আন্তর্জাতিক ডেস্ক : চীনে নতুন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে ২৫ এ দাঁড়িয়েছে। সংক্রমিত হয়েছে অন্তত ৮৩০ জনের শরীরে।
প্রাণঘাতী ভাইরাসটির বিস্তার ঠেকাতে দেশটির দুইটি শহরকে রীতিমতো অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। তবে জরুরি অবস্থা ঘোষণার সময় এখনো হয়নি বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিওএইচও)।
বিবিসি, আলজাজিরা, গার্ডিয়ান জানায়, নতুন ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত ২৫ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে শুক্রবার নিশ্চিত করেছে চীনের ন্যাশনাল হেলথ কমিশন।
তবে হংকং ও যুক্তরাজ্যের বিজ্ঞানীদের মতে, এ ভাইরাসে উহানের দুই হাজারের কাছাকাছি মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন।
গত বছরের শেষের দিকে হুবেই প্রদেশের উহান শহরে করোনাভাইরাসটির উৎপত্তি হয়েছে বলে জানা গেছে। এখন এটি রাজধানী বেইজিং, সাংহাইসহ দেশটির অন্যান্য শহরেও ছড়িয়ে পড়েছে।
চীনের উহান শহর থেকে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক শহরে যাওয়ার জন্য অন্তত ৬০টি রুট রয়েছে। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক, সান ফ্রান্সিসকো, অস্ট্রেলিয়ার সিডনি, ফ্রান্সের প্যারিস এবং যুক্তরাজ্যের লন্ডনের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন শহরে যাওয়ার জন্য উহান থেকে সরাসরি এবং নিয়মিত বিমান চালু রয়েছে।
একইভাবে এখান থেকে চীনের অন্যান্য শহরেও প্রতিদিন কয়েকশ বিমান আসা-যাওয়া করে। এ ছাড়া উহানকে চীনের হাই-স্পিড রেল নেটওয়ার্কের একটি জংশনও বলা হয়। তাই উহান থেকে নতুন করোনাভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়তে খুব বেশি সময় লাগেনি।
ফলে হংকং, দক্ষিণ কোরিয়া, ফিলিপাইন, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, জাপান এবং আমেরিকায় এখন পর্যন্ত ভাইরাসটির উপস্থিতি পাওয়া গেছে।
সৌদি আরবে কর্মরত এক ভারতীয় নার্স করোনাভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ সরকার সতর্কতা জারি করেছে।
বিস্তার ঠেকাতে চীনের শহর উহানসহ পাশের আরও একটি নগরীকে এখন বিচ্ছিন্ন করে রাখা হয়েছে। কর্তৃপক্ষ এই দুটি নগরী থেকে বহির্গামী সব বাস-ট্রেন এবং বিমান চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে।
শহরের লোকজনকে আগেই বাধ্যতামূলকভাবে মাস্ক পরে চলাফেরা করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছিল। শহরে গ্লাভস ও মাস্কের চাহিদা হুট করেই মারাত্মকভাবে বেড়ে গেছে।
এ ভাইরাসে আক্রান্ত হলে এখনো পর্যন্ত কোনো চিকিৎসা নেই, তাই এটি প্রতিরোধের ওপরেই সর্বাত্মক জোর দেওয়া হচ্ছে।
মানুষ থেকে মানুষে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ছে বলে জানিয়েছেন চীনের চিকিৎসকেরা। আক্রান্ত ব্যক্তি কাশি, তীব্র জ্বর এবং শ্বাসকষ্টে ভুগছেন।
উহান শহরে করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীদের সংস্পর্শে এসে কমপক্ষে ১৫ জন চিকিৎসক এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।
আমেরিকার লেডি অব লরডেস হাসপাতালের সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ বলেছেন, ‘নতুন ভাইরাসটি নভেল করোনাভাইরাস (nCoV)। শ্বাসযন্ত্রের সিনড্রোম করোনাভাইরাস থেকে এটি আলাদা।’
‘মানুষসহ অন্য প্রাণীর মাধ্যমেও এটি ছড়াতে পারে। তবে ঠিক কোনো প্রাণীর মাধ্যমে ছড়াচ্ছে, সেটি বোঝা যাচ্ছে না।’
ভাইরাসটি শুরুতে ফুসফুস আক্রমণ করে। যার কারণে প্রদাহ হয়। এক সময় রক্তে ছড়িয়ে পড়ে।
চলতি মাসে কেউ চীনে গিয়ে থাকলে দেশে ফেরার আগে এবং পরে তাকে ডাক্তার দেখানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
স্বাস্থ্যসম্মত জীবন-যাপন করার পাশাপাশি নিয়মিত হাত ধুতে হবে। সর্দি-কাশি দেখা দিলে নাক-মুখ ঢেকে রাখতে হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।