জুমবাংলা ডেস্ক : করোনাভাইরাস পরীক্ষায় চীন ফেরত যাত্রীদের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। গত দুইদিনে নতুন করে আরো তিন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এদের মধ্যে ঢাকায় একটি হাসপাতালে গত দু’দিন ধরে চিকিৎসা নিচ্ছেন একজন। তাকে স্ক্রিনিংয়ের মাধ্যমে বিমান বন্দরে সন্দেহজনক রোগী হিসেবে চিহ্নিত করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। বাকিরা হবিগঞ্জ ও বরগুনায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
হবিগঞ্জ হাসপাতালে ভর্তি হওয়া এক রোগী রহস্যজনক আচরণ করে হাসপাতালে থেকে দু’দফা পালিয়ে যান। এদিকে এর আগে করোনা সন্দেহে চীনা এক নাগরিক রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন রোববার। চীনা ওই নাগরিক সুস্থ আছে বলে জানিয়েছেন হাসপাতালটির মেডিসিন বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. দেবেন্দ্রনাথ সরকার।
করোনা ভাইরাস আক্রান্ত সন্দেহে মো. রায়হান আহমেদ চীন ফেরত এক মেডিকেল শিক্ষার্থীকে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। দু’দফায় তিনি হাসপাতাল ছেড়ে পালিয়ে গেলেও গতকাল পুলিশের মাধ্যমে খুঁজে এনে হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে আটকে রাখা হয়েছে। নির্ধারিত চিকিৎসক-নার্স ছাড়া অন্য কেউ রোগীর পাশে যাওয়ার বিষয়ে বিধিনিষেধ আরোপ করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। রায়হান আহমেদ হবিগঞ্জ শহরের শায়েস্তানগর এলাকার আব্দুন নূরের ছেলে।
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ জানায়, রায়হান চীনের জিয়াংজিং রাজ্যের একটি মেডিকেল কলেজে পড়াশোনা করতেন। গত ৮ই ফেব্রুয়ারি তিনি দেশে আসেন। ১৪ই ফেব্রুয়ারি তিনি জ্বর, কাশি ও ঘাড় ব্যথা অনুভব করেন। তাকে পরিবারের সদস্যরা সদর আধুনিক হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তার তাকে ভর্তির পরামর্শ দেন। এতে আতঙ্কিত হয়ে তিনি বাড়ি চলে যান। গত রোববার পরিবারের সদস্যদের বুঝিয়ে তাকে আবার হাসপাতালে নিয়ে আসে স্বাস্থ্য বিভাগ। কিন্তু ভর্তির কিছুক্ষণ পরই তিনি আবারো পালিয়ে যান। পরবর্তীতে পুলিশের মাধ্যমে তাকে খুঁজে এনে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
তার কাছ থেকে ঢাকায় যাওয়ার একটি বাসের টিকিট উদ্ধার করা হয়েছে। এরপর থেকে তাকে সদর আধুনিক হাসপাতালের নতুন ভবনের ৫ম তলায় করোনা ভাইরাস আইসোলেশন ওয়ার্ডে তালাবদ্ধ করে রাখা হয়েছে। হবিগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. একেএম মোস্তাফিজুর রহমান জানান, চিকিৎসাধীন রায়হান আহমেদের করোনা ভাইরাস থাকার আশঙ্কা উড়িয়ে দেয়া যায় না। আমরা তার রক্তের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠিয়েছি। রিপোর্ট না পাওয়া পর্যন্ত কিছুই নিশ্চিত করে বলা যাবে না।
এদিকে, বরগুনায় করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত সন্দেহে মো. ইমরান হোসাইন (২২) নামে চীন ফেরত এক শিক্ষার্থীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গত রোববার রাতে তাকে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হয়। তার গায়ে জ্বর থাকায় তাকে বরগুনা জেলা সদর হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে আলাদাভাবে রাখা হয়েছে। তবে ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নেই জানিয়েছেন হাসপাতালের চিকিৎসকরা। ইমরানের বাড়ি বরগুনা সদর উপজেলার এম বালিয়াতলী ইউনিয়নের নিমতলী গ্রামে। তার বাবার নাম মো. মোখলেসুর রহমান।
চীন ফেরত শিক্ষার্থী ইমরান বলেন, তিনি চীনের স্যানডং প্রদেশের রিজাউ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের শিক্ষার্থী। গত শনিবার ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করেন। এ সময় বিমানবন্দরে তাকে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। শনিবার তিনি ঢাকা থেকে যাত্রা করে রোববার সকালে তিনি বরগুনায় তার গ্রামের বাড়িতে পৌঁছান। এরপর সন্ধ্যায় পুলিশ তাকে বাড়ি থেকে এনে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ আছেন বলেও দাবি করেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।