলা ও জাকার্তায় নিস্তেজ ভাব দেখা গেছে।
গতকাল সকালের লেনদেনে লন্ডন স্টক এক্সচেঞ্জ দশমিক ৪ শতাংশ, প্যারিস দশমিক ৫ শতাংশ ও ফ্রাংকফুর্ট দশমিক ৭ শতাংশ ঊর্ধ্বগতি অর্জন করে।
বাণিজ্য আলোচনার অগ্রগতি আশাবাদ জাগালেও চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের তরফ থেকে বিস্তৃত বিবরণের ঘাটতি বিনিয়োগকারীদের উদ্বেগে রেখেছে। বিশেষ করে চীন যেকোনো চুক্তির অংশ হিসেবে শুল্ক প্রত্যাহারের দাবি জানানোয় শুল্ক নিয়ে উদ্বেগ বহাল রয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।