জুমবাংলা ডেস্ক : কয়েক মাস ধরে দেশের বাজারে পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে অবৈধভাবে চিনি আসছে বলে অভিযোগ করছে চিনি পরিশোধনকারী দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন বাংলাদেশ সুগার রিফাইনার্স অ্যাসোসিয়েশন। অবৈধভাবে চিনি আসার কারণে বৈধ পথে আমদানি উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমে গেছে। তাতে বড় অঙ্কের শুল্ক হারাচ্ছে সরকার। পাশাপাশি অসম প্রতিযোগিতায় পড়েছে দেশের চিনিকলগুলো।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, পার্শ্ববর্তী দেশের তুলনায় দেশে চিনির দাম দ্বিগুণের বেশি। এ কারণে চোরাই পথে চিনি এনে ভালো মুনাফা করছেন চোরাচালানিরা। এতে দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলো আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এ কারণে এসব প্রতিষ্ঠান বৈধ পথে চিনি আমদানি কমিয়ে দিয়েছে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে গতকাল রোববার অনুষ্ঠিত বাজার পর্যালোচনাবিষয়ক টাস্কফোর্স কমিটির বৈঠকে চিনি আমদানির যে তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে তাতে দেখা যাচ্ছে, এক বছরের ব্যবধানে বৈধ পথে চিনি আমদানি এক লাখ টনের বেশি কমেছে।
বৈঠকে উপস্থাপিত তথ্য অনুযায়ী, গত ২০২২-২৩ অর্থবছরের ডিসেম্বর-ফেব্রুয়ারি মাসে দেশে মোট চিনি আমদানি হয়েছিল ৩ লাখ ৮৮ হাজার টন। সেখানে চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের একই সময়ে আমদানি হয়েছে ২ লাখ ৩৬ হাজার টন। সেই হিসাবে, এক বছরের ব্যবধানে দেড় লাখ টনের বেশি চিনি কম আমদানি হয়েছে।
দেশীয় চিনি পরিশোধনকারী কোম্পানিগুলোর তথ্য অনুযায়ী, দেশের বেসরকারি ৫টি চিনিকলের দৈনিক পরিশোধনের সক্ষমতা ১৫ হাজার টনের বেশি। আর সারা দেশে চিনির দৈনিক চাহিদা সাড়ে ছয় হাজার টন; অর্থাৎ চাহিদার তুলনায় দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর উৎপাদনসক্ষমতা বেশি। তা সত্ত্বেও বেশি মুনাফার সুবিধা নিতে একটি গোষ্ঠী চোরাই পথে পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে চিনি নিয়ে এসে বিক্রি করছে। এতে সরকার প্রায় তিন হাজার কোটি টাকার বেশি রাজস্ব হারাচ্ছে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ সুগার রিফাইনার্স অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব ও দেশবন্ধু গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোলাম রহমান বলেন, ‘চোরাই পথে দেশে চিনি আসার বিষয়টি সরকারকে আমরা দফায় দফায় জানিয়েছি। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। তাই বাজারে এখন অবৈধ পথে আমদানি হওয়া চিনির ছড়াছড়ি। সব দেখে ও জেনেও সবাই যেন নির্বিকার।’
তিনি আরো বলেন, বৈধ পথে অপরিশোধিত চিনি আমদানিতে মোটা অঙ্কের শুল্ক দিতে হয়। উচ্চ শুল্কে আমদানি করা অপরিশোধিত চিনি পরিশোধন করতে জ্বালানি বাবদ উচ্চমূল্য পরিশোধ করতে হয় আমাদের। এরপর আছে বিপণন খরচ, ব্যাংকঋণের উচ্চ সুদ। এত খরচের পর বাজারে অসম প্রতিযোগিতায় পড়তে হলে দেশের চিনিকলগুলো দীর্ঘ মেয়াদে টিকে থাকতে পারবে না। চার-পাঁচ মাস ধরে এই পরিস্থিতি চলছে। তাতে দেশের চিনিকলের মালিকদের পিঠ দেয়ালে ঠেকেছে।
ব্যবসায়ীদের দাবি, বর্তমানে দেশের বাজারে চিনির চাহিদার একটি বড় অংশ দখল করে নিয়েছে চোরাই পথে আসা চিনি। এমনকি দেশীয় কোম্পানির মোড়ক নকল করে অবৈধ পথে আসা চিনি দেশের বাজারে বাজারজাত করা হচ্ছে। চোরাই পথে আসা এসব চিনির মান যাচাইয়েরও কোনো সুযোগ নেই।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।